ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উবাচ

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩১ জুলাই ২০১৫

উবাচ

আমি ফেলনা নই স্টাফ রিপোর্টার ॥ এখনও কী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ভাবছেন কিছুই হবে না তার! নইলে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর কেমন করে এমন কথা বলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্বিচারে সাকার নেতৃত্বে গণহত্যা, লুটপাট আর ধর্ষণের সাক্ষ্য বহন করছে চট্টগ্রামের রাউজান, হাটহাজারী আর সুলতানপুরের মানুষ। আবার স্বাধীনতার পর এখান থেকেই সাকা চৌধুরী বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কাজেই সাকা স্বাধীনতার আগে এবং পরে দুই সময়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী হিরো ছিলেন বটে। কিন্তু বুধবার মানবতাবিরোধী অপরাধে সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া ফাঁসির রায়ের পরও কি তাই আছেন সাকা। নাকি পাল্টে যাবে দৃশ্যপট সাকা এমন আশ্বাস পেয়েছেন এবং ভাবছেন সব ঠিক হয়ে যাবে। তা নাহলে এখনও কিভাবে বলেন, আমি ফেলনা নই। আইনী লড়াই এর শেষটা পর্যন্ত লড়ব। এখানে আছেতো রিভিউ-আর রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা। রিভিউতে সাধারণত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারতো দূরের কথা আপীল বিভাগের অন্য কোন রায়ের ক্ষেত্রেও খুব একটা হেরফের হয় না। আর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে হলেতো দোষ স্বীকার করে তবেই করতে হবে। সাকা চৌধুরী কি তা করবেন? কারণ তিনিতো আবার ফেলনা লোক নয়। যেখানে তিনি রায় শোনার পর বলছেন, তিনি ফেলনা লোক নন, আইনের সর্বোচ্চ লড়াই তিনি লড়বেন। তার আশা, রিভিউয়ে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। সাকা চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমি দেশের জন্য, জনগণের জন্য রাজনীতি করেছি। আমিতো ফেলনা লোক নই। আজ হয়ত আমার কিছু কথার কারণে অনেকেই ক্ষুব্ধ। আজ আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।’ তিনি রায়ের দিন স্বাভাবিকভাবে সকালের নাস্তা সারেন। পরে সকাল ১০টার দিকে সেলে গিয়ে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে রায়ের কথা জানানো হয়। তবে মৃত্যুদ-ের রায় শোনার পরও সাকা বেশ হাসি-খুশি ছিলেন। দেশপ্রেমিকদের ফাঁসি দেয়া হচ্ছে... স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশপ্রেমিক! কে দেশপ্রেমিক যারা চায়নি দেশটা স্বাধীন হোক। কে দেশপ্রেমিক যারা নির্বিচারে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষদের হত্যা করতে করতে সংখ্যাটা ৩০ লাখে তুলে দিয়েছে? কে দেশপ্রেমিক যারা এদেশের দুই লাখ মা-বোনকে ধর্ষণ করেছে? কে দেশপ্রেমিক যারা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে? জামায়াতের মতো একটি রাজনৈতিক দলের কাছেই এরা দেশপ্রেমিক হওয়াটা স্বাভাবিক। এদের মতাদর্শরই বাস্তবায়ন করেছিল এসব দেশপ্রেমিকরা একাত্তরে। এ রকম এক দেশপ্রেমিক সাকা চৌধুরীর ফাঁসির রায়ের পর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, দেশপ্রেমিক জাতীয় নেতৃবৃন্দকে নিশ্চিহ্ন করার কৌশল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতাদের মতো সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এতে দেশবাসীর মতো আমরাও উদ্বিগ্ন। কোথায় এই শফিক দেশের মানুষকে উদ্বিগ্ন দেখলেন তা তিনিই পারবেন। তিনি কি প্রত্যেকবার স্বাধীনতাবিরোধীদের ফাঁসির পর দেখেন না মানুষ আনন্দ মিছিল করে মিষ্টি বিতরণ করেন। উদ্বিগ্ন হলে এসব কি মানুষ করে। বিবৃতিতে সরকারকে হুঁশিয়ার করে শফিকুর বলেন, জাতীয় নেতৃবৃন্দকে নিশ্চিহ্ন করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার যে স্বপ্ন সরকার দেখছে, জনগণ তা কখনও বাস্তবায়ন হতে দেবে না। এটা কি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি না বাংলাদেশের প্রতি জামায়াতের নতুন চ্যালেঞ্জ! বিস্মিত রিপন! স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতাকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে। আবার বিএনপি মানবতাবিরোধী অপরাধে সাকা চৌধরীর ফাঁসি হলে বিস্মিত হয়, হতাশায় ভেঙ্গে পড়ে। নিজেদের দেশের বড় একটি রাজনৈতিক দল বলে দাবি করে আসা বিএনপি নেতারা কী ইতিহাসও ভুলে যাচ্ছে। অন্তত বিএনপির টকিং বয় রিপনের কথা শুনে তাই মনে হতে পারে সকলের। তিনি যেভাবে সাকা চৌধুরীকে তুলে ধরেছেন তাতে মনে হচ্ছে সাকা হালের উত্তম কুমারের পদবি দখল করে নিয়েছেন। তিনি দেশের নয়া মহানায়ক। আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, আমরা আপীল বিভাগের রায়ে হতাশ, বিস্মিত ও বেদনাহত হয়েছি। বিএনপি মনে করে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। তার আইনজীবীদের মতো আমরাও মনে করি, তিনি ন্যায়বিচার লাভ করেননি। অন্যায্যভাবে তাকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে। রিপন বলতে বলতে বলে বসেন সাকা চৌধুরী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ছিলেন ‘উচ্চকণ্ঠ’। তার মানে কি রিপন সাকা চৌধুরীকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেন নাকি? যে মানুষ দেশের স্বাধীনতা রুখে দিতে প্রাণবাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন তারে রিপন বলে স্বাধীনতা প্রশ্নে উচ্চকণ্ঠ। যদিও বিএনপি বরাবরই বিচার বিভাগের প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার প্রতি ‘শ্রদ্ধাশীল’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, রায়ে সম্ভব না হলেও রিভিউতে সাকার মুক্তি দাবি করেছেন। মামলা থেকে বাঁচতে নির্বাচন! স্টাফ রিপোর্টার ॥ আকস্মিকভাবে বিএনপি বলছেন তারা নির্বাচন চায়। সে যেনতেন প্রক্রিয়ায় হলেও তারা সেটাকেই কবুল করবে। এর আগে তারাই বলছিল ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তা হবে যেনতেন নির্বাচন। সেখানে ভোট চুরি হয়ে যাবে। ফলে জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলন করার কোন বিকল্প নেই। ভোট নয় আন্দোলনেই থাকতে চায় বিএনপি। কিন্তু এখন সম্ভবত তারা ভাবছে অন্দোলন অনেক হয়েছে এখন একটা নির্বাচন হলে মন্দ হয় না। তবে কিছু শর্ত দিয়েছে তাদেরও সরকারের পার্ট করে নিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু বিগত নির্বাচনের সময়তো বিএনপি প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদে ছিল। এখনতো তারা সেখানে নেই। অন্যদিকে সুপ্রীমকোর্টের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিল করে দিয়েছে। এখন বিএনপিকে কী প্রক্রিয়ায় সরকারে সমন্বয় করা সম্ভব। সেসব যাই হোক হাসানুল হক ইনুই সম্ভবত আসল রহস্য উন্মোচিত করেছেন। তিনি গেল সপ্তাহে বলেছেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে মামলা থেকে বাঁচাতে বিএনপি নির্বাচনের দর কষাকষিতে নেমেছে। এখন তারা বুঝতে পেরেছেন চাইলেও আর নিম্ন আদালতের রায়কে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। ফলে বিএনপির জন্য এখন নির্বাচনে গমনই শ্রেয় হবে। ইনু বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনের কথা বলা বিএনপির একটি নতুন চাল। বিএনপি আবারও সেটা প্রমাণ করেছে। নির্বাচন আইনানুগভাবে ২০১৯ সালেই হবে। বিএনপিকে অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, অতীতে বিএনপি নেতারা ও খালেদা জিয়া নির্বাচনে আসার জন্য নির্বাচনের কথা বলেননি। শুধু নির্বাচন বানচাল করতে নির্বাচনের কথা বলেছেন।
×