ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাহে রমজান

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৪ জুলাই ২০১৫

মাহে রমজান

অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম রফিক ॥ পবিত্র রমজানুল মুবারক আমরা অতিবাহিত করে চলেছি। আজ রমজানুল মোবারকের ১৬তম দিবস। মু’মিন জীবনে অফুরন্ত সাওয়াব ও নৈকট্য লাভের সুযোগ এনে দিয়েছে এ পবিত্র মাস। মহানবী হযরত রাসূলে কারীম (স) ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি এ মাসে কোন নফল ইবাদতের দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রচেষ্টা চালায় সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। এ মাসে দোয়া দরুদ ও যিকিরের ফজিলত অত্যধিক। এ মহান মাস ক্ষমা ও ইস্তিগফারের, তাসবীহ-তাহলীলের, তিলাওয়াত ও রিয়াজতের। প্রিয় নবী (স) বলেছেন- তোমরা ৪টি কাজ রমজান মাসে বেশি বেশি করার চেষ্টা করবে। দু’টি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আর দু’টি কাজ- যা না করলে তোমার উপায় নেই। তন্নধ্যে প্রথম ২টি হলো- কালেমা তাইয়্যেবা ও ইস্তিগফার বেশি বেশি পাঠ করা। অপর ২টি হলোÑ বেহেস্তের প্রত্যাশা এবং দোযখের অগ্নি হতে পানাহ কামনা। অর্থাৎ ঘন ঘন ফরিয়াদ করাÑ ওহে মহামহীম মেহেরবান প্রভু! আমি তোমার কাছে জান্নাতের ভিখারী, আর দোযখের আযাব হতে পানাহ চাই।’ ফজিলতওয়ালা দোয়া শিখাতে গিয়ে মহানবী হুজুর পুর নূর (স) আরও বলেছেনÑ দু’টি পবিত্র কাজ এমন রয়েছে- যা উচ্চারণে অতি সহজ, অথচ (কিয়ামত দিবসে) পল্লায় সে দু’টি হবে বেশ ওজনদার এবং আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছেও অত্যন্ত প্রিয়। তা হলোÑ ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল লাহিল আযিম।’ হাদীস শরীফে আছে, তিনটি আওয়াজ আল্লাহর খুবই প্রিয়। (১) সাউতুত দীকÑ মোরগের আওয়াজ। কেননা মোরগই সকালে তার নিজ ভাষায় আল্লাহর নামে জিকির করে বনি আদমের ঘুম ভাঙ্গায়। ঘরে ঘরে সে আওয়াজ তোলে সুব্বুহুন কুদ্দুস পাক-পবিত্র প্রভুর নামে তাসবীহ নিবেদন করি। (২) আলাহর পছন্দের দ্বিতীয় বিষয়টি হলোÑ কুরআন তিলাওয়াতকারীর আওয়াজ। অন্যত্র বলা হয়েছেÑ সর্বোত্তম (নফল) ইবাদত হলো কুরআন তিলাওয়াত। (৩) সাউতুল লাযী ইয়াদউ বিল আসহারÑ ওই ব্যক্তির আহাজারীÑ যে শেষ রাতে করুণ সুরে আল্লাহকে ডাকে।’ আমরা যেন সাধনা ও নৈকট্য হাসিলের জন্য এ বিষয়গুলো বেছে নিই। দরুদ শরীফের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং বলেছেনÑ ইন্নাল্লাহা ওয়ামালা ইকাতাহু ইউসাল্লুনা আলান নাবী... অর্থ-নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা ও তার ফেরেশতাগণ মহানবীর ওপর দরুদ প্রেরণ করেন। হে ঈমানদার লোকেরা তোমরাও তার ওর অধিক পরিমাণে দরুদ শরীফ পড় এবং ভক্তিপূর্ণ সালাম প্রেরণ কর।’ বলা বাহুল্য, আকায়ে নামেদার (স) এর প্রতি সর্বাধিক ভালবাসা ও মুহব্বত পোষণ করা প্রত্যেক মু’মিন- মুসলমানের ঈমানী দাবি। তার প্রতি দরুদ ও সালাম আরজ করা নিজের ইহ-পরকালে সৌভাগ্য অর্জনের অন্যতম অবলম্বন। বুজুুর্গানে দ্বীন এর মাধ্যমে উচ্চতর মরতবা লাভ করেছেন। পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে অনেকের অশেষ কল্যাণ সাধিত হয়েছে। Ñএমন দৃষ্টান্ত বহু। মাহে রমজানে আমাদের প্রিয়নবী হুজুরে পুর নূর (স) এর ওপর বেশি বেশি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করা আমাদের সকলের কর্তব্য। হযরত স্বয়ং ইরশাদ করেছেনÑ যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ প্রেরণ করে আল্লাহ তার ওপর দশটি রহমত দান করেন, দশটি গুনাহ মাফ করেন এবং দশ ধরনের মর্যাদা নির্ধারিত করেন।’ দোয়া দরুদ ও যিকির আযকারের মাধ্যমে আত্ম গঠনের যে সুবর্ণ সুযোগ মাহে রমজানে এসেছে তা যেন আমরা কেউ হাতছাড়া না করি। আল্লাহ আমাদের সকলকে সুমতি দান করুন। আমীন।
×