ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্প্যানিশ অধিনায়কের নতুন ঠিকানা পর্তুগালের ক্লাব পোর্তো

রিয়াল-ক্যাসিয়াস ভালবাসার বন্ধন ছিন্ন

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১৩ জুলাই ২০১৫

রিয়াল-ক্যাসিয়াস ভালবাসার  বন্ধন ছিন্ন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘরের ছেলে যাকে বলে। ইকার ক্যাসিয়ার রিয়াল মাদ্রিদে তেমনই ছিলেন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এফসি পোর্তোতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতেই ছিলেন স্পেন জাতীয় দলের তারকা এই গোলরক্ষক। দুর্দান্ত ধারাবাহিক পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে দীর্ঘদিন ধরে স্পেন ও রিয়ালের অধিনায়কত্বের দায়িত্বও পালন করেছেন। এক এক স্বর্ণ সাফল্যে ভাসা সেই ক্যাসিয়াসই অনেকটা অপাঙ্ক্তেয় হয়ে গ্যালাক্টিকো শিবির ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন! অর্থাৎ গুঞ্জনই সত্যি হয়েছে অবশেষে। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ক্যাসিয়াস অধ্যায় শেষ হয়েছে। রবিবার স্প্যানিশ পরাশক্তিরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সান্টিয়াগো বার্নাব্যু ছাড়া নিশ্চিত হওয়ার পর নতুন ঠিকানাও খুঁজে নিয়েছেন তারকা এই গোলরক্ষক। আসছে মৌসুম (২০১৫-১৬) থেকে ক্যাসিয়াস খেলবেন পর্তুগালের ক্লাব এফসি পোর্তোতে। রিয়ালের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ ও পোর্তো ক্যাসিয়াসের ছাড়পত্রের ব্যাপারে একমত হয়েছে। কিংবদন্তি এই গোলরক্ষক ক্লাব ও স্প্যানিশ ফুটবলের জন্য অসামান্য অবদান রেখেছেন। সে ক্লাব ছেড়ে যাচ্ছেন। তবে তার অবদান আজীবন রয়ে যাবে। তার দলের হয়ে ৭২৫ ম্যাচ আমাদের দলের জার্সিকে আলোকিত করেছিল। নতুন জীবনের জন্য আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। ক্যাসিয়াস রিয়ালের হয়ে টানা ২৫ বছর খেলেছেন। এ সময় তিনি লা গ্যালাক্টিকোদের হয়ে পাঁচ লা লিগা, দুটি কোপা ডেল’রে ও তিন চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপা জয় করেন। এছাড়া স্পেনের হয়ে জিতেছেন একটি বিশ্বকাপ ও দুটি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। ঐতিহাসিক ট্রেবল জয়ের মধ্য দিয়ে এই কৃতিত্ব দেখান তিনি। অর্থাৎ ২০০৮ সালে ইউরো, ২০১০ সালে বিশ্বকাপ ও ২০১২ সালে ফের ইউরো জয় করেন ক্যাসিয়াস। প্রতিবারই স্পেনের অধিনায়ক ছিলেন ক্যাসিয়াস। সম্প্রতি বছরগুলোতে ক্যাসিয়াস উজ্জ্বলতা অনেকটাই হারিয়ে ফেলেন। যেন নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন। রিয়ালের এক সময়ের নায়ককে সমর্থকরা নিয়মিত দুয়ো দিতে থাকেন। গত মৌসুমে রিয়ালের বড় কোন শিরোপা না জেতার দায়ও অনেকেই তাকে দিয়ে থাকেন। চারদিকে গুঞ্জন চলছে রিয়াল ক্যাসিয়াসের শূন্যতা পূরণ করতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ২৪ বছর বয়সী গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়াকে দলে ভেড়াতে পারে। স্পেন দলেও ক্যাসিয়াসের জায়গাটা তিনিই নিতে যাচ্ছেন। রিয়ালের হয়ে ৭২৫ ম্যাচে গোলবার আগলেছেন ক্যাসিয়াস। রাউল গঞ্জালেসের পর রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় তিনিই। বিদায় বেলায় রিয়ালের ওয়েবসাইটে ক্যাসিয়াসকে ক্লাবটি আর স্পেন জাতীয় দলের ইতিহাসে সেরা গোলরক্ষক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। রিয়াল মাদ্রিদের যুবদলে খেলার মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারের আত্মপ্রকাশ ঘটে ক্যাসিয়াসের। যুবদলে টানা নয় বছর খেলার পর ১৯৯৮ সালে যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদের ‘সি’ টিমে। সেখানে এক বছর খেলার পর ১৯৯৯ সালে সুযোগ পান ‘বি’ টিমে। সেখানে দুর্দান্ত ক্যারিশমা দেখিয়ে ওই বছরই জায়গা করে নেন রিয়াল মাদ্রিদের মূল দলে। সেই থেকে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে চলেন সান্টিয়াগো বার্নাব্যুর দলটিকে। একাধারে ২৫ বছর খেলে চলা স্প্যানিশ অধিনায়ক কখনই ক্লাব ছাড়ার চিন্তা করেননি! মাঝে মধ্যে লোভনীয় প্রস্তাব যে আসেনি তা নয়। কিন্তু ক্যাসিয়াস তা সবিনয়ে প্রত্যাখান করেন। যে কারণে অনেকের ধারণা ছিল, সুদর্শন এ তারকা হয়ত ক্যারিয়ার শেষ করবেন সান্টিয়াগো বার্নাব্যুর ক্লাবটির হয়েই। একবার এক সাক্ষাতকারে এমন ইঙ্গিত দিয়ে ক্যাসিয়াস বলেছিলেন, ‘আরও আট বছর রিয়ালেই থাকতে চাই আমি’। কিন্তু ইচ্ছাপূরণ আর হলো কই। তাকে প্রাণের ক্লাব ছাড়তে হলো অনেকটা অপমানিত হয়েই!
×