ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বপ্নপূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ চিলি

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ৩ জুলাই ২০১৫

স্বপ্নপূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ চিলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চিলি এবারসহ পাঁচবার কোপা আমেরিকার ফাইনাল মঞ্চে নাম লিখিয়েছে। আগের চারবারই ফাইনালে হারের বেদনায় জ্বলতে হয়েছে তাদের। শেষবার তারা ফাইনাল খেলেছিল ১৯৮৭ সালে। সেবার উরুগুয়ের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। দীর্ঘ ২৮ বছরের সাধনার পর আবারও দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসরের ফাইনালে উঠে এসেছে চিলি। নিজ দেশে এবার শিরোপা ছাড়া কিছুই ভাবছে না তারা। তবে কাজটি যে সহজ হবে না সেটা ভালমতোই জানা চিলিয়ান ফুটবলারদের। কেননা চূড়ান্ত মহারণে তাদের প্রতিপক্ষ ফেবারিট ও শক্তিশালী আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ সময় শনিবার রাতে কোপার ৪৪তম আসরের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের স্বপ্নে এখন বিভোর চিলি। দলটির অধিনায়ক ও গোলরক্ষক ক্লাউডিও ব্রাভো বলেছেন, আমরা জানি কাজটা (শিরোপা জয়) সহজ হবে না। কিন্তু আমরা ছেড়েও কথা বলব না। আমাদের লক্ষ্য একটাই, দেশবাসীকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেয়া। মজার বিষয় হচ্ছে, ক্লাব দল বার্সিলোনা সতীর্থ লিওনেল মেসির বিপক্ষে খেলবেন ব্রাভো। গত মৌসুমেই তিনি কাতালান ক্লাবে যোগ দিয়েছেন। এক মৌসুমেই মেসির সঙ্গে তার দারুণ সখ্য গড়ে উঠেছে। সেই মেসিকেই ফাইনালে রুখতে গোলপোস্টে দাঁড়াবেন ব্রাভো। দারুণ বিষয় হচ্ছে, দু’জন আবার নিজ নিজ দেশের অধিনায়কও। এখন দেখার, মেসি ও ব্রাভোর এই লড়াইয়ে কে জয়ী হয়। সেমিফাইনালে প্রতিবেশী পেরুকে ২-১ গোলে পরাজিত করে ফাইনালে নাম লিখিয়েছে চিলি। বিজয়ী দলের হয়ে দুটি গোলই করে নায়ক বনে যান এডুয়ার্ডো ভারগাস। এই ফলে ২৮ বছর অর্থাৎ ১৯৮৭ সালের পর কোপার ফাইনাল মঞ্চে উঠেছে চিলি। এখন লক্ষ্য টুর্নামেন্টের ৯৯ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়। স্বাগতিক ফুটবলাররা প্রথমবারের মতো ট্রফি ছুঁয়ে দেখার স্বপ্নে বিভোর। নিজেদের মাটিতে আক্ষেপ ঘোচানোর জন্য মরিয়া হয়ে খেলছেন চিলিয়ান ফুটবলাররা। লক্ষ্য পূরণ থেকে এখন মাত্র এক জয় দূরে জর্জ সামপাওলির দল। আর্জেন্টাইন এই কোচ নিজ দেশকে হারিয়ে চিলিকে শিরোপা উপহার দিতে বদ্ধপরিকর! তিনি বলেন, এখানে (কোপা) আমাদের সাফল্য নেই। এবার শুরু থেকেই ফুটবলাররা শিরোপা জয়ের জন্য খেলছে। ফাইনালে ওঠার পর সবাই প্রতিজ্ঞা। আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যেই ফাইনালে খেলব। মজার বিষয় হচ্ছে, নিজ দেশ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে চিলির হয়ে ডাগআউটে দাঁড়াবেন সামপাওলি। তবে এটা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন তিনি। চিলির কোচ জানিয়েছেন, পেশাদার ফুটবলে আবেগের উর্ধে সবকিছু। এ প্রসঙ্গে সামপাওলির ভাষ্য, আমার দেশ আর্জেন্টিনা। কিন্তু আমি এখন চিলির কোচ। আমার প্রধান কাজ চিলিকে সাফল্য পাইয়ে দেয়া। এটাকে অন্যভাবে নেয়ার কিছু নেই। অন্য কেউ হলেও এমনই করত। সেমিফাইনালে পেরুর বিপক্ষে জোড়া গোল করে নায়ক বনে যান এডুয়ার্ডো ভারগাস। ২৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের ভাবনায় এখন শুধুই শিরোপা। ফাইনাল জিতে প্রথমবারের মতো কোপা জয়ের প্রত্যয়ের কথা শুনিয়েছেন তিনি। শেষ হওয়া মৌসুমটা (২০১৪-১৫) একেবারেই ভাল যায়নি ভারগাসের। ইংলিশ ক্লাব কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের হয়ে ধারে খেলেনি। কিন্তু নিজেকে যেন হারিয়ে ফেলেন চিলিয়ান এই ফুটবলার! ২১ ম্যাচে করেন ৪ গোল। হতশ্রী পারফর্মেন্সের কারণে খেলতেই পারেননি নিয়মিত। সেই ভারগাসের রীতিমতো পুনর্জন্ম হয়েছে কোপা আমেরিকার ৪৪তম আসরে। শেষ চারে তার দুই গোলেই যে প্রায় তিন দশক পর কোপার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে চিলি। শুধু তাই নয়, এবারের আসরে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলে চলেছেন ভারগাস। গ্রুপ পর্বে ইকুয়েডর ও মেক্সিকোর বিপক্ষেও একটি করে গোল করেন। যে কারণে ৪ গোল করে চলমান আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনিই। যে পারফর্মেন্স তাতে টুর্নামেন্টের সেরা হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবে ভারগাসের ভাবনায় আপাতত ফাইনাল, নিজের সেরা হওয়া নিয়ে ভাবছেন না মোটেও। ভারগাস বলেন, আমাদের এখনও আসল কাজ বাকি। এর আগেও আমাদের পূর্বসূরিরা ফাইনালে খেলেছে। কিন্তু হারের ব্যথায় কুঁকড়াতে হয়েছে। আমরা অতীতটা জানি। যে কারণে ফাইনালে উঠে তৃপ্তির ঢেঁকুর ফেলতে চাই না। ফাইনাল জয় না পেলে সব অর্জনই বৃথা। আমরা সবাই ট্রফির জন্য মুখিয়ে আছি। নেপোলির এই ফরোয়ার্ড আরও বলেন, দল হিসেবে আমরা একতাবদ্ধ। সবাই নিজের সেরাটা দিচ্ছে। দেশের মানুষ আমাদের দিকে চেয়ে আছে। তাদের আমরা নিরাশ করতে চাই না। আমি ফাইনালেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।
×