ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অর্থায়ন করবে না ইউএনডিপি

বান্দরবানে বন্ধের পথে ৮৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৫ জুলাই ২০১৫

বান্দরবানে বন্ধের পথে ৮৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান, ৪ জুলাই ॥ প্রকল্প শেষ হওয়ায় বান্দরবানে ইউএনডিপির অর্থায়নের ৮৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পথে, ফলে শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হচ্ছে জেলার ৫ হাজার ১৪১ শিশু শিক্ষার্থীকে। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম মৌলিক শিক্ষা সহায়তাদান প্রকল্পের আওতায় ২০০৮ সালে শিশু শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষাদানের জন্য প্রকল্প শুরু করে দাতা সংস্থা ইউএনডিপি। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে শুরু করে শিক্ষা কার্যক্রম কিন্তু চলতি বছরের জুন মাসে এই প্রকল্প শেষ হয়। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন করে ইউএনডিপির অর্থায়ন না করলে ঈদের ছুটির পর স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য আর খোলা হবে না, বন্ধ হয়ে যাবে চিরতরে। ফলে শিক্ষার্থীর শিক্ষা বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি বেকার হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষকরা। আরও জানা গেছে, জেলার উপজেলাগুলোর যেসব এলাকায় সরকারী প্রাথমিক স্কুল নেই সেসব এলাকার স্থানীয়দের সম্পৃত্ত করে ইউএনডিপির অর্থায়নে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। পার্বত্য চট্টগ্রাম মৌলিক শিক্ষা সহায়তাবান প্রকল্পের আওতায় বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, আলীকদম ও থানছি উপজেলায় এ শিক্ষা কার্যক্রম চলে আসছে। শিশু শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। উক্ত বিদ্যালয়গুলোতে ৫ হাজার ১৪১ জন শিশু শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে আর প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন ১৯৩ জন শিক্ষক। ইউএনডিপির সদ্য বিদায়ী শিক্ষা অফিসার পংকজময় ত্রিপুরা বলেন, এমনিতেই জেলায় সরকারী স্কুল কম, তারপরও এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার কারণে শিক্ষা বঞ্চিত হবে শিশুরা। এদিকে ইউএনডিপির প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে মূলত পাহাড়ের পিছিয়ে পড়া আদিবাসী শিশুরা শিক্ষা গ্রহণ করে। আর এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় বছরের মাঝ পথে এসে এসব শিশুরা নতুন করে কোথায় শিক্ষা গ্রহণ করবে এ নিয়ে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠার শেষ নেই। বান্দরবানের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল আজম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হলে পাহাড়ের শিক্ষা কার্যক্রমে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে। বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন দাতা সংস্থা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করলেও তারা দীর্ঘমেয়াদি কাজ না করার কারণে পাহাড়ে তাদের অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল পায় না স্থানীয়রা, এমন মত স্থানীয়দের। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা বলেন, নতুন অর্থবছরে অর্থ বরাদ্দ না থাকার ফলে স্কুলগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম অব্যাহত রাখতে জেলা পরিষদ ইউএনডিপির ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ রক্ষা করছে। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের জুন মাসে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় কৈননিয়া নামক একটি উন্নয়ন সংস্থা শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়।
×