ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়েতে মসজিদে হামলা

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১ জুলাই ২০১৫

কুয়েতে মসজিদে হামলা

জঙ্গীবাদ এখন বিশ্বের অন্যতম সমস্যা। আইএসের নৃশংসতায় যুক্ত হয়েছে মানুষকে পুড়িয়ে এবং ছাদ থেকে ফেলে, পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা, ভিন্ন ধর্ম এবং মতাবলম্বীদের শিরñেদ এবং মসজিদে ঢুকে নিরীহ মুসল্লিদের গুলি করে হত্যা করা হয়। শুক্রবার কুয়েত, ফ্রান্স ও তিউনিসিয়ায় পৃথক তিন হামলায় ৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তিনটি ঘটনায় আহত হয়েছেন বহু লোক। ফ্রান্সে হামলার দায় কেউ স্বীকার না করলেও কুয়েত ও তিউনিসিয়ার দায় স্বীকার করেছে আইএস। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটির শিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। ওই সময় মসজিদে দুই হাজারের মতো মুসল্লি ছিলেন। জুমার নামাজ শুরু হওয়ার পর উচ্চশব্দে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। কিছুদিন আগে সৌদি আরব ও ইয়েমেনে একই ধরনের হামলা চালায় আইএস। অন্যদিকে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিস থেকে দেড় শ’ কিলোমিটার দূরে পর্যটন নগরী সউসেতে শুক্রবার দুপুরে দুটি হোটেলে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বন্দুকধারী জঙ্গীদের হামলায় ৩৯ জন নিহত হন। এই হামলার দায়ও স্বীকার করেছে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। নিহতদের মধ্যে তিউনিসিয়ান ছাড়াও ব্রিটিশ, জার্মান, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও একজন আয়ারল্যান্ডের নাগরিক ছিলেন। উল্লেখ্য, এর আগে গত মার্চে তিউনিসের জাতীয় যাদুঘরে জঙ্গী হামলায় ২২ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন বিদেশী নাগরিক। এদিকে একই দিন ফ্রান্সে একটি আমেরিকান গ্যাস কোম্পানিতে হামলার ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হন। লিওন শহরে শুক্রবার হামলার ওই ঘটনা ঘটে। এক ব্যক্তি দ্রুত বেগে গাড়ি নিয়ে ওই গ্যাস কোম্পানির ভেতরে প্রবেশ করে এবং বেশ কয়েকটি শক্তিশালী হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলের পাশ থেকে শিরñেদ করা একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। জঙ্গী সংগঠন আইএসের নৃশংসতার কারণে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যে আতঙ্ক ও নৈরাজ্যকর অবস্থা নিত্যদিনের। তারা ইরাক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় চল্লিশ হাজার বর্গকিলোমিটার দখল করে এর নাম দিয়েছে ‘দি ইসলামিক স্টেট’ বা ‘আইএস’। এছাড়া পূর্ব লিবিয়াও এই জঙ্গীদের দখলে। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিস্তার ঘটেছে আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়া পর্যন্ত। নারীদের সঙ্গেও আইএসের আচরণ অমানবিক। আফগানিস্তানে তালেবানরা নারী শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যাপারে যে কঠোর মনোভাব দেখাত আইএসও একই নীতি অনুসরণ করছে। মধ্যপ্রাচ্যে তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে শিয়াদের বের করে দেয়া হয়েছে। বিদেশীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনাও ঘটেছে। তারা সাংবাদিক, এনজিও কর্মীসহ বহু মানুষের শিরñেদ করেছে। সম্প্রতি তাদের হাতে অপহৃত ২ বাংলাদেশীকে উদ্ধার করা হয়েছে। আইএস সরাসরি যুদ্ধ করছে ইরাক আর সিরিয়ায়। অথচ যোদ্ধা সংগ্রহ করা হচ্ছে বিশ্বের প্রায় সব প্রান্ত থেকে। তাদের বিস্তার ঘটেছে জার্মানি, ব্রিটেন, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোতেও। এশিয়ার দেশগুলোতেও তৎপর আইএস। বাংলাদেশেও কিছুদিন আগে আইএস সমর্থক সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েকজনকে। জঙ্গী সংগঠনটি বিশ্বজুড়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যেই এগোচ্ছে। জঙ্গীরা যে ধর্মের নামেই হোক তাদের লক্ষ্য একটাই, তা হচ্ছে মানুষ হত্যা ও সম্পদহানি। এদের নির্মূল করতে হলে শান্তিপ্রিয় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
×