ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গ্রীস অর্থনীতির মন্দাবস্থা

পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২ জুলাই ২০১৫

পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গ্রীস সঙ্কটের প্রভাবে বিশ্ব পুঁজিবাজারে দরপতন ঘটলেও সম্পূর্ণ মুক্ত রয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। দীর্ঘ অর্থনৈতিক সংকটে ভেঙ্গে পড়েছে গ্রীসের অর্থনীতি। এ অবস্থায় ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) থেকে জরুরী তহবিল পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রভাব ফলে দেশটির ব্যাংক ব্যবস্থায়ও। ইউরোপীয় এ দেশটির দউলিয়া হওয়া ও ইউরো জোন থেকে বের হওয়ার আশঙ্কা উদ্বেগ ছড়াচ্ছে বিশ্বজুড়ে। এর ফলে সোমবার ইউরোপ ও এশিয়াসহ বিশ্বের প্রায় সব পুঁজিববাজারেই দরপতন ঘটে। কিন্তু মঙ্গলবার ও বুধবারেই ঘুরে দাঁড়ায় প্রায় সব দেশের পুঁজিবাজার। শুরুতে পতন হলেও ভারতের বাজারও ঘুরে দাঁড়ায়। বুধবারে জাপানের নিক্কি সূচক বেড়েছে দশমিক ০৪ শতাংশ, হংকং সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ভারতের সেনসেক্স বেড়েছে দশমিক ৭৯ শতাংশ, করাচী সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ২৯ শতাংশ, সিঙ্গাপুর সূচক বেড়েছে দশমিক ৪২ শতাংশ। একইভাবে গত তিন কার্যদিবসে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও সূচক বেড়েছে। মঙ্গলবারের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দিনশেষে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক আগের দিনের চেয়ে ৫১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৫৮৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১২২ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৭৬৯ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩১৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২১৭টির, কমেছে ৬৯টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টি কোম্পানির শেয়ার দর, যা টাকায় অংকে লেনদেন হয়েছে ৫৯০ কোটি ৪৫ লাখ ১১ হাজার টাকা। এর আগে সোমবার ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ২৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৪৫৩১ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১১১১ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৭৫২ পয়েন্টে। ওই দিন লেনদেন হয় ৪২৮ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা হিসাবে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৬২ কোটি ১৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বা ৩৭.৮৬ শতাংশ। একাধিক পুঁজিবাজার বিশ্লেষক বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ বিশেষ করে গ্রীসে অবস্থান করা প্রবাসীদের অংশগ্রহণ কম। যার কারণে গ্রীসের মন্দার প্রভাব শেয়ার বাজারে পড়বে না। কারণ বাংলাদেশের পুুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ কোনভাবেই ২ শতাংশের বেশি নয়। এর আগে গত রবিবার গ্রীস সরকার এক আদেশে আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত সব ব্যাংক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। তারল্য সঙ্কটের মধ্যে দেশের আর্থিক খাতকে সুরক্ষা দিতে গ্রিস সরকার এই আদেশ জারি করে। একই সঙ্গে শেয়ারবাজারও বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যাংকগুলো বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি বুথ থেকেও ৬০ ইউরোর বেশি অর্থ তুলতে না পারার সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়। এর ফলে অসহায়ত্বের মুখে পড়েছে দেশটির জনগণ। মানুষ ব্যাংক থেকে অর্থ তুলতে না পেরে এটিএম বুথগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। কিন্তু সেখানেও পাওয়া যাচ্ছে না প্রয়োজনীয় অর্থ। আর বিশ্বে অর্থনীতির ওপর এর প্রভার পড়ে। ফলে বিশ্ব শেয়ার বাজারে দরপতন ঘটে। জানা যায়, আইএমএফের কাছ থেকে নেয়া ঋণের ১.৭ বিলিয়ন ডলার মঙ্গলবারের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে গ্রীসকে। তা না হলে ঋণখেলাপি হবে দেশটি। এর ফলে দেশটিকে ১৯ সদস্যের ইউরো জোন ছাড়তে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই দিন গ্রীসের বেইল আউটের (আর্থিক পুনর্গঠনের শর্তে সহায়তা) সুবিধাও শেষ হবে। এর আগে বেইল আউট প্রস্তাব নিয়ে ইউরো জোনের দেশগুলোর সঙ্গে গ্রীসের আলোচনা কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। এর পরই ইউরো জোনের ওই পুনর্গঠন প্রস্তাব নিয়ে গণভোটের ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী এ্যালেক্সি সিপরাস। ৫ জুলাই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।
×