ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে ইফতারিতে বিষাক্ত রাসায়নিক

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৪ জুলাই ২০১৫

চট্টগ্রামে ইফতারিতে বিষাক্ত রাসায়নিক

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের ইফতারসামগ্রীতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল। বাসি ছোলা ধুয়ে পরের দিনের রান্না করা ছোলার সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। জিলেপি ও মিষ্টিতে ব্যবহার হচ্ছে অতিমাত্রায় সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইট (হাইড্রোজ)। কাবাব, পেঁয়াজু, বেগুনি ও অন্যান্য ইফতারসামগ্রীতে ব্যবহার হচ্ছে খাওয়ার অনুপযোগী তেল। মিষ্টিজাতীয় খাবারে চিনির পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে সোডিয়াম সাইক্লামেট (ঘন চিনি)। নিরাপদ ইফতারি নিশ্চিত করতে চট্টগ্রামে মাঠে নেই কোন তদারকি সংস্থা বা মনিটরিং সেল। খাদ্যে ভেজাল ও দ্রব্যমূল্যে উর্ধগতি ঠেকাতে রমজানের শুরু থেকেই চট্টগ্রামে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। রমজানের বিভিন্ন সময় চট্টগ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জব্দ করা হয় ভেজাল সেমাই, মেয়াদোত্তীর্ণ ভোজ্যতেল, কিসমিস, খেজুরসহ নানা খাদ্যপণ্য। তাদের অভিযানে আইকা, গাম ও কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি বাঘাবাড়ী হাজার কেজি ঘি আটক করা হয়। কিন্তু বাহারী ইফতারির ভেজাল রোধে এখনও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাছাড়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনও (চসিক) এ বিষয়ে এখনও কোন অভিযান পরিচালনা করেনি। জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফর রহমান বলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আমরা চট্টগ্রামের সর্বত্র অভিযান পরিচালনা করেছি। ইফতারির ভেজাল রোধে আমরা শিগগিরই মাঠে নামব। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চসিক এলাকার নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি দেখভাল করেন খোদ চসিক। চসিকের আওতাভুক্ত এলাকায় ফুটপাথে কোন খাবারের দোকান খুলতে হলে চসিকের অনুমোদন নিতে হয় এবং কর আদায় করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে চসিকের অনুমোদন ছাড়াই নগরীর বিভিন্ন ফুটপাথে আগাছার মেেতা গজিয়েছে শতাধিক অস্থায়ী দোকান। ফুটপাথের এসব দোকানে নিম্নমানের ইফতারি বিক্রি করা হয়। যা নিয়ে কোন ধরনের নজরদারি নেই চসিকের। যোগাযোগ করা হলে চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিয়া শিরীন বলেন, ফুটপাথে ইফতারির দোকান দেয়া আইনত দ-নীয়। পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, ব্র্যান্ড খাবারের দোকানগুলো ফুটপাথে ইফতারির পসরা সাজিয়েছেন। ফুটপাথে এ ধরনের কোন কাজ করলে চসিকের অনুমোদন নিয়ে করতে হয়। ব্যবসায়ীরা মনে হয় তা জানে না। ]চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ইফতারি তৈরিতে পোড়া তেলের লাগামহীন অপব্যবহারের পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে। তিনি বলেন, ইফতারে ব্যবহৃত প্রতিটি খাবারই নিরাপদ হতে হবে। দেশে খাদ্যে ভেজালের মাত্রা বেড়ে গেছে। এ থেকে রক্ষা পেতে মানুষকে ভাল ও সুষম খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। ভাজা ও অনিরাপদ খাবার গ্রহণের ফলে পেটে এসিড, বদহজম ও ডায়রিয়া হতে পারে। এসব খাবার থেকে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
×