ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দৌড়ে এগিয়ে শেখ জামাল ধানম-ির ওয়েডসন

সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার লড়াই!

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৮ জুলাই ২০১৫

সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার লড়াই!

রুমেল খান ॥ খেলা হবে ২২ রাউন্ডে মোট ১১০টি। ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে ১৮ রাউন্ডের ৯০ ম্যাচ। আরও বাকি আছে চার রাউন্ডের ২০ ম্যাচ। সেই হিসেবে ‘মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলের পর্দা নামার সময় ঘনিয়ে আসতে আর বেশি বাকি নেই। কোন অঘটন না ঘটলে এই লীগে শিরোপা জিততে যাচ্ছে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডই। জামালের পয়েন্ট এখন ৪২। জামালের এরপর বাকি থাকবে আরও তিন ম্যাচ। প্রতিপক্ষ হলোÑ মোহামেডান, মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা আবাহনী। ওই তিন ম্যাচে যদি জামাল হেরে যায় এবং মোহামেডান ও ঢাকা আবাহনী যদি তাদের বাকি সব ম্যাচে জেতে, তাহলে তাদের জামালের চেয়ে এক পয়েন্ট (৪৩) বেশি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। মোহামেডান-আবাহনীর চেয়েও এক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে ‘বেঙ্গল ব্লুজ’ খ্যাত শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের। কেননা, তারা খেলেছে এক ম্যাচ কম ১৬ ম্যাচে পয়েন্ট ৩২। সেক্ষেত্রে বাকি চার ম্যাচের সব জিততে পারলে তাদের পয়েন্ট হবে সবার চেয়ে বেশি ৪৪ পয়েন্ট। মোট কথাÑ গাণিতিক হিসেবে এখনও মোহামেডান, ঢাকা আবাহনী ও শেখ রাসেলেরও সুযোগ আছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। কাজেই শেখ জামালের শিরোপা নিশ্চিতÑ সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তেমনি লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতা কে হচ্ছেন, সেটাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সেখানেও চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তারও আবার চার জনের মধ্যে! সোমবার পর্যন্ত লীগে ৯০ ম্যাচে মোট গোল হয়েছে ২৭৯টি। দলগত সবচেয়ে বেশি গোল করেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা শেখ জামাল ধানম-ি, ৫৩টি। আর সবচেয়ে কম গোল করেছে ১১ দলের মধ্যে দশম স্থানে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড, ১১টি। স্বাভাবিকভাবেই সর্বোচ্চ গোলদাতা আপাতত আছে জামালেই। দলের নির্ভরযোগ্য হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমে একাই করেছেন ১৬ গোল। যার মধ্যে আছে একটি হ্যাটট্রিকও। গত ২৮ জুন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফরাশগঞ্জকে ৯-১ গোলে বিধ্বস্ত করে শেখ জামাল। ওয়েডসন হ্যাটট্রিকসহ করেন চার গোল। উল্লেখ্য, গত ২০১৩-১৪ মৌসুমের লীগে ২৬ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন ওয়েডসন। ১ গোলের জন্য স্পর্শ করতে পারেননি ১৯৮২ লীগে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের প্রখ্যাত ফরোয়ার্ড আব্দুস সালাম মুর্শেদীর ২৭ গোলের রেকর্ডটি। হাতে মাত্র তিন ম্যাচ। এই তিন ম্যাচে ওয়েডসনের ১১ গোল করাটা প্রায় অসম্ভবই বলা যায়। ১৫ গোল করে ওয়েডসনের ঘাড়ে উত্তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলছেন তারই সতীর্থ নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্লিংটন, ব্রাদার্সের হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড অগাস্টিন ওয়ালসন এবং মোহামেডানের গিনির ফরোয়ার্ড ইসমাইল বাঙ্গুরা। এমেকাও করেছেন একটি হ্যাটট্রিক (৬ জুলাই, বিপক্ষ: ফেনী সকার, ফল: জামাল ৬-২ গোলে জয়ী)। যদিও এমেকার গোল হতে পারত ১৭টি! দুটি ভিন্ন খেলায় রেফারি বিস্ময়করভাবে তার করা দুটি গোল দিয়ে দিয়েছেন অন্যদের! তাছাড়া লালকার্ড পাওয়ায় এমেকা খেলতে পারেননি একটি ম্যাচে। মোহামেডানের বাঙ্গুরা কদিন আগে আলোচনায় আসেন তিন বিদেশী ফুটবলারের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পেয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে সুযোগ পাওয়ার খবরে। পরে অবশ্য বাফুফে ওই প্রক্রিয়া স্থগিত করে। বাঙ্গুরারও আছে একটি হ্যাটট্রিক (১৬ মে, বিপক্ষ: রহমতগঞ্জ, ফল: মোহামেডান ৫-০ গোলে জয়ী)। এবারের লীগে ওয়েডসনের আগে অনেকটা সময় ধরেই এক নম্বর গোলস্কোরার ছিলেন ব্রাদার্সের অগাস্টিন। এমেকার মতো তিনিও লালকার্ড পাওয়ায় এক ম্যাচ খেলতে পারেননি। ফুটবলপ্রেমীদের ধারণা, পরের মৌসুমে জামাল-রাসেল, মোহামেডান-আবাহনীর মতো আরও বড় দলে খেলতে দেখা যাবে তাকে। লীগে অগাস্টিনও করেছেন একটি হ্যাটট্রিক (২৪ এপ্রিল, বিপক্ষ: মুক্তিযোদ্ধা, ফল: ব্রাদার্স ৫-২ গোলে জয়ী। এ ম্যাচে অগাস্টিন একাই করেন চার গোল)। এছাড়া ১২ গোল করে তালিকার তৃতীয় স্থানে আছেন এনামুল হক। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের এই অধিনায়ক-ফরোয়ার্ডের এই ১২ গোল হচ্ছে চলমান লীগে দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া দুই অঙ্কের গোল করেছেন আরও দুজনÑ শেখ জামালের গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার ল্যান্ডি ডার্বোয়ে (১১) এবং মোহামেডানের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা (১০)। এখন দেখার বিষয়, আগামী ২০ ম্যাচে কে কয়টি গোল করে হতে পারেন লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতার খেতাব।
×