ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আইএস প্রতিরোধ

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৫ জুলাই ২০১৫

আইএস প্রতিরোধ

দুই নারীর শিরুচ্ছেদ করে আবারও বর্বরতার পরিচয় দিয়েছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে সংগঠনটি পুনরায় প্রমাণ করল মধ্যযুগীয় ধ্যানধারণার বশবর্তী হয়ে তারা মানব হত্যাযজ্ঞে নেমেছে। সময় ও সভ্যতার বিপরীতে চলা এসব কর্মকা- শুধু কাপুরুষোচিতই নয়, নিন্দনীয়ও বটে। গত মাসের শেষ সপ্তাহে সিরিয়ার দেইর আল-জর ও আল মায়াদিনর নামের দুই শহরে এ বীভৎস ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে ওই দুই নারীর স্বামীদেরও শিরñেদ করা হয়। দুই নারীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আইএস উত্থাপন করেছে তা শুধু হাস্যকরই নয়, তাদের কূপম-ূকতা কতখানি তার বহির্প্রকাশও ঘটেছে এতে। দুই নারী নাকি জাদুবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। এটা আইএসের জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল কিনা তা জানা যায়নি। বিজ্ঞানের চরম বিকাশের এ যুগে জাদুবিদ্যার মতো অবৈজ্ঞানিক ও কুসংস্কারপূর্ণ একটি বিষয়কে তারা বিশ্বাস করে প্রাণহানি ঘটিয়ে মূর্খতার পরিচয় তো দিয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক হলোÑ এই প্রথম জঙ্গী গোষ্ঠীটি কোন নারীর শিরñেদ করল। এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে নাÑ চলমান সময়ে নৃশংসতা ও সহিংসতার অপর নাম আইএস। এরই মধ্যে ২৯ জুন তারা পার করেছে দুই বছর। দুই বছরের ইতিহাস হাজার হাজার নিরীহ মানুষের নৃশংস হত্যাকা-ের কালো অধ্যায়। যে নিহতদের তালিকায় রয়েছে তাদের স্বধর্মী মানুষ ও শিশুদের নাম। নিহতদের সিংহভাগই বেসামরিক লোকজন। একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, আইএস এখন বিশ্বশান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ। মানবতার বিরুদ্ধে এক মূর্তিমান আতঙ্ক। অনেক দেশে কমবেশি এর ক্ষমতার জাল বিস্তার করার চেষ্টা করছে। ইরাক-সিরিয়ার একটা বড় অংশ দখলের পর মিসর, লিবিয়া ইয়েমেন, পাকিস্তানে তাদের সমর্থক ও সহযোগীদের মাধ্যমে উপস্থিতির বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এটা এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, তারা প্রধানত রাজনৈতিক, সামরিক দুর্বলতার সুযোগ নেয়। রাষ্ট্র হিসেবে ব্যর্থতার বিষয়টিও তাদের কাছে মোক্ষম অস্ত্র। বিশেষত কম বয়সী তরুণ-তরুণীকে মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে তাদের দলে টানছে। তাদের সমর্থক ও সহযোগী হিসেবে এদেশের কিছু বিপথগামী তারুণ্যের সংশ্লিষ্ট হওয়ার খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। গণমাধ্যমের খবরানুযায়ী, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে তৎপর। তারা এ বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে সজাগ থাকবে এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করা যায়। সম্ভাবনাময় তারুণ্য যেন জঙ্গীদের দখলে না যায় সেটাও নিশ্চিত করা দরকার। এ প্রসঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, আইএসবিরোধী জোটের সাফল্য খুব একটা বেশি নয়; যা হতাশার উদ্রেক করে। এ মুহূর্তে বড় প্রয়োজন এই অপশক্তির নেপথ্য মদদদাতা কারা তা চিহ্নিতকরণ ও তাদের মোকাবেলা করা। বিশ্বের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন দেশ ও শক্তিগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ঐক্য ও সহায়তাও গুরুত্বপূর্ণ।
×