তিউনিসিয়ার সুস শহরের সমুদ্রতীরবর্তী একটি হোটেলে হামলাকারী সাইফ রেজগুই ব্রিটেনের এক মৌলবাদীর মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে এই হামলা চালিয়েছে বলে ব্রিটিশ এক দৈনিক জানিয়েছে। ওই মৌলবাদী লন্ডন থেকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছেন। ওই হামলায় ৩০ ব্রিটিশ নাগরিকসহ ৩৮ বিদেশী পর্যটক নিহত হয়। এদিকে এ হামলার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে তিউনিসিয়ার পুলিশ। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহামেদ গারসালি এ খবর জানিয়েছে। খবর বিবিসি, টেলিগ্রাফ ও গার্ডিয়ানের।
ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল এক রিপোর্টে জানিয়েছে, তিউনিসিয়ার প্রধান সন্ত্রাসী সংগঠন আনসান আল-শরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা নেতা সাইফাল্লাহ বেন হাসিন ছিলেন সাইফের পরামর্শদাতা। তিনি ‘তিউনিসিয়ান ফাইটিং গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার ঘাঁটি হিসেবে ব্রিটেনের রাজধানীকে ২০০০ সাল থেকে ব্যবহার করে আসছে। এই সংগঠনটির সঙ্গে আল কায়েদার সম্পৃক্ততা ছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, নতুন সদস্য সংগ্রহ করা এবং তাদের আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো। হাসিন ২০১১ সালে আনসার আল-শরিয়া গড়ে তোলেন। সাইফের পরিবার এই সংগঠনকেই তার মৌলবাদী হয়ে ওঠার জন্য দায়ী করেছেন। এদিকে তিউনিসিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গারসালি বলেন, দেশটির সমুদ্রসৈকতগুলোর নিরাপত্তা রক্ষায় এক হাজার সৈন্য মোতায়েন করা হবে।
হত্যাকারী সাইফ রেজগুইকে ইঙ্গিত করে গারসালি বলেন, এই সন্ত্রাসী-অপরাধীর সঙ্গে যে চক্রটি ছিল আমরা সেই চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছি। গারসালি যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, অভিন্ন শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা বন্ধু। আমরা নিশ্চিত যে, সন্ত্রাসীরা জয়ী হবে না। যে স্থানগুলো হামলার ঘটনা ঘটেছে সেসব স্থানে তিন ইউরোপীয় মন্ত্রী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
তিউনিসিয়ার সুস শহরের সমুদ্রতীরবর্তী হোটেলে এক বন্দুকধারীর হামলার সময় পর্যটকদের রক্ষায় নিজেদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিল পাম মেরিনা হোটেলের কর্মীরা। শুক্রবারের হামলার সময় সাহস দেখানো তিউনিসীয়দের একজন ১৮ বছর বয়সী প্যারাগ্লাইডিং প্রশিক্ষক ইব্রাহিম আল-গুল। তিনি বলেন, হামলার সময় আমরা আমাদের বুক পেতে দিয়েছিলাম।
আমি মনে করেছিলাম সে হয়ত আরবদের ওপর গুলি চালাবে না। এর কিছুক্ষণ আগে সাইফুদ্দিন রেজগুই ১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে ইম্পেরিয়াল মারহাবা হোটেলে তা-ব চালায়। এরপরই তাকে সমুদ্রসৈকতে দেখা যায়। সেখানেই পর্যটকদের রক্ষার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবঢাল হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিল গুলরা। তাদের দেখে চলে যেতে যেতে সাইফ বলতে থাকে, আমি আপনাদের জন্য আসিনি। আপনারা চলে যান।