ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১০ জুলাই ২০১৫

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ যত কেনাকাটা, ততোই বাকি! ঈদে এই হয়। এই হচ্ছে। প্রথম রোজা থেকে শপিং শুরু করে দিয়েছিলেন রাজধানীবাসী। আর আজ শুক্রবার ২২ রমজান। কেনাকাটা চলছেই। বর্ষার কাল। যখন তখন আকাশ ভেঙে পড়ছে। তবু ঘরে বসে নেই এমনকি নারীরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে শপিং। বৃহস্পতিবারের কথাই ধরা যাক, সূর্যের মুখ একবারটি দেখা গেল না। কখনও ভারি বর্ষণ। কখনও ইলশেগুঁড়ি। তবু মার্কেট ঘুরে বেড়িয়েছে মানুষ। পছন্দের কেনাকাটা করেছে। তাঁদের দেখে মনে হয়েছে, চাঁদ ওঠে গেছে। কাল ঈদ! এরই মাঝে শেষ করতে হবে কেনাকাটা। সেই তোড়জোড় চলছিল বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির শহর ঢাকার প্রতি প্রান্তে। একইসঙ্গে দেখা গেছে বাড়ি ফেরার তারা। অনেকে কর্মস্থল ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। আর বড় অংশটি নিচ্ছে প্রস্তুতি। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হয়ে গেছে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিক্রি শুরু হয়। আগের রাতে কাউন্টারের সামনে অবস্থান নেন অসংখ্য মানুষ। সকালে টিকেট প্রত্যাশীদের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। প্রথম দিন দেয়া হয় ১৩ জুলাইয়ের টিকেট। আজ শুক্রবার ছাড়া হবে ১৪ জুলাইয়ের টিকেট। শনিবার ১৫ জুলাইয়ের, রবিবার ১৬ জুলাইয়ের এবং সোমবার ১৭ জুলাইয়ের টিকেট পাওয়া যাবে। কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক সীতাংশু চক্রবর্তী অবশ্য আশ্বস্ত করে বলেছেন, প্রতিবছরই ঈদে টিকেটের চাহিদা বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে যায়। যাত্রীরা টিকেট সংগ্রহের জন্য গলদঘর্ম হন। তবে কারও বাড়ি ফেরা আটকে থাকে না। এবারও সবাই ঈদে বাড়ি যাবেন। কেউ বাদ থাকবেন না। সাধ্য সীমিত হলেও সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ঢাকার ফুটপাথ বহু আগেই দখলে নিয়েছে হকাররা। এখন হাঁটার প্রায় সবগুলো পথে বসেছে ঈদ বাজার। সীমিত আয়ের মানুষ এসব জায়গা থেকে কেনাকাটা করছেন। পাশাপাশি এ-ও সত্য যে, ফুটপাথ দখল হয়ে যাওয়ায় নগরবাসীর ভোগান্তি বেড়েছে। গাড়ির চাকা ঘুরে না। যানজটে স্থবির শহর। হাঁটার পথটিও বেদখল হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ খুবই ত্যক্তবিরক্ত। এ অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে উচ্ছেদ অভিযান। বৃহস্পতিবার নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাথে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ভ্রাম্যমাণ আদালতের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ অভিযান চলে। বিকেলে নিউমার্কেট ওভারব্রিজের নিচ থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে এ অভিযান। তবে উচ্ছেদ অভিযান শেষ হতে না হতেই আগের চেহারা। চটজলদি যারা ফুটপাথ ছেড়ে পালিয়েছিল, একইভাবে ফিরে আসে তারা। গাউসিয়ায় ঈদের কেনাকাটা করতে আসা স্কুল শিক্ষিকা আফিয়া বললেন, কিছু কেনাকাটা গাউসিয়া বা নিউ মার্কেট থেকে না করলেই নয়। এ কারণে এখানে এসেছি। অথচ কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই। ফুটপাথজুড়ে দোকান। উচ্ছেদ অভিযান চলছে জানানো হলে তিনি হাসেন। বলেন, কত দেখলাম। পুলিশের ঈদ খরচ দরকার আছে না। ওটা হয়ে গেলেই উচ্ছেদ শেষ। এবার একটি খুব আনন্দের খবরÑ মোটামুটি সুস্থ এখন নায়ক রাজ রাজ্জাক। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় দুই সপ্তাহ আগে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী। হাসপাতালের আইসিইউ তে মৃত্যুর সঙ্গে রীতিমতো লড়তে হয়েছে তাঁকে। এমনকি নায়করাজের মৃত্যুর গুজবও ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে সব ভুল প্রমাণিত হয়েছে। মোটামুটি সুস্থ হয়ে ওঠেছেন নায়করাজ। প্রিয় অভিনেতার ছেলে সম্রাট জানিয়েছেন, ৮ জুলাই সন্ধ্যায় তাঁর বাবাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। রাজ্জাক সুস্থ আছেন জানিয়ে তাঁর জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তিনি।
×