ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

১২ ওভারেই জিতে গেল প্রোটিয়ারা

বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৪ জুলাই ২০১৫

বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মঙ্গলবার বাংলাদেশে পা রেখে বুধবারই অনুশীলনে ‘ড্রোন ক্যামেরা’ চালিয়ে চমক জাগাতে চেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেরাই চমকে গেল। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আইন অনুযায়ী অনুমতি ছাড়াই আকাশে ‘ড্রোন’ চালাতে গিয়ে ক্ষমাও চাইতে হলো। তবে রবিবার প্রথম টি২০ দিয়ে সিরিজে নামার আগে যে শুক্রবার টি২০ প্রস্তুতি ম্যাচটা হলো, তাতে কিন্তু ঠিকই চমক দেখাল প্রোটিয়ারা। শুধু কী চমক দেখাল, বিসিবি একাদশকে ৯৯ রানে অলআউট করে দিয়ে ১২ ওভারেই ২ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান করে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতে বাংলাদেশকে কী চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিল না? এমন ম্যাচ দেখতে পুরো স্টেডিয়ামে দর্শক ভর্তি হয়ে যায়। টিকেট ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা-বিসিবি একাদশের মধ্যকার টি২০ ম্যাচ দেখার সুযোগ পেয়ে হুড়মুড়িয়ে মাঠে ঢুকতে শুরু করেন দর্শকরা। এ সময় দর্শকরা যে যার মতো বিভিন্ন গেট দিয়ে গ্যালারিতে প্রবেশ করতে থাকেন। কয়েকজন দর্শক ঢুকে পড়েন প্রেস বক্সের নিচের অংশে। সাইড স্ক্রিনের কারণে ওই অংশে বসে খেলা দেখা যাবে না জেনে পাশের রেলিং ডিঙ্গিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ গ্যালারিতে যাওয়ার চেষ্টা করলে তা ভেঙ্গে পড়ে। আর তাতেই আহত হন তিন দর্শক। প্রস্তুতি ম্যাচ প্রস্তুতি নেয়ার মতোই। বিসিবি একাদশের লক্ষ্যই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে আটকানো। তাতে করে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সুবিধা হতো। প্রস্তুতি ম্যাচে হার মানে আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি হওয়া। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে কোনভাবেই আত্মবিশ্বাসে বিন্দুমাত্র চিড় ধরানো গেল না। উল্টো ভালভাবেই সিরিজ শুরু করার জ্বালানি পেয়ে গেল। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে হয়েছে প্রস্তুতি ম্যাচটি। মাঠের উত্তেজনা ও গ্যালারি ভর্তি দর্শক দেখে বোঝার উপায় নেই এটি আসলে প্রস্তুতি ম্যাচ! মনে হয়েছে কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ। টিকেট ছাড়াই খেলা দেখা যাবে! যখনই এমন খবর ছড়িয়ে পড়ল, তখনই ম্যাচ শুরুর আগে দর্শক ছুটে আসেন মাঠে। অল্প সময়ের ব্যবধানে গেটের সামনে হাজার-হাজার দর্শক উপস্থিত হয়ে যান। তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেগ পেতে হয় নিরাপত্তা কর্মীদের। অনেক আশা নিয়ে পুরো স্টেডিয়ামে ভর্তি দর্শকরা বিসিবি একাদশের ক্রিকেটারদের সমর্থন জানান। কিন্তু হতাশই হতে হয়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের পর বিসিবি একাদশের এমন নৈপুণ্য হতাশাজনকই। ইমরুল কায়েস (২৯), শুভগত হোম (১৮) ও সোহাগ গাজী (১৩) শুধু তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেন। ১৮ ওভার ব্যাট করে অলআউট হয়ে যায় বিসিবি একাদশ। বাকিরা ব্যর্থই হন। ডেভিড ওয়েইস একাই ৩ উইকেট নেন। কাইল এ্যাবট ও এ্যারন পানগিসো ২ উইকেট নেন। ১০০ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ডি ককের ৩৫, ভিলিয়ার্সের ২৫, মিলারের অপরাজিত ২০ ও ডুমিনির অপরাজিত ১৭ রানে অনায়াসে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ২ উইকেট যে দক্ষিণ আফ্রিকা হারিয়েছে, সেটি ডি কক ও ভিলিয়ার্স মাঠ থেকে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হওয়াতেই। কিন্তু বাংলাদেশ বোলাররা কোন উইকেট নিতে পারেননি। এতটাই করুণ অবস্থা হয়েছে বিসিবি একাদশের। যেই দুইজনকে পরখ করার কথা, রনি তালুকদার ১ রানে ও সোহাগ ১৩ রান করার পর বল হাতে ২ ওভারে ১৮ রান দিয়েও কোন উইকেট নিতে পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটাররা বরং বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল। বুঝিয়ে দিল ভালভাবেই ‘হোমওয়ার্ক’ করে বাংলাদেশে এসেছে। এবং সব জয় করতেই এসেছে। জেপি ডুমিনি আগেই বলেছেন, ‘আমরা জানি বাংলাদেশকে হারানো সহজ হবে না। খুব কঠিন হবে। আমাদের জন্য সিরিজ শুরু হচ্ছে শুক্রবারই, রবিবার নয়। আমরা জানি প্রস্তুতি ম্যাচ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রস্তুতি ম্যাচকে যতটা সম্ভব কাজে লাগানোর চেষ্টা করব আমরা। প্রস্তুতি ম্যাচে সাধারণত কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়াটাই আমাদের লক্ষ্য থাকে। আমরা অনেকেই লম্বা বিরতির পর ফিরছি মাঠে। কন্ডিশন আর উইকেট বোঝা এবং সেসব নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করব আমরা। নিজেদের পরিকল্পনা ঠিক করা ও ঝালিয়ে নেয়ার বিষয়ও আছে।’ ডুমিনির কথা কাজে লেগেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের পরিকল্পনায় পুরো সফল হয়ে গেল। তাতে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিল। স্কোর ॥ বিসিবি একাদশ ইনিংস ৯৯/১০; ১৮ ওভার (ইমরুল ২৯, শুভগত ১৮, সোহাগ ১৩, রাজ্জাক ৮; ওয়েইস ৩/১৩)। দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস ১০১/২; ১২ ওভার (কক ৩৫ রিটায়ার্ড হার্ট, ভিলিয়ার্স ২৫ রিটায়ার্ড হার্ট, মিলার ২০*, ডুমিনি ১৭*)। ফল ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ উইকেটে জয়ী।
×