ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে দেখা করে দায়িত্ব নিলেন খন্দকার মোশাররফ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৩ জুলাই ২০১৫

সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে দেখা করে  দায়িত্ব নিলেন  খন্দকার  মোশাররফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে নতুন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতিমুক্ত করাই হবে প্রধান কাজ। যোগদানের আগে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ‘অনুমতি’ নিতেই তার বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। রবিবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উনি (সৈয়দ আশরাফ) সমষ্টিগতভাবে আমাদের দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন। উনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছি। উনি আমার দলের নেতা, দলের সাধারণ সম্পাদক। সাধারণ সম্পাদকের অনুমতি নেয়ার জন্য গিয়েছিলাম। বলেছি মন্ত্রণালয়ে যোগদান করব কিনা? তিনি অনুমতি দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে সভানেত্রীর পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদধারী সৈয়দ আশরাফকে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকারের মন্ত্রীর দফতর থেকে সরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব দেয়া হয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে, যিনি শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুলের শ্বশুর। মন্ত্রণালয় ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বৈঠকে অনুপস্থিতি নিয়ে দলের ভেতরেই আশরাফের সমালোচনা ছিল। তবে তাকে আকস্মিকভাবে দফতরছাড়া করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে গত তিন দিন ধরেই। এ বিষয়ে একাত্তরের প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, তার বাবা বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিয়েছেন। তিনি সেই রক্তের উত্তরসূরি। দফতর হারানো আশরাফের বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাতের পরই রবিবার সচিবালয়ে এসে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বুঝে নেন খন্দকার মোশাররফ। ১৫ মিনিটের ওই সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার আগে সাবেক মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন তিনি। আর সৈয়দ আশরাফ বলেন, এক সরকারের সদস্য, এক সংসদের এমপি, আমাদের কো-অপারেশন তো অবশ্যই থাকবে। সাক্ষাত শেষ করেই সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দফতরে যান খন্দকার মোশাররফ। আগের দফতর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ও তিনি দেখভাল করবেন। বেলা সাড়ে ১১টায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে নতুন মন্ত্রীকে বরণ করে নেন। নিজের দফতরের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে সেখানে কয়েক মিনিট কাটিয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন মোশাররফ। পরে তিনি সাংবাদিকেদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার মতো লোককে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন, এতে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। সহযোগিতা চাই, যেন গুরুদায়িত্ব পালন করতে পারি। সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকে ‘দলীয় ব্যাপার’ উল্লেখ করে সাংবাদিকদের তা ‘ওই লেভেলেই’ রাখার অনুরোধ করেন তিনি। মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ লোক পল্লীতে বাস করে। কাজেই পল্লীর উন্নয়ন ছাড়া রূপকল্প অর্জন করা যাবে না। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এসব পল্লীর উন্নয়ন ছাড়া সম্ভব নয়। আর পল্লীর উন্নয়ন করতে সমবায় ছাড়া সম্ভব নয়। জাতীয় উন্নয়নে এ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। দায়িত্ব পাওয়ার পরদিন শুক্রবার নিজের জেলা ফরিদপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে তিনি ‘সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত’ করেছেন। এবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে দুর্নীতি তাড়াবেন বলেও ঘোষণা দেন মোশাররফ। রবিবার এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বলিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি আছে। সাংবাদিকরা আমার কাছে জানতে চেয়েছেন দুর্নীতি থাকলে কী করবেন? আমি বলেছি দুর্নীতি থাকলে তা মুক্ত করব। নতুন মন্ত্রী দফতরে পৌঁছার আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে মন্ত্রীর কক্ষের দরজা মেরামত করতে দেখা যায় কয়েকজন মিস্ত্রিকে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সৈয়দ আশরাফ হাতেগোনা দুই-একদিন সচিবালয়ে এ দফতরে অফিস করেছেন। কক্ষের দরজা ঠিকভাবে খুলত না। এ কারণে মেরামত করতে হয়েছে।
×