ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তালতলীতে একমাত্র উপার্জনক্ষম খুন হওয়ায় ব্যাংকার পরিবারে হতাশা

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ১ জুলাই ২০১৫

তালতলীতে একমাত্র উপার্জনক্ষম খুন হওয়ায় ব্যাংকার পরিবারে হতাশা

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী (বরগুনা), ৩০ জুন ॥ বাড়ির সীমানা নিয়ে আপন চাচাদের সঙ্গে বিরোধের বলি হয়েছে ব্যাংক কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার মিস্ত্রি (৩১)। বিপ্লবের অনুপস্থিতি গোটা পরিবারে নেমে এসেছে হতাশা আর অমানিষা। দু’ভাই বোনের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম। মা পারুল রানীর বিলাপ “মোর সুখ দেইখ্যা ওগো সহ্য হয় নাই তাই ওরা মোর পোয়ারে খুন করছে”। বরগুনার তালতলী উপজেলার চরপাড়া গ্রামে পটুয়াখালী পূবালী ব্যাংক শাখার সিনিয়র অফিসার বিপ্লব চন্দ্র মিস্ত্রীকে (৩১) চাচা নিত্যরঞ্জন মিস্ত্রী হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে। ঘটনা ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চাচা নিত্যরঞ্জন মিস্ত্রী, সনাক মিস্ত্রী ও নিত্যরঞ্জনের স্ত্রী সরদিনীকে গ্রেফতার করেছে। বিপ্লবের বাবা চিত্তরঞ্জন মিস্ত্রি ও নিত্যরঞ্জন, সনাক মিস্ত্রি, গণপতি আপন চাচাতো ভাই। চরপাড়া গ্রামে পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমিতে একই বাড়িতে চার পরিবার বসবাস করে আসছে। এদের মধ্যে মাঝে মধ্যে সীমানা নিয়ে কথাকাটির ঘটনা ঘটতো বলে স্থানীয়া জানান। চিত্তরঞ্জনের দু’ছেলে বিপ্লব ও দুলাল এবং মেয়ে ঝর্ণা। চিত্তরঞ্জন পেশায় ছিলেন কাঠমিস্ত্রি। বড় ছেলেকে লেখাপড়া করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করার স্বপ্ন ছিল তার। চিত্তরঞ্জনের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। ছেলে বিপ্লব আমতলী থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে। সে ঢাকা কলেজ থেকে ব্যাবস্থপনা বিভাগে অনার্স ও মাস্টার পাস করে তিন বছর আগে পূবালী ব্যাংকে এডিও পদে চাকরি পায়। বরিশাল শাখায় যোগদানের পরে তার বদলী হয় পটুয়াখালী শাখায়। ২০০৯ সালে বাবা চিত্তরঞ্জন মারা যায়। হতদরিদ্র পরিবারের দায়-দায়িত্ব পড়ে বিপ্লবের ওপর। বিপ্লবও তার পিতার মতো ভাই, বোন ও এক ফুফুর লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়। ভাই দুলাল মিস্ত্রি স্বরূপকাঠি সরকারী কলেজে ইংরেজীতে অর্নাস (প্রথম সেমিস্টারে) অধ্যয়নরত, বোন ঝর্ণা রানী বরগুনা সরকারী কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগে (দ্বিতীয় সেমিস্টারে) লেখাপড়া করছে।
×