ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় টেস্ট শুরু ॥ জিততে মরিয়া টাইগাররা

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৮ জুলাই ২০১৫

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় টেস্ট শুরু ॥ জিততে মরিয়া টাইগাররা

মোঃ মামুন রশিদ ॥ সাগরিকা টেস্টে বৃষ্টির উপদ্রবে শেষ দু’দিন মাঠেই নামতে পারেনি বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে ময়দানী লড়াইয়ে জিততে পারেনি কেউ, জিতে গেছে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি টাইগার ও প্রোটিয়া দলকে ধাওয়া করে এসেছে ঢাকাতেও। বৃহস্পতিবার শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ বলেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সোমবার থেকেই অনুশীলনে নেমে গেছে দু’দল। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অবশ্য ইনডোরেই ব্যাট-বলের অনুশীলন করেছে উভয়দল। সকালে ব্যাট-বলের অনুশীলন শেষে বাংলাদেশ দলের ওপেনার ইমরুল কায়েস প্রত্যয় জানিয়েছেন মিরপুর টেস্টে আরও ভাল করার। আর দক্ষিণ আফ্রিকা দল দুপুরে মাঠে নেমে হালকা প্রস্তুতির সুযোগ পেলেও ব্যাট-বলের অনুশীলনটা ইনডোরেই করতে বাধ্য হয়েছে মাঠ ভেজা থাকায়। তারাও আত্মবিশ্বাসী এবার মিরপুর টেস্ট জিতে সিরিজ জয়ের বিষয়ে। রবিবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরেছে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল। উভয়দলকে স্বাগত জানিয়েছে ঝলমলে রোদ। দু’দলের ক্রিকেটাররাও স্বস্তি পেয়েছেন চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টির মধ্যে থেকে ঢাকায় রোদের দেখা পেয়ে। কিন্তু এবার অনুশীলনে নামার দিনেই বাগড়া দিল বৃষ্টি। সোমবার সকালে নির্ধারিত সময়ে অনুশীলন শুরু করতে পারলেও বৃষ্টির দাপটে ইনডোরে ব্যাট-বলের অনুশীলন করতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। টেস্ট দলের বাইরে থাকা চার পেসার শফিউল ইসলাম, আল আমিন হোসেন, ফরহাদ রেজা ও আবুল হাসান রাজুরা বোলিং করেছেন। অনুশীলন চালিয়ে যেতেই হবে। কারণ চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। দু’দিন পরেই সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টে প্রোটিয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নামার জন্য অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েছেন টাইগাররা। এখন পর্যন্ত মিরপুরে বাংলাদেশ দল ১৩ টেস্ট খেলেছে। রেকর্ড বলছে অনুপ্রাণিত হওয়ার মতো আহামরি কোন সাফল্য নেই এখানে টাইগারদের। কারণ ১০ হারের বিপরীতে ১ জয় আর এক ড্র আছে। জয়টা এসেছে নিজেদের চেয়ে কম শক্তিধর জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে গত বছর অক্টোবরে। তবে এখন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ অনেক ভাল অবস্থায় আছে। সেটার প্রতিফলন চট্টগ্রাম টেস্টেও দেখা গেছে। প্রথম ইনিংসে ৭৮ রানের লিড নেয়ার পর তৃতীয় দিন পর্যন্ত ১৭ রানে প্রোটিয়াদের চেয়ে এগিয়ে ছিল টাইগাররা। এমনকি এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে তিন শতাধিক রানের ইনিংস গড়তে পেরেছে বাংলাদেশ দল। এ কারণেই দল এখন আত্মবিশ্বাসী ঢাকা টেস্টেও ভাল করার বিষয়ে। এ বিষয়ে দলের ওপেনার ইমরুল কায়েস সোমবার অনুশীলন শেষে বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস তো সবারই থাকে। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের এবং দলে থাকে। বাইরে থেকে বলা কঠিন আমরা এভাবে খেলব, ওভাবে খেলব। উইকেট দেখে পরিকল্পনা করতে হয়। চট্টগ্রামের উইকেট এক রকম ঢাকার উইকেট এক রকম। নির্ভর করছে উইকেটের কন্ডিশনের ওপর।’ আবারও প্রোটিয়াদের ভয়ঙ্কর বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ভাল ব্যাটিং করা বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য। কারণ চট্টগ্রামের উইকেটের সঙ্গে বেশ পার্থক্য থাকবে মিরপুরের উইকেটের। বাউন্সিও হবে। এ বিষয়ে ইমরুল বলেন, ‘আমরা খেলেছি বিশ্বের এক নম্বর দলের সঙ্গে। তারা বাজে বল কম করে। ওরা ভাল জায়গায় বল করে।’ প্রথম টেস্টে কি ঘটেছে সেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রতি ম্যাচকেই গুরুত্বের সঙ্গে দেখে তারা। সোমবার অনুশীলনেও নেমে গেছে প্রোটিয়ারা। যদিও বৃষ্টির কারণে ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শুধু ফুটবল খেলার সুযোগ পেয়েছে তারা। পরে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলনটা করতে হয়েছে ইনডোরেই। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টকে বাঁচা-মরার লড়াই নয় বরং অন্য যে কোন ম্যাচের মতোই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সফরকারীরা। এ বিষয়ে দলের ওপেনার ডিন এলগার বলেন, ‘আমি দ্বিতীয় টেস্টকে ওভাবে দেখছি না। প্রতি টেস্ট ম্যাচই আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় পাঁচ বছর ধরে আমরা এক নম্বর টেস্ট দল। প্রতি ম্যাচকে গুরুত্ব দিয়েই এগোতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সে জন্যই এখন পর্যন্ত আমরা বিশ্বের এক নম্বর দল আছি।’ মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ বছর আগে টেস্ট খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ ভেন্যুতে এই একটি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতাই আছে তাদের। সে ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২২ রানের লিড নিলেও পরে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল প্রোটিয়ারা এবং জিতে গিয়েছিল ৫ উইকেটে। সে কারণে চট্টগ্রাম টেস্ট নিয়ে না ভেবে নিজেদের মৌলিক সামর্থ্য অনুসারেই সেরাটা দিতে প্রস্তুত হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা দল।
×