ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিলীন হচ্ছে চরকাউয়া বাজার

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ৩ জুলাই ২০১৫

বিলীন হচ্ছে চরকাউয়া বাজার

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নগর সংলগ্ম কীর্তনখোলা নদীর আকস্মিক ভাঙ্গনে পূর্ব প্রান্তের চরকাউয়া খেয়াঘাট ও ফেরিঘাটসহ বাজারের সিংহভাগ বিলীন হয়ে গেছে। এতদিন পশ্চিম তীরের বেলতলা ও চরবাড়িয়া পয়েন্টে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলেও বৃহস্পতিবার ভোরে আকস্মিক ভাঙ্গন দেখা দেয় চরকাউয়া পয়েন্টে। ভোর থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে খেয়াঘাট ও ফেরিঘাটসহ মুদি-মনোহারি, ওষুধের ফার্মেসি, কনফেকশনারি, কাঁচা তরকারির দোকান, মাছের আড়ৎসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে রয়েছে চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ফারুক মজুমদার জানান, ভোর ৫টার দিকে তিনি দোকানে ঘুমন্ত অবস্থায় কম্পন হচ্ছে বলে অনুভব করেন। ভয়ে তিনি দোকান থেকে বের হওয়া মাত্রই দেখতে পান তার দোকানসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সেই থেকে একে একে দুপুর একটা পর্যন্ত ফারুক মজুমদার, হায়দার মজুমদার, রাজ্জাক মজুমদার, আমির হোসেন, হান্নান মজুমদার, পাবেল বেপারী, সাইফুল মজুমদার, পলাশ মজুমদার, সুলতান হাওলাদার, সোহেল রানা, তৈয়ব আলী, নূর আলম, হান্নান আলী, রিয়াজ খান, বশির হাওলাদার, বেলাল হোসেন, খাদেম আলী, আনোয়ার হোসেন, নান্নু মিয়া, রফিকুল ইসলাম, দুলাল মিয়া, কাওসার হোসেন, খলিলুর রহমান, হাবিবুর রহমান, হিরা, আমানত আলী, বাদল মুন্সী ও আঃ রব হালদারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সরিয়ে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি বলেন, ভোরে আকস্মিক ভাঙ্গনে কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহূর্তের মধ্যে খেয়াখাটের পল্টুন, বাজার ও সড়কসহ বিশাল এলাকা নদীগর্ভে দেবে গেছে। বাজারের দোকান রক্ষার চেষ্টা করার অনেকেই সুযোগ পাননি। যারা টের পেয়েছেন তারাও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। বাজার ও বাসস্ট্যান্ড নিয়ে পাকা সড়ক মুহূর্তের মধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে কীর্তনখোলার ভাঙ্গনে উপজেলার চরবাড়িয়ার সড়ক ও বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। সহায়সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে বহু মানুষ। কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় নদীর দুই তীরের বাসিন্দারা চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। আড়িয়াল খাঁতে ফসলি জমি নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর থেকে জানান, আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুরে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত দুই মাসে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙ্গনে সদর উপজেলার একটি ও শিবচর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ি ও ৬৫ একর ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এখনও ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। জানা গেছে, দুই মাসে আড়িয়াল খাঁর ভাঙ্গনে মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়ন ও শিবচরের বহেরাতলা, সন্ন্যাসীরচর ও দত্তপাড়া ইউনিয়ন এখন নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। ভাঙ্গনের কারণে প্রতিদিনই গৃহহীন হচ্ছে নতুন নতুন পরিবার। একদিকে ভাঙ্গন আতঙ্ক, অন্যদিকে অর্থের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন নদী ভাঙ্গন কবলিত দরিদ্র পরিবারের খেটে খাওয়া মানুষ।
×