ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আইপিএল ফিক্সিং কলঙ্কে ভারতীয় সুপ্রীমকোর্টের রায়, আজীবন নিষিদ্ধ দুই ক্লাব মালিক গুরুনাথ মায়াপ্পন ও রাজ কুন্দ্রা, অন্য দলের হয়ে খেলতে পারবেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ও সুরেশ রায়নারা

ফিক্সিং-দুই বছর নিষিদ্ধ চেন্নাই ও রাজস্থান

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৫ জুলাই ২০১৫

ফিক্সিং-দুই বছর নিষিদ্ধ চেন্নাই ও রাজস্থান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরও একবার কেঁপে উঠল ভারতীয় ক্রিকেট। বিশ্বজয়ের মতো কোন খুশির খবরে নয়, ফিক্সিং কলঙ্ক ও দুর্নীতির সূত্রে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হলো টুর্নামেন্টটির অন্যতম সফল দল চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়্যালস। লোধা কমিটির পর্যালোচনার শেষে মঙ্গলবার এই রায় দেয় ভারতীয় সুপ্রীমকোর্ট। একই সঙ্গে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তর গণতান্ত্রিক দেশটির সর্বোচ্চ আদালত ফ্র্যাঞ্চাইজি দুটির মালিক গুরুনাথ মায়াপ্পন এবং রাজ কুন্দ্রাকে আজীবন সব ধরনের ক্রিকেটীয় কর্মকা- থেকে বহিষ্কার করে। যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করে আদালত জানায়, ‘চেন্নাই ও রাজস্থান মালিকদের ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার নিরঙ্কুশ প্রমাণ মিলেছে। এটি কেবল আইপিএল বা বিসিসিআইয়েই (ইন্ডিয়ান বোর্ড) নয়, বিশ্বে ভারতীয় ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে, তদন্ত সাপেক্ষে তাই কামিটির এই সিদ্ধান্ত।’ ২০১৩ আইপিএলের ষষ্ঠ আসরে যখন স্পট-ফিক্সিংয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে তখনই এ নিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ায় ডামাডোল শুরু। ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে নিষিদ্ধ হন জাতীয় তারকা শ্রীসান্থসহ তিন রাজস্থান ক্রিকেটার। উঠে আসে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন চেন্নাই ও রাহুল দ্রাবিড়ের রাজস্থানের নাম। চেন্নাইর মালিক মায়াপ্পন আবার সাবেক বিসিসিআই প্রধান ও বর্তমান আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) বস এন শ্রীনিবাসনের জামাতা। অন্যদিকে রাজস্থানের মালিকপক্ষের অন্যতম বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রা বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠীর স্বামী। শুরু থেকে এ নিয়ে নাটক কম হয়নি। আইনের ফাঁক গলে বার বার বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছেন মায়াপ্পনের মতো ভিআইপিরা। বিসিসিআইয়ে ব্যাপক পরিবর্তন আসলে ক্ষমতার পালা বদলে সেখানে অধিসীন হন জাগমোহন ডালমিয়ার মতো ভদ্রজন। ভারতীয় সুপ্রীমকোর্টের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে গঠন করা হয় নতুন তদন্ত কমিটি। কলঙ্কের সঙ্গে জড়িয়ে উঠে আসে মায়াপ্পন, কুন্দ্রা থেকে অনেক বড় সব নাম। শেষ পর্যন্ত লোধা কমিটির নিবিড় তদন্ত থেকে বাঁচতে পারেননি তারা। সোমবার ছিল ফিক্সিংয়ে সাজার রায় ঘোষণার দিন। জল্পনা ছিল ভারত জুড়ে, কি আছে বড় দুটি দল ও রাঘব-বোয়ালদের ভাগ্যে? অনেকে ভেবেছিলেন যে করে হোক শেষ পর্যন্ত ভেতরে ভেতরে একটা রফাদফা হয়ে যাবে। সেটি হয়নি। আইনের কাছে হার মানতে হলো অপরাধীদের। এ রিপোর্ট লেখার সময় অবশ্য রায়ের বিস্তারিত প্রকাশিত হয়নি। তবে এটা নিশ্চিত যে দল নয়, দলের মালিকদেরই প্রধান অপরাধী হিসেবে গণ্য করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। তাই ক্লাব যেখানে দুই বছরের জন্য, সেখানে শ্রীনি জামাতা মায়াপ্পন ও শিল্পার স্বামী রাজ কুন্দ্রা নিষিদ্ধি হয়েছেন আজীবনের জন্য। ফলে জনপ্রিয় দল দুটির পুরোপুরি মালিকানা পরিবর্তন করে আইপিএলে ফিরে আসার সুযোগ থাকছে। তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের ভার বিসিসিসিআইয়ের ওপর, কমিশনের নয়। লোধা কমিটির পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, দল নিষিদ্ধ হলেও চেন্নাই ও রাজস্থানের ক্রিকেটাররা সেই শাস্তি ভোগ করবেন না। তারা পুরোপুরি মুক্ত। যার অর্থ মহেন্দ্র সিং ধোনি, সুরেশ রায়নারা চাইলে অন্য দলের হয়ে খেলতে পারবেন। সব কিছুই নির্ভর করছে বিসিসিআইয়ের পরবর্তী সিদ্ধান্তের ওপর।
×