স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুদান ও আইভরি কোস্টে প্রায় সাড়ে ৩০০ বাংলাদেশী নাগরিক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। প্রতারণার শিকার হয়ে এসব বাংলাদেশীরা এখন দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন। বিভিন্ন দালাল চক্র চাকরি দেয়ার নামে তাদের সেখানে নিয়ে গেছেন। এসব লোকের মধ্যে অনেকের হাতে কোন কাজ নেই। তাদের কাছে দেশে ফেরার অর্থও নেই। তবে সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায় সুদানে প্রায় ২০০ ও আইভরি কোস্টে ১৫০ জন বাংলাদেশী নাগরিক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। প্রায় এক বছর আগে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে এসব লোকদের সেখানে পাঠানো হয়। তবে অনেকেই সেখানে গিয়ে কাজ পাননি। আবার এদের মধ্যে দুই-একজন কাজ পেলেও বেতন খুব সামান্য। তারা মাসে ছয়-সাত হাজার টাকা বেতন পান। এই টাকায় সেখানে চলতে পারছেন না। তাই তারা দেশে ফিরতে চাইছেন। এসব লোকদের ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের স্বজনরা গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সুদান ও আইভরি কোস্টে এসব বাংলাদেশী নাগরিক গত এক বছর ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে এসব নাগরিকরা সেখানে যাওয়ার পরে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। কোন কোন ব্যক্তি তিন থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করে সেখানে গিয়েছেন। তাদের বলা হয়েছিল, সেখানে গেলে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দেয়া হবে। তবে সেখানে গিয়ে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গেছে। সেখান থেকে তাদের পরিবারকে অভিযোগ করেছে। এসব লোকদের পরিবারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। সুদান ও আইভরি কোস্টে বাংলাদেশের কোন দূতাবাস নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে এই দুই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সে কারণে এসব নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য পিটোরিয়ার হাইকমিশনকে জানানো হয়েছে। এছাড়া এসব লোকদের সেখানে যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি পাঠিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ সুদান দুই ভাগ হওয়ার পরে এখনও দেশ দুটিতে শান্তি ফিরে আসেনি। এছাড়া আইভরি কোস্টেও অভ্যন্তরীণ সঙ্কট চলছে। এসব দেশে বিভিন্ন চরমপন্থী গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে বিবাদে লিপ্ত। প্রায় সময়ই একে অপরকে হামলা চালিয়ে আসছে। কোন সচেতন নাগরিকের সেখানে যাওয়ার কথা নয়। তবে তারপরও কয়েকটি অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সি সেদেশে লোক পাঠাচ্ছেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: