ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এলজিআরডি মন্ত্রী

গ্রামে গেলে এখন মানুষ রাস্তার বদলে বিদ্যুতের খুঁটি চায়

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৭ জুলাই ২০১৫

গ্রামে গেলে এখন মানুষ রাস্তার বদলে বিদ্যুতের খুঁটি চায়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, পাঁচ বছর আগে গ্রামে গেলে লোকজন রাস্তা চাইত এখন বলে ৫টা খুঁটি দেন। এখন রাস্তার চেয়ে তাদের বিদ্যুত বেশি দরকার। কারণ রাস্তা অনেক হয়েছে। দেশ যে উন্নত হচ্ছে এটি তার প্রমাণ। মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়েছে। বিদ্যুত ও জ্বালানি খাত ছাড়া দেশের উন্নতির কথা ভাবা যায় না। তিনি বলেন, ৩ লাখ ৬ হাজার ৩৩ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা রয়েছে। পৃথিবীর কোন দেশের মানুষ এত জমি সেক্রিফাইস করে না। উপজেলা রাস্তা উন্নয়ন করা হবে। ভারি যানবাহন যাতে গ্রামীণ রাস্তা ঢুকতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার খাতভিত্তিক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রবিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূতমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এবং বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আগামী পাঁচ বছরে ১২ হাজার ৮৫৩ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারীভাবে ৭ হাজার ৬৮২ মেগাওয়াট অর্থাৎ ৬০ শতাংশ এবং বেসরকারী খাতে ৫ হাজার ১৭১ মেগাওয়াট অর্থাৎ ৪০ শতাংশ বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিদ্যুত উৎপাদনে স্থানীয় কয়লা ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া জরুরী। এই কয়লা ব্যবহার করে অনেক বিদ্যুত তৈরি করা সম্ভব। তাই কয়লা বিদেশে রফতানি করা যাবে না। উপজেলাগুলোতে যেন ভারি গাড়ি না ঢোকে সে উদ্যোগ নিতে হবে। বর্তমানে ঢাকায় প্রায় দেড় লাখ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে । তাদের আবাসিক সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। উত্তরা ঝিলমিল ও পূর্বাচলে নক্সা এ বছরেই করার জন্য রাজউককে নির্দেশ দিয়েছি। আশা করছি সেটি হয়ে যাবে। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আগামীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র বেশি করার ক্ষেত্রে নজর দেয়া হবে এবং রাস্তা-ঘাট উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যাতে সড়ক দুঘর্টনা কমে যায়। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দেশের উন্নয়নে সাহসী নেতৃত্বের দরকার। বর্তমান সেই অবস্থা রয়েছে এটি অব্যাহত থাকলে দেশ এগিয়ে যাবে। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আগামী বছর ১৩টি বিদ্যুত কেন্দ্র সমাপ্ত হবে। বিদ্যুত সঞ্চালন ও বিতরণে এবার বাজেটে বেশি বরাদ্দ আছে। শহরে বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমানো সম্ভব হচ্ছে, কিন্তু গ্রামে এই সমস্যা অব্যাহত রয়েছে। আগামীতে বিদ্যুত উৎপাদনের পাশাপাশি বিদ্যুত সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় বেসরকারী খাতকে ব্যাপকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দক্ষ জনশক্তির অভাব। যেমন, মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য দেশে যোগ্যতাসম্পন্ন এমডি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রেলের ভারপ্রাপ্ত সচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন বলেন, ভবিষ্যতে ইলেকট্রিক ট্রেন চালুর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। কেননা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ইলেকট্রিক ট্রেন চলছে। আমরাও বিদ্যুত বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিদ্যুত দিতে পারলে আগামীতে ইলেকট্রিক ট্রেন চালু করা হবে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ম. তামিম বলেন, বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে প্রচুর বিনিয়োগের দরকার। বিশেষ করে বিদেশী বিনিয়োগ প্রয়োজন। এই খাতে আগামী পাঁচ বছরে ২১ বিলিয়ন ডলার মার্কিন ডলার বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কিন্তু সেটি ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করা উচিত
×