ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দুই বছর পর মাওয়ায় ফের টোল আদায় ॥ ক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৭:৩৩, ২ জুলাই ২০১৫

দুই বছর পর মাওয়ায় ফের টোল আদায় ॥ ক্ষোভ

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ দীর্ঘ দুই বছর টোল ফ্রি থাকা শিমুলিয়া (মাওয়া) লঞ্চ ঘাটের আবার টোল আদায় শুরু হয়েছে। বুধবার থেকে এই টোলে খড়ক চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে এ টোল টার্মিনালে দাঁড়িয়ে না নিয়ে লঞ্চের টিকেটের সঙ্গে আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া শিমুলিয়ায় জেলা পরিষদ টোল আদায় বন্ধ করলেও মাদারীপুর জেলা পরিষদ কাওড়াকান্দি প্রান্তে নিয়মিত টোল আদায় এবং অতিরিক্ত টোল আদায় করেই চলেছে। এতে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি-কাওরাকান্দি-মাঝিকান্দি রুটে চলাচলরত যাত্রীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ৩৩ টাকা লঞ্চ ভাড়ার সঙ্গে দুই টাকা টোল যোগ করে যাত্রীদের নিকট লঞ্চের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৩৫ টাকা। বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক শাজাহান সিরাজ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি মঙ্গলবার লঞ্চ মালিক সমিতির কাছে আসে। বুধবার সকাল থেকেই তা কার্যকর করে লঞ্চ মালিকরা। এই পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে- ঘাটগুলোতে স্বার্থন্বেষী মহলের দৌরাত্ম্য হ্র্রাস, যাত্রীদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ, যাত্রী সাধারণের হয়রানি লাঘব এবং সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে লঞ্চ ঘাটগুলো সরাসরি ইজারা না দিয়ে যাত্রী পারাপারের জন্য লঞ্চের টিকেটের সঙ্গে দুই টাকা ঘাটে প্রবেশ ফি আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যা লঞ্চ মালিক সমিতি আদায় করে শর্ত অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএ-কে পরিশোধ করবে। মাঝিকান্দি, কাওড়াকান্দি ও কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ভিন্ন চিত্র। ওই ঘাটগুলোতে বিআইডব্লিউটিএর টোল আদায়ের পাশাপাশি জেলা পরিষদের লোকজন খাস কালেকশনের মাধ্যমে টোল আদায় করছে। জেলা পরিষদের ৩ টাকা টোলের স্থলে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা করে টোল যাত্রীদের নিকট থেকে আদায় করা হচ্ছে। বরিশাল থেকে আসা ঢাকাগামী লঞ্চযাত্রী আনোয়ার হোসেন জানান, কাড়াকান্দিঘাটে টোল দিতে হয়েছে পাঁচ টাকা, আর লঞ্চে ৩৩ টাকা ভাড়ার সঙ্গে দুই টাকা অর্থাৎ লঞ্চ ভাড়া ৩৫ টাকা পরিশোধ করতে হয়। তিনি আরও বলেন, এতে হয়রানি কমেনি বরং লাভবান হচ্ছে লঞ্চ মালিকরা। এ ব্যাপারে শিমুলিয়া ঘাটের লঞ্চ মালিক সমিতির সুপার ভাইজার মোঃ হাসেম খান বলেন, শিমুলিয় ঘাটে কোন যাত্রী হয়রানি নেই। লঞ্চ ভাড়ার সঙ্গে টোলের দুই টাকাসহ মোট ৩৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এতে কোন প্রকার যাত্রী হয়রানি প্রশ্নই উঠে না । এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইজারা শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার থেকে আমাদের লোকজন কাওড়াকান্দি ও কাঁঠালবাড়ি ঘাটে খাস কালেকশনের মাধ্যমে টোল আদায় করছে। অতিরিক্ত টোল আদায়ের ব্যাপারে বলেন, “এখনই ফোন করে বলে দিয়েছি যাতে জনপ্রতি তিন টাকার বেশি টোল আদায় করা না হয়।” মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সওদাগর মুস্তাফিজুর রহমান জানান, জনগণের স্বার্থেই মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ টোল আদায় করছে না। বিষয়টি মন্ত্রণালয়েরও যথাযথ নির্দেশনা রয়েছে। তবে একই মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাদারীপুর কেন এই টোল আদায় করছে সেটি আমার জানা নেই। বিআইডব্লিউটিএর মাওয়া নদী বন্দরের বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, গত ২৫ জুন আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিআইডব্লিউটিএ-এর সঙ্গে লঞ্চ মালিক সমিতির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সে মোতাবেক টোলের দু’টাকাসহ মোট ৩৫ টাকা ভাড়া কাটা হচ্ছে।
×