ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গরুর কান, লেজ ও চামড়া থেকে কুকুরের খাদ্য তৈরি ॥ রফতানি হচ্ছে বিদেশে

প্রকাশিত: ০৭:১২, ৪ জুলাই ২০১৫

গরুর কান, লেজ ও চামড়া থেকে কুকুরের খাদ্য তৈরি ॥ রফতানি হচ্ছে বিদেশে

বিকাশ চৌধুরী, পটিয়া থেকে ॥ গরুর কান, লেজ, চামড়া ও বর্জ্য থেকে তৈরি হচ্ছে কুকুরের খাদ্য। রফতানিমুখী এই খাদ্য তৈরি বাংলাদেশে প্রথম। কারখানাটি গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামের পটিয়া বিসিক শিল্প নগরীর ৩ নম্বর সড়কে। উদ্যোক্তা জাপানের কয়েকজন। এজন্য বিনিয়োগ করা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। রিভার্ড বাংলাদেশ লিমিটেড নামের এই প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে। ফলে পটিয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সম্ভাবনাময় এই শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে গরুর জবাইকৃত চামড়া, কান, লেজ ও বর্জ্য। বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়ায় প্রতিবছর কোরবানিতে লাখ লাখ গরু জবাই করা হয়। গরুর এইসব চামড়া এতদিন দেশের ট্যানারিগুলোতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। বর্তমানে কুকুরের খাদ্য তৈরিতে ব্যবহার করার ফলে বিক্রেতারা চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে আশা করেন। তেমনি কুকুরের খাদ্য তৈরির কারখানায় গরুর চামড়াসহ অন্যান্য অংশ কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে সহজ হবে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ১৯৮০ সালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরাকান মহাসড়কের পটিয়া শ্রীমাই ব্রিজের দক্ষিণাংশে বাংলাদেশ শিল্প ও কুটিরশিল্প কপোরেশন (বিসিক) পটিয়া জোনে নতুন করে গড়ে তোলা হয়েছে কুকুরের রফতানিযোগ্য খাদ্য কারখানা। এই শিল্প নগরীতে রয়েছে আন্তর্জাতিকমানের রফতানিমুখি আরেফিন গার্মেন্টসসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। যা দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কুকুরের খাদ্য তৈরি কারখানা বাংলাদেশে এই প্রথম হলেও চীন, জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কুকুরের খাদ্য তৈরির কারখানা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। তবে সাম্প্রতিককালে পরিবেশ দুষণের কারণে চীনসহ কয়েকটি দেশে কারখানা বন্ধ করে দেয়ায় বাংলাদেশে এই কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। ফলে বিদেশে কুকুরের খাদ্য রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পটিয়া বিসিক শিল্প নগরীতে জাপানীদের উদ্যোগে এই শিল্প প্রতিষ্ঠান হলেও এখানকার ৫টি রাস্তারই বেহাল অবস্থা। বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে এখানকার শ্রমিকদের প্রতিদিন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। কুকুরের খাদ্য তৈরি কারখানার ম্যানেজার শামনুর রহমান সাকিব বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম গরুর চামড়া, লেজ, কান ও বর্জ্য দিয়ে কুকুরের রফতানিমুখী খাদ্য তৈরি হচ্ছে। এই কারখানার চেয়ারম্যান জাপানী দাইসুকি কাওয়াগুচি ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর তানাকা সুটুমো। বিশ্বের কোরিয়া, জাপান ও ইউরোপের কয়েকটি দেশে কুকুরের খাদ্য তৈরির কারখানা রয়েছে। বাংলাদেশে গরুর চামড়া জুতা, ব্যাগ, হাত ঘড়িসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করলেও চামড়ার উচ্ছ্বিষ্ট বা বর্জ্য ফেলে দেয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে তা প্রক্রিয়াজাত করে বিদেশী কুকুরের খাদ্য হিসেবে রফতানি করা হচ্ছে।
×