ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সুনামগঞ্জে মাছের বংশনিধনে চলছে মহোৎসব

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ৩১ জুলাই ২০১৫

সুনামগঞ্জে মাছের বংশনিধনে চলছে মহোৎসব

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ, ৩০ জুলাই ॥ “মাছের পোনা দেশের সোনা” এখন শুধুই শ্লোগান। মৎস্য ভান্ডার খ্যাত এই জেলার বিভিন্ন হাওরে ক’বছর আগেও দেশীয় নানান প্রজাতির সুস্বাদু মাছ জেলার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে দেশ এমনকি বিদেশে রপ্তানি করা হত। অতথ আজ কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে সেসব মাছ। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে পালা দিয়ে চলছে সরকার দলীয় নেতা-কর্মী ও অসৎ মৎস কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে মাছ ধংশের যত আয়োজন। আর অতি মুনাফা লোভী এক শ্রেণী মৎস ব্যবসায়ীর কারণে আজ হাড়াতে বসেছে হাওর-বাওর, নদী জলাশয়ের মাছের বংশবিস্তার। চালছে মৎস্য নিধনের মহোৎসব। একই সঙ্গে ধংশ হতে চলছে হওরের জীববৈচিত্র। এ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি অমৎস্যজীবী াতি মোনাফার আশায় সরকারের নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন হাওরে, নদী জলাশয়ে ধরছে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ। প্রতিদিন মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি অমৎস্যজীবিরা আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের চোখের সামনেই তাদেরকে কিছু টাকা-পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করে। এই সুবিধাভোগী মহল হাওরে মাহাজাল কোণা, কারেন্ট জাল, বিভিন্ন ব্রীজ ও নদীর পাদদেশে বেড় জাল বসিয়ে মৎস্য নিধনে মেতে উঠেছে। ফলে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে এ জেলার দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন সুস্বাদু মাছ রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়াল, সোল, গজার, আইর(বুত্তিয়া), খালিশা, কৈ, মাগুর শিং, গোলসা, বালিশা, বাইম, টেংরা, পুটিসহ ছোটবড় অসংখ্য মাছ। জেলা মৎস অফিস সুত্রে জানাযায়, এগার উপজেলার বিভিন্ন হাওরে নানা প্রজাতির পোনা মাছ অবমুক্ত করনের কার্যক্রম চালাচ্ছে জেলা মৎস অফিস। জেলার যেখানে ছোটবড় অসংখ্য নদী, নালা ও খাল বিল রয়েছে সেই সব স্থানে পোনা মাছ অবমুক্ত করনের পাশাপাশী দেশীয় প্রজাতির মাছের ডিম ছেড়েও মাছের বংশ বৃদ্ধিতে কাজ করছেন জেলা মৎস অফিস । অন্যদিকে জেলার দেখার হাওর, খালিউড়ি, বন্ধেহরি, নয়া হাওরসহ অসংখ্য হাওরে এ বছর দেশীয় প্রজাতির প্রচুর পরিমাণে পোনা থাকলেও অবৈধভাবে প্রতিদিন দিন অবৈধ ভাবে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনে যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে বিনষ্ট হচ্ছে এতে প্রকৃতিক ভাবে উৎপাদিত মাছ অন্যদিকে মাছের পোনা অবমুক্ত করনের নামে চলছে লুটপাটের উৎসব। দোয়রাবাজার উপজেলার মাছিমপুর মৎসজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি আলী আহমদ বলেন, আমরা গরিব মানুষ ‘আওর’ (হাওরে) মাছ ধইরা খাই আমরা ‘আওর’ গেলেই আমাদের জাল নৌকাসহ জেলেদের ধরে নেতা-পেতারা। আইনের কাছে গেলে আইনও তাদের কথা কয়। অতচ এমপি সাবের লোকজন মাহাজাল, কোণা জাল, বেড় জাল, ফুরুইন জালজাল দিয়া যখন ‘আওর’ ও বিলের দারকিন্দাও (রেনু জাতিয় পোনা মাছ) রাখইন না তখন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হয় না। আইন তো খালি গরিবের লাগি। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ জানান, হাওরে নানা প্রজাতি বৃদ্ধিতে নানা মুখি কাজ করছে জেলা মৎস অফিস। পোনা অবমুক্ত করনসহ মাছের অভয় আশ্রম কারা, ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ না ধরার জন্য জেলেদের নিয়ে ক্যাম্পেইন, সচেতনতামুলক উদ্ভ্যোদ্ধ করন সভা পরিচালিত করা হয়।
×