ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সপ্তাহান্তের শীর্ষ বৈঠকে স্থির হবে গ্রীসের বেইলআউট নিয়ে কথা হবে কি না

গ্রীসের ভাগ্য ইইউ নেতাদের হাতে

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১২ জুলাই ২০১৫

গ্রীসের ভাগ্য ইইউ নেতাদের হাতে

গ্রীস কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন। ঋণদাতাদের সঙ্গে কোন চুক্তির পক্ষে পার্লামেন্টে বড় সমর্থন পেলেও চলতি সপ্তাহান্তের শীর্ষ বৈঠকগুলোতে ইইউ নেতাদের মন জয় করতে ব্যর্থ হলে দেশটি ইউরোজোন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। দেউলিয়া হয়ে পড়া গ্রীসকে পাঁচ বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো বেইলআউট হিসাবে হাজার হাজার কোটি ইউরো দেয়ার প্রশ্নে আলোচনা শুরু করা হবে, না দেশটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে আর্থিক দিক দিয়ে ভেঙ্গে পড়বে, ইউরোজোন নেতাদের তখন সেই সিদ্ধান্ত অবশ্যই নিতে হবে। খবর এএফপি, গার্ডিয়ান, টেলিগ্রাফ ও ইয়াহুনিউজের। চলতি সপ্তাহের শীর্ষ বৈঠককেই গ্রীসের ভাগ্য নির্ধারণের সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এর আগে গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপরাসের সরকার সীমিত ঋণ মওকুফের প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে ঋণদাতাদের আরও কৃচ্ছ্রমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবির কাছে নতিস্বীকার করে। ফ্রান্সের সমর্থন নিয়ে তিনি ৫,৩০০ কোটিরও বেশি ইউরোর নতুন এক বেইলআউট নিয়ে আলোচনার ভিত্তি হিসেবে অর্থনেতিক ও কর সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন। তিন বছর ধরে এ সহায়তা দেয়া হতে পারে। ঋণদাতাদের আরোপিত কঠোর কৃচ্ছ্রনীতির শর্তাদির মাত্র পাঁচ দিন আগে গ্রীকরা গণভোটে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। শনিবার ভোরের দিকে গ্রীক পার্লামেন্ট সিপরাসের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। তার নিজ দলীয় এমপিদের কারও কারও বিদ্রোহ সত্ত্বেও ৩০০ এমপির মধ্যে ২৫০ জন চলতি সপ্তাহান্তে আলোচনা করতে সিপরাসকে সমর্থন দেন। ইইউ সূত্রে বলা হয়, গ্রীক কর্মসূচীর ইতিবাচক মূল্যায়ন করা হয়েছে। শুক্রবার গ্রীসের তিন ঋণদাতা ইউরোপিয়ান কমিশন, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি) এবং আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) বিশেষজ্ঞরা দেশটির পেশ করা অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে। এসব প্রস্তাবই হবে গ্রীসকে যে কোন ঋণ দেয়ার শর্ত। ওয়াকিফহাল এক ব্যক্তি জানান, ইইউ ও আইএমএফ কর্মকর্তারা এক নতুন বেইলআউটের জন্য গ্রীসের অনুরোধের এক ইতিবাচক প্রাথমিক মূল্যায়ন ইউরো জোন সরকারগুলোর কাছে পেশ করেছে। এটি ব্রাসেলসে ইউরোজোন অর্থমন্ত্রীদের আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে। গ্রীসের ঋণসঙ্কট নিরসনের আশা দেখা দেয়ায় ইউরোপের শেয়ার ও বন্ড বাজারে আনন্দ-উল্লাস দেখা যায়। কিন্তু গ্রীসকে শনিবার ইউরোগ্রুপ মন্ত্রীদের ওই জরুরী বৈঠক এবং সম্ভবত রবিবার ইইউর ২৮ নেতার পূর্ণাঙ্গ শীর্ষ বৈঠকের মুখোমুখি হতে হবে। ইইউর ওই সূত্রে বলা হয়, কিন্তু গ্রীসের পরিকল্পনা নিয়ে ঋণদাতাদের মূল্যায়ন ইউরোজোন অর্থমন্ত্রীদের সমিতি ইউরোগ্রুপের বৈঠকে অনুমোদিত হওয়ার মাত্র ৫০-৫০ ভাগ সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ এথেন্সকে যে কোন ঋণ মওকুফের সুবিধা দেয়ার বিরোধী জার্মানির মতো কট্টরপন্থীরা এতে বাধা দেবে। অর্থমন্ত্রীরা ইউরোজোন নেতাদের রবিবারের বৈঠকের জন্য একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন। ওই দিন পরে ইইউর ২৮টি সদস্য রাষ্ট্রের সরকারপ্রধানের এক জরুরী শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে আলোচনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক শীর্ষ ব্যাংকার বলেন, কোন চুক্তি হওয়ার এখন শতকরা ৯০ ভাগ সম্ভাবনা রয়েছে। ফরাসী অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক টিমের পর্দার অন্তরালে হস্তক্ষেপ এবং ওয়াশিংটনের জোর কূটনৈতিক তৎপরতার ফলেই এটি সম্ভব হচ্ছে। ইউরোজোন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হাত থেকে গ্রীসকে বাঁচাতে এক নতুন বেইলআউটের বিনিময়ে বামপন্থী সিপরাস ইইউর অন্যান্য সরকারপ্রধানদের উদ্দেশে কয়েক ক্ষেত্রে সংস্কার সাধনের প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সংস্কার পরিকল্পনাই পার্লামেন্টে ২৫১-৩২ ভোটে অনুমোদিত হয়। ক্ষমতাসীন সিরিজা পার্টির কয়েক সিনিয়র সদস্যসহ আটজন ভোটদানে বিরত থাকেন। তার সর্বশেষ প্রস্তাবগুলোতে তিনি পেনশন সংস্কার, বিক্রয় কর বৃদ্ধি ও বড় বড় উৎপাদন মাধ্যম বিরাষ্ট্রীয়করণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঋণদাতাদের দাবি মেনে নেন।
×