ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১২ জঙ্গী তিন দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৪ জুলাই ২০১৫

১২ জঙ্গী তিন  দিনের  রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশের (একিউআইএস) বাংলাদেশ শাখার দুইজনসহ ১২ জঙ্গীকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। গত ১ জুলাই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ জঙ্গীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার র‌্যাব আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মাওলানা মাইনুল ইসলাম ওরফে মাহিন ওরফে নানা ওরফে বদিউল (৩৫) একিউআইএস’র বাংলাদেশ শাখার প্রধান সমন্বয়ক। আর আটক মুফতি জাফর আমিন ওরফে সালমান (৩৪) একিউআইএসের উপদেষ্টাদের একজন। অন্যরা হচ্ছেন, একিউআইএস বাংলাদেশ শাখার সদস্য মোঃ সাইদুল ইসলাম ওরফে সাইদ তামিম (২০), মোঃ মোশাররফ হোসেন (১৯), আব্দুর রহমান বেপারী (২৫), আলামিন ওরফে ইব্রাহিম (২৮), মোঃ মুজাহিদুল আসলাম ওরফে নকীব ওরফে শরীফ (৩১), আশরাফুল ইসলাম রওফে আবুল হাশেম (২০), রবিউল ইসলাম ওরফে হাসান (২৮) ও মোঃ জাবিবুল্লাহ (২৬), মোঃ শহীদুল ইসলাম ওরফে সাগর (২৯) এবং আলতাফ হোসেন ওরফে আল মামুন (২৬)। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও জিহাদী বইপত্র উদ্ধার হয়। র‌্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃতরা এক সময় নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হুজির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তারা আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশের (একিউআইএস) সঙ্গে যুক্ত হতে একত্রিত হয়েছিলেন। ঈদের পর রাজধানীতে ব্যাপক নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিল তারা। কারাগার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্পর্শকাতর স্থান, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ওপর তাদের বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা ছিল। শুধু বাংলাদেশে নয় ভারতেও তারা হামলার চিন্তাভাবনা করছিল। বাংলাদেশ ও ভারতে জঙ্গী হামলার আশঙ্কার কথা জানান ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আল কায়েদা আইএস-এর সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে স্থায়ী ঘাঁটি গাড়ার চেষ্টা করছে। কারাগারে হামলা করে কারাবন্দী শীর্ষ জঙ্গী নেতাদের ছিনিয়ে নেয়াসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যার পরিকল্পনা ছিল তাদের। বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আলাদা ইসলামিক রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিল তারা। প্রসঙ্গত, একিউআইএস জঙ্গী গোষ্ঠীটির তরফ থেকে ঢাকায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা লেখক অভিজিত রায় ও সিলেটে মুক্তমনা ব্লগের আরেক ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ খুন হওয়ার পর হত্যার দায় স্বীকার করে বার্তা দেয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর দারুসসালাম থানায় সন্ত্রাস দমন ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়। শুক্রবার দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ জালাল উদ্দিন ১২ আসামিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক মোল্যা সাইফুল ইসলাম তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গ্রেফতারকৃতরা বাংলাদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হুজির শীর্ষ নেতা মুফতি মওলানা মঈনুদ্দীন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ড্রেনের রড কেটে ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেছিল। এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্পর্শকতার স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা ছিল। আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক ওয়াহিদুল আলম জানান, রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে আসামিদের পক্ষে কোন আইনজীবী ছিলেন না।
×