ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীতে ঈদ বিনোদন

বৃষ্টি ছাপিয়ে উৎসবের আনন্দে শামিল নগরবাসী

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২১ জুলাই ২০১৫

বৃষ্টি ছাপিয়ে উৎসবের আনন্দে শামিল নগরবাসী

মনোয়ার হোসেন ॥ ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ...। নজরুলের সুর ধরে এভাবেই অফুরান আনন্দ আর প্রাণের উচ্ছ্বাস নিয়ে হাজির হয়েছে ঈদ উৎসব। উৎসবপ্রিয় বাঙালীর কাছে এভাবেই ধরা দিয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। যদিও আনন্দপ্রিয় বাঙালীসত্তার কাছে ধর্মীয় এ উৎসব ধর্মের গ-ি পেরিয়ে সৌহার্দের পথরেখায় হয়ে উঠেছে সার্বজনীন। তখন আর থাকে না হিন্দু-মুসলমান কিংবা বৌদ্ধ-খ্রীস্টানের পরিচয়। উৎসবের সন্ধানে সবাই এক সুরে মেতে ওঠেন আনন্দের অবগাহনে। আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হয় শুধুই নির্মল সুখের বারতা। তবে এবারের ঈদ উৎসবের সঙ্গে যেন মিতালী গড়েছিল শ্রাবণের বাদল ধারা। শনি থেকে সোম-ঈদের এই তিনটি দিনই আকাশ থেকে ঝরেছে রূপময় ঋতু বর্ষার বৃষ্টি। কখনও ঝিরঝির আবার কখনও ঝরেছে মুষলধারে। তাই বলে থেমে যায়নি শহরবাসীর আনন্দ আবাহন। বরং বারিধারাকে ছাপিয়ে নাগরিক মন শামিল হয়েছে আনন্দের সন্ধানে। নিজের ইচ্ছা কিংবা পরিবারের শিশুটির আবদারে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই ছাতা মাথায় নিয়ে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে এসেছে উৎসব উদ্্যাপনের আকাক্সক্ষায়। কেউ বা ইচ্ছে করেই আপন শরীরটিকে ভিজিয়েছেন বাদল দিনের বর্ষণে। সব মিলিয়ে ফাঁকা হওয়া ঢাকায় বিরাজ করেছে সুখময় দৃশ্যকল্প। বায়ান্ন বাজার আর তেপ্পান্ন গলির শহরে ছুঁয়ে গেছে বর্ণিলতা। কর্মদিবসের হিসেবে ছুটি শেষ হলেও সোমবার পর্যন্ত রাজধানী ঢাকা ছিল একদম ফাঁকা। নাড়ির টানে বাড়ি যাওয়া মানুষের মধ্যে জীবিকার টানে স্বল্পসংখ্যক ফিরে এলেও কাটেনি শহরের ছিমছাম ভাব। সেই সুবাদে ফাঁকা এ শহরে অপার বিনোদনের সন্ধানে একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছে বিনোদন পিপাসু নগরবাসী। যান ও জনজটের শহরটিতে যেন নেমে এসেছিল স্বস্তির অবকাশ। চিরচেনা যান্ত্রিক কোলাহলের পরিবর্তে প্রাশান্তিময় নীরবতা ছিল শনি, রবি ও সোমবার পর্যন্ত। তাই তো ঈদ আনন্দে নীরব শহরটিও সরব হয়েছিল বিনোদনপ্রেমীদের মুখরতায়। ট্রাফিক জ্যামহীন শহরে মনের সুখে ঘুরে বেরিয়েছে শহরবাসী। ফাঁকা হওয়া শহরে ক্রিং ক্রিং শব্দ তুলে চলেছে রিক্সাভ্রমণ। নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই পৌঁছা গেছে কাক্সিক্ষত গন্তব্যে। ফলে ঘোরাঘুরিটাও হয়েছে আরামদায়ক ও স্বস্তিকর। ঢাকার সব রাস্তা যেন শাহবাগের শিশুপার্ক, জাতীয় জাদুঘর, মিরপুরের চিড়িয়াখানা, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, শ্যামলীর শিশুমেলা, পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লা কিংবা আহসান মঞ্জিলে গিয়ে ঠেকেছিল। গোটা ঢাকা যে ফাঁকা হয়ে আছে, তা বোঝার উপায় ছিল না এসব বিনোদন কেন্দ্রে। শিশু-কিশোরদের নিয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘুরে বেড়িয়েছেন এসব পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রে। সুযোগ বুঝে ঘোরাঘুরির তালিকায় বাদ যায়নি চন্দ্রিমা উদ্যান, সংসদ ভবনের চারপাশ কিংবা পুরান ঢাকার বলধা গার্ডেনসহ বিভিন্ন স্পট। ঢাকার অদূরে ফ্যান্টাসি কিংডম, বা নন্দন পার্কেও নানা রাইডে চড়ে উৎসব উদ্্যাপন করেছেন অনেকে। এ তালিকায় ঐতিহাসিক স্থাপনার রেপ্লিকায় সাজানো হেরিটেজ পার্কও। আর ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি ঘরে ঘরে চলেছে অতিথিবান্ধব বাঙালীর অতিথি আপ্যায়ন। মধুমিতা, স্টার সিনেপ্লেক্স, বলাকা কিংবা ব্লকবাস্টার সিনেমাসে নতুন আসা ঢাকাই ছবিটি দেখেও আনন্দ উপভোগ করেছেন অনেক সিনেমাপ্রেমী। কেউ বা বিজ্ঞাপনের বিড়ম্বনা নিয়েই বিনোদন মিটিয়েছেন চ্যানেলে চ্যানেলে বিনোদনমূলক নাটক কিংবা সঙ্গীতানুষ্ঠান দেখে। ঈদের প্রথম দিন শনিবার থেকেই ঝরেছে অঝোরধারায় বৃষ্টি। অনেক অভিভাবকের অনিচ্ছা থাকলেও সন্তানের বেড়ানোর চাপে ছাতা মাথায় নিয়ে ঘর ছেড়ে নামতে হয়েছে পথে। চিড়িয়াখানার প্রাণীরাজ্য বা শিশুপার্কের রাইডে চড়িয়ে রক্ষা করতে হয়েছে প্রাণপ্রিয় শিশুটির মন। আর বড়দের সঙ্গে বাহারি রঙের পোশাকে নিজেদের সাজিয়েছে শিশুরা। শুধু নতুন পোশাক পরলেই আনন্দ পূরণ হয় না। পোশাকের রঙের সঙ্গে মনের রঙ মেশাতে চাই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস আর বিনোদন। তাই ছিল না বাবা-মার অনুশাসন আর বিধি-নিষেধের কঠোরতা। মুক্ত বিহঙ্গের মতো ডানা মেলে উড়ে বেড়ানোর এটাই তো মোক্ষম সময়। শুধু আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়ানো আর ঈদ সালামিতে তো মন ভরে না। চাই প্রকৃতির ছোঁয়া আর নানা রকম এ্যাডভেঞ্চার। ঈদের ছুটিতে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে গেলেও সোনামণিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো। এভাবেই বৃষ্টিঝরা উৎসবের দিনে তিলোত্তমা ঢাকা পরিণত হয়েছে আনন্দ নগরীতে। ঈদের প্রথম দিন শনিবার থেকেই খোলা ছিল আনন্দ উদ্যাপনে সোনামণিদের তীর্থস্থান শাহবাগের শিশুপার্ক। প্রথম দিনেই বৃষ্টিকে পাত্তা না দিয়ে এখানে হাজির হয়েছিল ৩৩ হাজার দর্শনার্থী। তৃতীয় দিন সোমবার পর্যন্ত সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কচিকাঁচাদের মুখরতায় সরগরম হয়ে ওঠে তাদের এই প্রিয় প্রাঙ্গণটি। রোমাঞ্চ চক্র, আনন্দ ঘূর্ণি, উড়ন্ত বিমান, উড়ন্ত নভোযান, ঝুলন্ত চেয়ার, লম্ফঝম্ফ, ব্যাটারিকার, এফ সিক্স জঙ্গী বিমান, রেলগাড়ি ও বিস্ময় চক্র এমন ১০টি রাইডার নিয়ে শিশুদের মনোরঞ্জনে ব্যস্ত ছিল শিশুপার্ক কর্তৃপক্ষ। আর প্রতিটি রাইডের সামনে থাকা লম্বা লাইন যেন মনে করিয়ে দিচ্ছিল উৎসবের কাছে বাঁধা হতে পারে শ্রাবণের বারিধারা। অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্যের দেখা মেলে এই ছোটদের অতি প্রিয় এই প্রাঙ্গণে। বৃষ্টির মাঝে অভিভাবকরা সবাই রং-বেরংয়ের ছাতা নিয়ে আগলে রাখছিলেন আপন সন্তানটিকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সৃশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষা শেষে সন্তানকে তুলে দিয়েছেন তার পছন্দের রাইডটিতে। ঈদের প্রথম দিন শনিবার অভিভাবকদের ব্যস্ততার কারণে প্রবল বাসনা থাকলেও আসতে পারেনি পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের খুদে বন্ধু আবীর। তাই রবিবার সকাল থেকে শিশুপার্কে বেড়াতে যাওয়ার বায়না ধরে মায়ের কাছে। অবশেষে বেলা ৩টায় সন্তানকে নিয়ে মা সামেরা জামাল হাজির হন শিশুপার্কে। বিভিন্ন রাইডে চড়িয়ে সন্তানের মন ভুলিয়েছেন এই গৃহিণী। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া ৯ বছরের মৌমিতা জান্নাত শিশুপার্কে বেড়াতে আসার আনন্দ ব্যক্ত করে জানায়, আমার কাছে ঈদের দিনের সবচেয়ে বড় আনন্দ এই পার্কে ঘুরে বেড়ানো আর বিভিন্ন রাইডে চড়ে মজা করা। চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী অনিকের মন্তব্য, শিশুপার্কে ঢুকলেই মনটা ভরে যায়। এখানে নানা ধরনের জিনিস দেখতে পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন রাইডে চড়া যায়। রবিবার গাজীপুর থেকে ব্যবসায়ী সামিউর রহমান প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে ফায়সাল রহমানকে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। বাপ-বেটা মিলে ঈদের দিনটিকে দারুণ উপভোগ করছেন। সামিউর রহমান বললেন, ফ্যান্টাসি কিংডম বা নন্দন পার্কে বাচ্চাদের জন্য অনেক ধরনের রাইড থাকলেও মূলত শিশপার্ক হিসেবে আমি শাহবাগের শিশুপার্কটিকেই পছন্দ করি। এখানে বেশ কিছু রাইড আছে যা অন্য পার্কগুলোয় নেই। সব মিলিয়ে তাই শিশুমেলায় পরিণত হয়েছিল শাহবাগের এ উদ্যানটি। শিশুপার্কের দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, বাঙালী মাত্রই উৎসবপ্রিয়। তাদের উৎসব উদ্্যাপনে যেন কোন কিছুই বিঘœ সৃষ্টি করতে পারে না। হয়ত সে কারণেই দিনভর বৃষ্টির মাঝেও ঈদের প্রথম দিন রবিবার ৩৩ হাজার দর্শনার্থী প্রবেশ করেছে এই শিশুরাজ্যে। বর্ষার বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হাজির হয়েছে এখানে। আর বাচ্চাদের আবদার মেটাতে অনেক অভিভাবক বাধ্য হয়েও পার্কে এসেছেন। বিভিন্ন রাইডে চড়িয়ে সন্তানের মন রক্ষা করে তবেই ফিরেছেন ঘরে। তিনি আরও জানান, প্রতিবছর ঈদের তিনটি দিন সাধারণত গড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার করে উৎসবপ্রিয় মানুষ এখানে আসে। এ বছর বৃষ্টির কারণে সেই পরিমাণটা কিছুটা কমলেও পার্কের ভেতরে থাকা মানুষের ভিড় দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। শ্যামলীর শিশুমেলায়ও দেখা গেছে শিশু-কিশোরদের হৈ-হুল্লোড়। বাবা-মায়েরা সন্তানদের দোলনা, ব্যাটারিকারসহ বিভিন্ন রাইডে উঠিয়ে দিয়ে সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন তাদের প্রতি। প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল ঈদের আমেজ। এছাড়াও স্বামীবাগ ও গুলশানের ওয়ান্ডার ল্যান্ডসহ বিভিন্ন বিনোদন স্পটে ছিল শিশুদের সরব উপস্থিতি। ঈদের দ্বিতীয় দিন রবিবার শিশু-কিশোর ও প্রতিবন্ধীরা বিনামূল্যে জাদুঘর ঘুরে দেখার সুযোগ পেয়েছে। গ্যালারি প্রদর্শন ছাড়া জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে বেলা সাড়ে ১১টা, দুপুর আড়াইটা ও বিকেল সাড়ে ৪টায় একটি করে তিনটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। অঝোরধারায় বৃষ্টি ঝরলেও ঈদের দিন দুপুরের পর থেকে তরুণদের আগমনে মুখর ছিল শাহবাগ ও টিএসসি চত্বর। অন্যদিকে গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরায় গড়ে ওঠা ইনডোর রেস্তরাঁগুলো দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছিল বিনোদনপিয়াসী মানুষের আনাগোনায় সরগরম। খোলা আকাশে নিচে নয়, কাঁচঘেরা মনোরম পরিবেশে ফুড কর্নারে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কফি আর মুখরোচক খাবারে বিরামহীন আড্ডা দিয়ে সময় পার করেছে তরুণদের দল। বৃষ্টির কারণে এবার ঈদে খুব একটা জনসমাগম সোহরাওয়ার্দী, রমনা কিংবা চন্দ্রিমা উদ্যানে। ঈদের ছুটিতে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সবচেয়ে বেশি ভিড় জমে ওঠে মিরপুর চিড়িয়াখানায়। ২০ টাকার একটি টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকলেই পাওয়া যায় উন্মুক্ত প্রান্তর। দিনভর উপভোগ করা যায় নানা জাতের পশু-পাখির বিচরণ। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের কাছে আকর্ষণীয় মিরপুর চিড়িয়াখানা ঈদের দিন দুপুর থেকে টানা তিন দিন হয়ে ওঠে লোকে লোকারণ্য। আর দর্শনার্থীদের ভিড় সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের প্রথম দিন চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেছে ৪৬ হাজার দর্শনার্থী। বর্ষার জল মাথায় নিয়েই ঈদের তিনটি দিন অগণন মানুষের জমাটবাঁধা আগমন ঘটে চিড়িয়াখানায়। দর্শনার্থীরা মন ভরে উপভোগ করেছেন বাঘের গর্জন, বানরের চেঁচামেচি, বেবুনের ভেংচি, উটপাখির দৌড়াদৌড়ি, জলহস্তির ডুবসাঁতার, ময়ূরের নাচ, নানা জাতের সাপের ধীরগতিতে পথচলাÑ আরও কত কী? সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায় বানরের খাঁচার সামনে। কারণ অন্য প্রাণী চিড়িয়াখানায় আসার পর তাদের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য সামান্য হলেও হারিয়ে ফেলে। কিন্তু বানরের বাঁদরামি এখানে বিন্দুমাত্র কমে না। তারা সব সময়ই প্রাণবন্ত থাকে ও সারাক্ষণ খাঁচার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত লাফালাফি করতে থাকে। শিশু-কিশোরও অনেক সময় যোগ দেয় তাদের বাঁদরামোর সঙ্গে। অনেকেই শিশু-কিশোরসহ পরিবারের বিভিন্ন বয়সের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে দিনভর চিড়িয়াখানার পশুপাখি দেখে সময় কাটান। বাসা থেকে সঙ্গে নিয়ে আসা নানা খাবার খান হাতে হাতেই। ঈদের আনন্দকে বর্ণাঢ্য করতে নগরবাসী ছুটেছেন রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা হাজির হয়েছেন নন্দন পার্ক, ওয়ান্ডারল্যান্ড, ওয়াটার ওয়ার্ল্ডসহ রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলের চিলড্রেন কর্নারগুলোতে। ঈদের ছুটিতে প্রথম দিন থেকেই উৎসুক জনসমাগম ঘটে পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক স্থাপনা লালবাগ কেল্লায়। অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী এ কেল্লায় আনন্দঘন কিছুটা সময় কাটাতে। জেনে নিয়েছেন ১৬১০ মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়ে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই ঐতিহাসিক স্থাপনার নানা বিষয়। তবে এবার বৃষ্টির কারণে দিনের বেলার স্থাপত্য দর্শনের পাশাপাশি সন্ধ্যা কেল্লার ইতিহাস-ঐতিহ্যভিত্তিক লাইট এ্যান্ড সাউন্ড শো দেখার সুযোগ মেলেনি দর্শনার্থীদের। শুধু লালবাগের কেল্লা নয়, পুরান ঢাকার বলধা গার্ডেন, আহসান মঞ্জিলসহ বেড়ানোর জায়গাগুলোতে সপরিবারে এসেছিলেন অনেকে। নন্দন পার্কে বয়ে গেছে তারুণ্যের জোয়ার। পার্কের হেড অব মার্কেটিং যোবায়েদ আল হাফিজ জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদের দিন সকাল থেকেই খোলা আছে পার্ক। এখানে প্রবেশ করে সাধারণ প্রবেশ মূল্য ২৪০ টাকা। সব রাইড উপভোগ করতে লাগবে ৮০০ টাকার মতো। ঈদে একটি বিশেষ প্যাকেজ অফার করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্যাকেজটির আওতায় ৫২০ টাকা মূল্যের তিনটি টিকিট কিনলে একটি ফ্রি পাওয়া যায়। ওয়াটার ওয়ার্ল্ড ও ড্রাই পার্কের সব রাইডও উপভোগ করা যাবে এই প্যাকেজের আওতায়। ঈদের পরবর্তী দিনগুলোতে পার্কে লাইভ মিউজিক, ডিজে, ড্যান্স শো ইত্যাদির আয়োজন থাকবে বলে জানান তিনি। এদিকে আনন্দের সন্ধানে অনেকেই ছুটে গেছেন বিভিন্ন সিনেমা হলে। বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখা আর ফাস্টফুডের দোকানগুলোতে জমে ওঠে দীর্ঘ আড্ডা। এছাড়াও মধুমিতা, অভিসার, জোনাকি, বলাকা, রাজমণিসহ বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহগুলোতেও সিনেমাপ্রেমীদের কমতি ছিল না। ঈদকে রংময় করতে ছবি দেখে কাটিয়ে দিয়েছেন বেশ কিছুটা সময়।
×