ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাতভর নির্যাতনের পর ভাতের মাড় ঢেলে ঝলসে দেয়া হলো গৃহবধূর দেহ

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ২৪ জুলাই ২০১৫

রাতভর নির্যাতনের পর ভাতের মাড় ঢেলে ঝলসে দেয়া হলো গৃহবধূর দেহ

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ২৩ জুলাই ॥ সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের উত্তর কাজিপাড়া গ্রামে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে রাতভর নির্যাতনের পর সকালে ভাতের মাড় দিয়ে পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। আহত গৃহবধূ সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় গৃহবধূ বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। জানা গেছে, উপজেলা জামপুর ইউনিয়নের জাহিদুল ইসলামের ছেলে মফিজুল পার্শ্ববর্তী সেকেরহাট গ্রামের মজিবুর রহমানের মেয়ে মৌসুমীর সঙ্গে প্রেম করে দুই বছর আগে বিয়ে করে ছিলেন। দাম্পত্য জীবনে ৭ মাসের রোহান নামের তাদের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে মৌসুমীকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। তিন মাস আগে মৌসুমীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বাবা মুজিবুর রহমান যৌতুকের এক লাখ টাকা শ্বশুরের হাতে তুলে দেন। সম্প্রতি গৃহবধূ মৌসুমীর স্বামী বিদেশ যাওয়ার জন্য আরও দুই লাখ টাকা চায় মৌসুমীর কাছে। দাবিকৃত যৌতুকের টাকা বাবার কাছ থেকে আনার জন্য বিভিন্ন সময়ে শাশুড়ি আনোয়ারা, স্বামী মফিকুল ইসলাম, দেবর রফিকুল ইসলাম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। যৌতুকের টাকার জন্য বুধবার রাতে গৃহবধূ মৌসুমীর সঙ্গে স্বামী, শাশুড়ি ও দেবরের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মৌসুমীকে ঘরের ভেতর আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে ঘরের তালা খুলে দিলে গৃহবধূ বাবার বাড়ি চলে আসার কথা বলে। এ সময় দেবর শফিকুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে ভাতের গরম মাড় ওই গৃহবধূর ওপর ঢেলে দেয়। এতে গৃহবধূর পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। আহত গৃহবধূকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহবধূ মৌসুমী বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় স্বামী মফিজুল ইসলাম, শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম ও দেবর শফিকুল ইসলামকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। সোনারগাঁ থানার ওসি তদন্ত হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
×