ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইরানের অস্ত্র তৈরির পথ বন্ধ করতে হবে ॥ যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু কর্মসূচী ফের চালু করব ॥ ইরান

আপাতত চুক্তি হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২ জুলাই ২০১৫

আপাতত চুক্তি হচ্ছে না

তেহরানের পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে আলোচনার মেয়াদ বৃদ্ধির মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রেসিডেন্টরা নিজ নিজ দেশের পক্ষ থেকে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। বারাক ওবামা বলেছেন, ইরানের কোন পরমাণু বোমা তৈরির সব পথ বন্ধ করে না দেয়া হলে ওই কর্মসূচী নিয়ে কোন চুক্তিই হবে না। আর প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, যদি পশ্চিমা দেশগুলো প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তাহলে তার দেশ স্থগিতা রাখা পরমাণু কর্মকা- আবার শুরু করবে। ইরান ও বিশ্ব শক্তিগুলো তেহরানের পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে কোন চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর সময়সীমা মঙ্গলবার এক সপ্তাহ বাড়িয়েছেন। ওই দিনই সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা ছিল। আলোচকরা ইরানের ওই কর্মসূচীকে সীমিত রাখছে এমন এক অস্থায়ী চুক্তির মেয়াদও বাড়িয়েছেন । খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও ইয়াহু নিউজের। ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ওবামা মঙ্গলবার বলেন, ইরানের সঙ্গে যে চুক্তিই করা হোকা কেন তা পালিত হচ্ছে কিনা সেটি যাচাই করার মতো অবশ্যই থাকতে হবে। তিনি সতর্ক করে দেন যে, ইরানের কোন পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হওয়ার পথ স্পষ্টত রুদ্ধ করেন না এমন যে কোন চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ওয়ার্ক আউট করবে। তিনি ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যকার ‘দৃঢ়বদ্ধমূল’ অবিশ্বাস দ্রুত দূর হবে না বলেও তিনি সতর্ক করে দেন। ওবামা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নির্দেশিত শর্তগুলো মেনে নেয়া শেষ পর্যন্ত ইরানেরই দায়িত্ব হবে। তিনি ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। ওবামাুর মন্তব্য ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ইতোপূর্বেকার এক শর্তের জীবন্ত বলেই দেখা হতে পারে। পরমাণু কর্মকা- দীর্ঘদিন বন্ধ রাখা বা সামরিক স্থাপনাগুলো আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের জন্য খুলে দেয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে আলোচনা বাধার সৃষ্টি করেন বলে মনে করা হয়। প্রেসিডেন্ট রুহানি মঙ্গলবার বলেন, পশ্চিমা শক্তিগুলো যে কোন চুক্তিতে বর্ণিত তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হলে তেহরান স্থগিত রাখা পরমাণু কর্মকা- অবিলম্বে আবার শুরু করবে। বাস্তববাদী রুহানি ইরানের আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা হ্রাস করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দু’বছর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। রুহানি আলোচনাার দৃঢ় সমর্থক কিন্তু তিনি আরও কট্টরপন্থী খামেনির তুলনায় কম ক্ষমতাশালী। ইরান ও ছয় বিশ্ব শক্তি এক চূড়ন্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। এ চুক্তি অনুযায়ী অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিনিময়ে তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু কর্মকা- অন্তত এক দশক বন্ধ রাখার কথা। শেষ মুহূর্তে মেয়াদ বাড়ানো না হলে যৌথ কর্মপরিকল্পনা নামে পরিচিত অন্তর্বর্তী চুক্তিটির মেয়াদ মঙ্গলবার মধ্য রাতে শেষ হতো। নতুন সময়সীমা ঘোষণা করে আলোচকরা ৩০ জুন সময়সীমার মধ্যে কোন সাফল্য অর্জন করতে পারেননি বলে স্বীকার করে নিলেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের আলোচক দলের মুখপাত্র ম্যারি হার্ফ বলেন, ইরানের পরমাণু ইস্যু নিয়ে একা দীর্ঘমেয়াদী সমাধানে এক যৌথ ব্যাপক কর্মপরিকল্পনায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে আরও সময় দিতে আলোচনার মেয়াদ সাত দিন বাড়ানোর প্রয়োজন হয়েছে। আলোচনা সফল হলে তা ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার কয়েক দশকের বৈরিতা প্রশমনে সহায়ক হতে পারে। কিন্তু ইসরাইল ও সৌদি আরবসহ ওই অঞ্চলের অনেক মার্কিন মিত্র এবং ওয়াশিংটন ও তেহরানের কট্টরপন্থীরা সেই সাফল্য নিয়ে সন্দিহান। ইরানের সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য রাষ্ট্র ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
×