ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভাল মানের কোচের অভাব ব্রাজিলের!

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১ জুলাই ২০১৫

ভাল মানের কোচের অভাব ব্রাজিলের!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়ে ব্রাজিল ফুটবল দল পড়েছে তোপের মুখে। শুধুই হচ্ছে সমালোচনা। এমনও বলা হচ্ছে, ব্রাজিলের ভাল মানের খেলোয়াড় ও কোচ নেই। দুঙ্গা কোচ হওয়ার পরও ব্রাজিলের এত খারাপ অবস্থাতেই এমনটি বলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে অনেকে আবার ব্রাজিলের সময় ফুরিয়ে গেছে বলেও মনে করছেন। প্যারাগুয়ের কাছে টাইব্রেকারে হেরে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকেই বিদায় নেয়ার পর আরেকবার হতাশায় নিমজ্জিত ব্রাজিল। এরপর অত্যন্ত জীর্ণ সেই বিতর্কটাও আবার উঠেছে, হারানো ঐতিহ্য কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায়। এক বছর আগে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে উড়ে যাওয়ার পর যেটা শুরু হয়েছিল, আবারও সেই ব্যবচ্ছেদ শুরু হয়েছে। পরামর্শ এসেছে ‘বিশৃঙ্খল’ ঘরোয়া ফুটবলটাকে নতুন করে সাজাতে। সংবাদপত্রে কলাম লেখক জুকা কেফৌরি ফোলহা দে এস পাওলোতে লেখেন, ‘আবার পেনাল্টিতে বিদায় নেয়া বাস্তবতা লুকাতে পারছে না।’ এরপর তিনি ব্রাজিলের ফুটবলের আসল সমস্যাটা তুলে ধরেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়ের অভাব, আমাদের একটি দলের অভাব, আমাদের একজন কোচের অভাব।’ ব্রাজিলের অনেক সমর্থকের মতো কেফৌরিও ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) আর দুঙ্গাকেই দায় দিচ্ছেন। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে হেরে যাওয়ার পরও গত বিশ্বকাপ শেষে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য ব্রাজিলের দায়িত্ব নেয়া দুঙ্গার পদ বিপদে নেই বলেই মনে হচ্ছে। রক্ষণাত্মক ফুটবল আর ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের অভাব থাকার পরও দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের চাকরিতে কিছু বন্ধু পেয়ে গেছেন দুঙ্গা। সিবিএফকে নিয়েও একই কথা বলা যায়। জার্মানির কাছে ৭-১ গোলের সেই হারের পর সংগঠনটির সমালোচনা হয়েছিল। তাদের বিপক্ষে মূল সমালোচনাটা ছিল এ রকম ব্রাজিলের ফুটবল যে পেছনের দিকে যাচ্ছে সেটা বুঝতে না পারা। সমালোচকরা সামগ্রিকভাবে পরিবর্তন চেয়েছিল। এর মধ্যে ছিল ঘরোয়া ফুটবলের সূচীতে পরিবর্তন আনা, সিবিএফে নতুন মুখ নেয়া এবং ক্লাব দ্বারা পরিচালিত স্বাধীন ফুটবল লীগ আয়োজন করা। দুঙ্গা প্যারাগুয়ের বিপক্ষে হারের দায় দেন ভাইরাসের ওপর। ব্রাজিলের বার্সিলোনা ডিফেন্ডার দানি আলভেজ অবশ্য তার সতীর্থদের সতর্ক করে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে পেনাল্টি শূটআউটে পরাজয়ের পর কান্না করে সময় অপচয় করার কোন মানে নেই।’ তিনি বরং এই পরাজয়ের ধাক্কা সামলে সামনে তাকানোর জন্য সতীর্থদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আগামী অক্টোবর থেকে পরবর্তী বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব শুরু হয়ে যাবে। ফলে দানি আলভেজ কোপার ব্যর্থতা ভুলে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বকে মাথায় রেখে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। দানি আলভেজ বলেন, ‘যা হয়েছে তা মেনে নিতে হবে এবং এখান থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এছাড়া তো ভিন্ন কোন উপায় নেই। কান্না তো কোন সমাধান হতে পারে না। আমাদের বরং ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কিছু করতে হবে।’ দল এখন খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে গেলেও আগামী এই দলটিই দারুণ কিছু করতে বলে বিশ্বাস বার্সেলোনা তারকা দানি আলভেজের, ‘ব্রাজিল এখন একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দলের তরুণ এবং সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের দারুণ কিছু করার সামর্থ্য রয়েছে। আমার বিশ্বাস, এই খেলোয়াড়রাই আগামী এই কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে পারবে এবং দারুণ কিছু করে দেখাবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমি জানি না আমি সেরা একাদশে থাকব কি-না। তবে স্কোয়াডে যে-ই থাকুক না কেন সে নিজের সেরাটাই দেবে।’ উইলিয়ান বলেন, ‘হেরে সবাই অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। সেদিনের রাতটি ছিল অনেক বড়। আমি সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। সারা রাত শুধু ম্যাচটি নিয়ে ভেবেছি। তবে আমরা থেমে থাকব না, সামনে এগিয়ে যাব। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে এখান থেকেই আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’ বিশ্বকাপের ছবি পাল্টে দিতে না পেরে হতাশা মিরান্ডা বলেন, ‘এটি অত্যন্ত কষ্টদায়ক। দুর্ভাগ্যবশত আমরা যেমনটি চেয়েছিলাম তেমনটি হয়নি। আমরা এখানে বিশ্বকাপ-ব্যর্থতার ছবি পাল্টে দিতে এসেছিলাম। তবে পারিনি। এখন বিশ্বকাপের বাছাইপর্বকে সামনে রেখে আমাদের এখান থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’
×