ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কার্ডিফে ইংলিশদের দাপট

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১১ জুলাই ২০১৫

কার্ডিফে ইংলিশদের দাপট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কার্ডিফে এ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে চলছে ইংলিশদের দাপট। জো রুটের দারুণ সেঞ্চুরির সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে ৪৩০ রান করার পর স্বাগতিকরা অস্ট্রেলিয়াকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ৩০৮ রানে। ১২২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করছে এ্যালিস্টার কুকের দল। ৫ উইকেটে ২৫৪ রান নিয়ে শুক্রবার নিজেদের প্রথম ইনিংসের খেলা শুরু করে অসিরা। জেমস এ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডদের বোলিং তোপে ৫৪ রান তুলতে বাকি ৫ উইকেট হারায় অতিথিরা। ব্যাট হাতে কেউ-ই সুবিধা করতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের একমাত্র হাফসেঞ্চুরি ক্রিস রজার্সের। মাত্র ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরিবঞ্চিত হলেও ঠিকই রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান এই ওপেনার। টেস্টে টানা সাত ইনিংসে সাতটি হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়ে বিশ্বরেকর্ড স্পর্শ করেছেন রজার্স। এভার্টন উইকস, এ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, শিবনারায়ণ চন্দরপল ও কুমার সাঙ্গকারা এর আগে একই কীর্তি গড়লেও একটি জায়গায় ব্যতিক্রম অসি ব্যাটসম্যান। প্রথম ওপেনার হিসেবে টানা সাত টেস্টে হাফসেঞ্চুরি বা তার উর্ধ ইনিংস খেললেন রজার্স। সাউথ ওয়েলসের ৩৭ বছর বয়সী সেঞ্চুরির খরা কাটাতে গিয়েও পারলেন না। নার্ভাস নাইনটিজেই ফিরে গেলেন, যেভাবে এ বছরের প্রথম সপ্তাহে ভারতের বিরুদ্ধে সিডনি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফিরে গিয়েছিলেন ৯৫-এ। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন বিকেলেই ইংলিশ পেসার মার্ক উডের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল তাঁর ব্যাটের কানা ছুঁয়ে যখন কিপার জস বাটলারের গ্লাভসে আশ্রয় নেয় তখনও তিনি ৯৫-এ! ইংল্যান্ডের ৪৩০-এর জবাবে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথরা সমর্থকদের খুশি না করেই ফিরে যাওয়ার পর রজার্স ও মাইকেল ক্লার্ক হাল ধরেছিলেন। জেমস এ্যান্ডারসন, ক্রিস ব্রডরা অবশ্য বেশ চাপেই রেখেছিলেন তাঁদের। মার্ক উড ও মঈন আলিরা পরে বল করতে এসে সেই চাপটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ তেমন চাপটা ইংল্যান্ডের ওপর প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি অসি বোলাররা। মিচেল জনসনকে গ্যালারি থেকে দুয়ো শুনতে হয়েছে। অসি পেসার সকালে যাও বা একটা উইকেট প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন, তাও টিভি আম্পায়ার নাকচ করে দেন বল ফিল্ডারের হাতে যাওয়ার আগে মাটিতে পড়ে যাওয়ায়। মিচেল স্টার্ক অবশ্য পাঁচ উইকেট নিয়েই বোলিং শেষ করেন। প্রথম দিন ইংল্যান্ডকে টেনেছিলেন জো রুট, দ্বিতীয় দিন সেই দায়িত্বটা নেন মঈন (৭৭)। লাঞ্চের আগ পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডকে শক্ত অবস্থানের দিকে নিয়ে যান, সেখানেই ঘাম ছুটছে অসি ব্যাটসম্যানদের। এ্যাশেজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়াকে চাপে রাখলেও ইংল্যান্ড অধিনায়ক কিন্তু চাপে পড়ে গেছেন সিøপে স্টিভ স্মিথের ব্যাট হয়ে আসা বল আটকাতে গিয়ে! জেমস এ্যান্ডারসনের আশি মাইলের উপরে গতির বল স্মিথের ব্যাট ছুঁয়ে সোজা এ্যালিস্টার কুকের কুচকিতে গিয়ে লাগে। প্রচ ব্যথায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যখন ছটফট করছেন কুক, তখন তাঁর পাশে বসা রুটের হাসির ছবি নিয়ে ইংলিশ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে সমালোচনার ঝড় ওঠে! মাইকেল ক্লার্ক (৩৮) যখন মঈন আলির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তখন অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডে ২০৭/৪। এখান থেকেই এ্যাডাম ভোগসকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই শুরু শেন ওয়াটসনের। সোফিয়া গার্ডেনের পাটা উইকেটে মাটি কামড়ে পড়ে থাকলে যে রান আসে, টি-ব্রেকের বিরতিতে টিভি বক্সে বসে রিকি পন্টিং, ইয়ান বোথামরাও সেটি বলছিলেন। কিন্তু মন্ত্র মেনে এগোতে শুরু করলেও কিছুক্ষণ পরই ভোগস এক্সট্রা কভারে এ্যান্ডারসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তখন থেকেই অশনি সঙ্কেত অস্ট্রেলিয়ার। শেষদিকে হ্যাডিনের ২২ ব্যবধান কমায় মাত্র। এ্যাশেজ চলবে আর বাজে উদাহরণ থাকবে না, তা হয়? মিচেল জনসনের সঙ্গে ইংলিশ দর্শকদের সম্পর্ক নিয়ে গল্পও কম নয়। এবারের এ্যাশেজ শুরু হতে না হতেই দেখা যাচ্ছে মিচেল জনসন বনাম ইংলিশ দর্শকদের লড়াই আবার জমে উঠেছে! বৃহস্পতিবার সকালে জনসন যখন ওভার শেষ করে ফাইন লেগে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেখানকার দর্শকরা উঠে দাঁড়িেেয় হাততালি দিতে শুরু করেন। কারণ, ততক্ষণে যে জনসনের ‘সেঞ্চুরি’ হয়ে গেছে। ১০০ রান দিয়ে ফেলেছেন কোন উইকেট না নিয়ে। জনসনকেও দেখা যায় টুপি খুলে দর্শকদের উদ্দেশে দেখাতে। ঠিক কী বলতে চেয়েছিলেন অসি ফাস্ট বোলার, তা অবশ্য পরিষ্কার হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২৫ ওভারে ১১১ রান দিয়ে উইকেট পাননি জনসন।
×