ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিপণ আদায়ে কৌশলে আটক॥ ধরা পড়ল ৮ দুর্বৃত্ত

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ৫ জুলাই ২০১৫

মুক্তিপণ আদায়ে কৌশলে আটক॥ ধরা পড়ল ৮ দুর্বৃত্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অপহরণের দু’দিনের মাথায় উদ্ধার করা হয়েছে বংশালের তরুণ ইমরান হোসেনকে। একই সঙ্গে আটক করা হয় অপহরণকারী চক্রের ৮ সদস্যকে। মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের জন্য কৌশলে পুরানো ঢাকার একটি বহুতল ভবনে আটক রেখে উপর্যুপরি হুমকি দেয়া হতো ইমরান হোসেনের পরিবারকে। কিন্তু র‌্যাবও অপহরণকারীদের আস্তানায় হানা দিয়ে আটজনকে হাতে-নাতে ধরে ফেলে। জানা যায়, র‌্যাবের ঝটিকা অভিযানে জীবন ফিরে পাওয়া এই সৌভাগ্যবান তরুণ রাজধানীর ১৩/১ গোলাম মোস্তফা লেন, বেচারাম দেউরীর আসলামের ১৮ বছরের ছেলে ইমরান হোসেন। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে ফুলের টবের জন্য মাটি সংগ্রহ করতে বাসার বাইরে যান। বাসার কাছে সাত রওজা এলাকায় হাবিব টাওয়ারে যাবার পর মোঃ সাইদ হোসেন রনি (২২) নামের এক যুবক তাকে ছাদে নিয়ে যায়। বংশাল থানাধীন ৯২ আগাসাদেক রোডে নির্মাণাধীন হাবিব টাওয়ার ভবনের ৮ম তলায় নেয়ার পরই তাকে আটকের ঘোষণা দেয়। তুই আর যেতে পারবি না। তোর বাবাকে টাকা নিয়ে আসতে ফোন কর- এই কথা বলেই ইমরানকে মেশিন রাখার কক্ষে আটক করা হয়। ওই কক্ষে ঢুকিয়েই তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। তারপর চলে তার বাবার সঙ্গে দেন দরবার। এদিকে ইমরানের পিতা-মাতা অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে অস্থির। এতে তার চাচা মোঃ আতিকুর রহমান বংশাল থানায় পরদিন একটি নিখোঁজ জিডি করেন যার নং-৯৩। এ অবস্থায় তার চাচা র‌্যাব-১০, লালবাগ ক্যাম্পে গিয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। ওই সময় ০১৭২৯৫৪৮৩০৩ ও ০১৭৮৯৯২৯৯১ নম্বর থেকে ইমরানের পিতার মোবাইল ফোনে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণ না দিলে ছেলেটিকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়। এ ঘটনাও র‌্যাবকে জানানো হয়। এতে র‌্যাব নতুন কৌশলে তথ্য প্রযুক্তি প্রয়োগ করে অভিযান চালায়। শুক্রবার কেরানীগঞ্জ থানাধীন জিঞ্জিরা ফেরিঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের সদস্য রনিকে কৌশলে আটক করে র‌্যাব। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বংশাল থানাধীন পাকিস্তান মাঠ এলাকা থেকে আটক করা হয় মোঃ ইমরান হোসেন (২২), মোঃ নুরুল ইসলাম রবিন (২০), মোঃ আব্দুল্লাহ রাহিম সবুজ (২১), মোঃ জুয়েল মিয়া (২২), মোঃ গোলাম হোসেন রাকিব (২০), পিতা-মোঃ আব্দুল মজিদ, মোঃ তানজিদ সিকদার প্রান্ত (২০), মোঃ বাপ্পিকে (২০)। পরে তাদের নিয়ে হাবিব টাওয়ারের নিচ তলা থেকে অপহৃত ভিকটিম ইমরান হোসেনকে উদ্ধার করা হয়। কোরীয় নাগরিক আটক ॥ এদিকে বিদেশী মদ ও বিয়ারসহ একজন কোরীয় নাগরিক এবং তার দুই সহকারীকে আটক করে র‌্যাব। বনানীর সুরা রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে ১০৮ ক্যান বিদেশী বিয়ার ও ৯৬ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানের মালিক জি.এন পার্ক নামে কোরীয় নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত জি.এন পার্কের কাছে তার প্রতিষ্ঠানে রক্ষিত বিয়ার ও বিদেশী মদ সংক্রান্ত লাইসেন্স দেখতে চাইলে তিনি লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হন। গ্রেফতারকৃত আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি প্রায় ৩০ বছর যাবত বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। ৬-৭ বছর আগে রেস্টুরেন্ট ব্যবসার লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও অধিক মুনাফা লাভের আসায় মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরও জানান, বিদেশী নাগরিক হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন কৌশলে তিনি এগুলো সংগ্রহ করেন। এছাড়াও জি.এন পার্ককে মাদক বিক্রয়ের সহায়তা করার জন্য রেস্টুরেন্টের কর্মচারী সুব্রত (২৫) ও মেহেদিকে (১৯) আটক করা হয়।
×