ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘মৃত্যুর পর অবশ্যই স্বর্গে যাব’

প্রকাশিত: ০৭:১০, ৩ জুলাই ২০১৫

‘মৃত্যুর পর অবশ্যই স্বর্গে যাব’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিফার নির্বাচন যখন হয়, তার আগেই ফিফার দুর্নীতি নিয়ে বিশ্ব চমকে যায়। একের পর এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি যে ছড়িয়ে পড়ছিল। কিন্তু সেই দুুর্নীতির ছোঁয়া নাকি কোনভাবেই সেপ ব্লাটারের গায়ে লাগেনি। ফিফা সভাপতি ব্লাটার নিজেই এমন কথা বলেছেন, তাতেই বোঝা যায় তিনি দুর্নীতি করেননি। বলেছেন, ‘মৃত্যুর পর অবশ্যই আমি স্বর্গে যাব।’ বয়সটা তার ৭৯ হয়ে গেছে। এই বয়সে স্বর্গ-নরকের চিন্তাটা মাথায় আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ব্লাটার এমন একটা সময়ে ‘স্বর্গে’ যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন, যখন ফিফার যাবতীয় কেলেঙ্কারির মুখে সভাপতির পদ থেকে সরেই যেতে হচ্ছে তাকে। কিছুদিন আগে পঞ্চমবারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হয়েও, তার সরে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার অর্থই হচ্ছে সংস্থার যাবতীয় দুর্নীতির দায় কিছুটা হলেও নিজের কাঁধে নেয়া। তবে তিনি দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, কঠিন সময়ে ধর্মবিশ্বাসই ছিল তার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল। জার্মানের এক সাময়িকীতে দেয়া সাক্ষাতকারে ব্লাটার বলেছেন, ‘আমি আমার বিবেকের কাছে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। যে ব্যক্তি তাকে দুর্নীতিবাজ বলে অপবাদ দেবে, সে এই শব্দটার অর্থই জানে না। আমাকে দুর্নীতিবাজ বললে প্রমাণ দিতে হবে। আমি নিশ্চিত, প্রমাণ তারা হাজির করতে পারবে না। কারণ আমি কোন দুর্নীতি করিনি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘ফিফা দুর্নীতিগ্রস্ত হলেই আমি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে যাই না। যারা এটা বলে তাদের বিরুদ্ধে আমার আইনের আশ্রয় নেয়া উচিত।’ এরপরই স্বর্গের বিষয়টি ব্লাটারের কণ্ঠে শোনা যায়। বলেন, ‘কিছুদিন ধরে আমার ধর্মবিশ্বাস আমায় শক্তি জুগিয়েছে। আমি বরাবরেই ধর্ম বিশ্বাসী। নিয়মিত প্রার্থনা করি। পোপ ফ্রান্সিসের দেয়া একটা সোনালি ক্রুশ আমার সংগ্রহে আছে। আমার জীবনাচরণ অনুযায়ী আমি বিশ্বাস করি, মৃত্যুর পর অবশ্যই আমি স্বর্গে যাব।’ এই পর্যায়ে একটি মজার মন্তব্যও ঝরেছে ব্লাটারের কণ্ঠে। বলেছেন, ‘আমি নরকে বিশ্বাস করি না। আমি মনে করি নরক বলে কিছু নেই। ধর্মবিশ্বাসী হলেও এই একটি বিষয়ে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গেও আমার মতবিরোধ আছে।’ আগামী ডিসেম্বর ও মার্চের মাঝে অনুষ্ঠিত বিশেষ কংগ্রেসে পদত্যাগ করতে হবে তাকে। ৭৯ বছর বয়সী তাই এরই মধ্যে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। রবিবার কানাডার নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে দেখা যাবে না তাকে। কারণটা অবশ্য ‘ব্যক্তিগত’ বলেই জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারি, দুর্নীতি ইত্যাদি ফিফাকে বেশ বিপাকেই ফেলেছে। দুর্নীতির অভিযোগে ইতোমধ্যেই শীর্ষ কর্মকর্তাদের হাতে হাতকড়াও পড়েছে। দুনিয়াতেই এই মুহূর্তে প্রশ্ন উঠেছে, বিভিন্ন কেলেঙ্কারি যে সংস্থাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে, সে সংস্থার সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি এসব থেকে আদৌ মুক্ত কি না! অনেকেরই বদ্ধ ধারণা, বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ এই সংস্থার দীর্ঘ সময়ের প্রধান ব্লাটারও অনেক কিছুর সঙ্গে জড়িত। কিন্তু খুব শীঘ্রই সাবেক হতে যাওয়া ফিফা-প্রধান দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই মিথ্যা। নিজের সততা নাকি এমন পর্যায়ে যে ব্লাটার ‘স্বর্গে’ যাওয়ারই অপেক্ষায় আছেন!
×