ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাহে রমজান

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১ জুলাই ২০১৫

মাহে রমজান

অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম রফিক ॥ পবিত্র মাহে রমজানের আজ ১৩তম দিবস। রমজানুল মোবারক আমাদের কাছে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণের একটা পরিবেশ নিয়ে আসে। এ পরিবেশ বছরে অন্তত একমাস হলেও আমাদের পরিশুদ্ধির জন্য একান্ত প্রয়োজন। এজন্য কেউ কেউ এ মাসকে মুমিনের ধর্ম কর্ম চর্চার ট্রেনিং পিরিয়ড বলে থাকেন। আমরা আখেরী নবী সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদের (স) উম্মত এবং অনেকটা আখেরী জামানাতেই আমাদের আবির্ভাব। তবে অন্যান্য নবী রাসূলের যুগের মানুষের চেয়ে আমরা উম্মতে মুহাম্মদীর মর্যাদা অনেক অনেক বেশি। এর কিছু কারণও পূর্ববর্তী কিতাবÑসমূহে বর্ণিত হয়েছে। বলাবাহুল্য, সেসব কারণ ও বৈশিষ্ট্যগুলো আমাদের মধ্যে পাওয়া গেলে আমরা শ্রেষ্ঠ। আমরা ধন্য নিঃসন্দেহে। কিন্তু যদি সেসব সৎগুণাবলী আমরা চর্চা না করি তা হলে আমরা অধমদের কাতারে শামিল হব। মাহে রমজানের সার্বিক সিয়াম সাধনা ও আনুষঙ্গিক ইবাদত রিয়াজতগুলো আমাদের সত্যিকারের উম্মতে মুহাম্মদীর বৈশিষ্ট্যসমূহ অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। চারটি প্রধান কিতাবের মধ্যে একটি আসমানী কিতাব নাজিল হয়েছিল বিখ্যাত নবী মুসার (আ) ওপর। তার ওপর নাজিলকৃত তাওরাত শরীফে উম্মতে মুহাম্মদীর বিভিন্ন গুণাবলী তুলে ধরে প্রশংসা করা হয়েছে। সাহাবী হযরত কা’ব (রা) তাউরাত হতে বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমরা লিখিত পেয়েছি যে, মুহাম্মদের (স) উম্মতগণ আল্লাহর প্রশংসাকারী হবে, তারা সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রশংসা করবে। প্রত্যেক অবতরণস্থলেই তারা আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং প্রত্যেক উচ্চ মর্যাদা প্রাপ্তিতেই তারা আল্লাহর মহিমা কীর্তন করবে। তারা সূর্যের (সময়ের) দিকে খেয়াল রাখবে। যখন নামাজের সময় হয় তখন নামাজ আদায় করবে। তারা তাদের সতর ঢাকতে গিয়ে পায়ের গিরার ওপরেই কাপড় পরিধান করবে। পূর্ণভাবে অজু করবে। তাদের মুয়াজ্জিনগণ গগনের তলদেশ আজানে মুখরিত করে তুলবে। যুদ্ধ ও নামাজে তাদের কাতার একই প্রকার হবে অর্থাৎ শান্তিতে-সমরে-ইবাদতে তাদের শৃঙ্খলা ও ভ্রাতৃত্ব হবে অভিন্ন। রাতে তারা মক্ষিকার মতো গুন গুন স্বরে আল্লাহর যিক্র করবে।’ - মিশকাত শরীফ। মাহে রমজানের সিয়াম সালাত ও যিকিরের আধিক্য আমাদের উপরোক্ত বিখ্যাত হাদিসটি অনুপ্রাণিত করে। মহান আল্লাহ পাক কুরআনুল কারীমে আমাদের উদ্দেশ করে বলেছেন: ইয়া আইয়্যূ হাল লাযীনা আমানু উদ খুলু ফিসসিলমি কাফফাহ. . .অর্থাৎ, হে ঈমানদাগণ! তোমরা পূর্ণভাবে ইসলামে প্রবিষ্ট হও, আর শয়তানের কুমন্ত্রণার অনুসরণ করিও না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন। আমাদের ইসলাম থেকে বিচ্যুতি গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা শয়তানের কুমন্ত্রণারই ফল। এ মাস আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার মাস। মনের সমস্ত কালিমা বিদূরিত করে সেখানে আল্লাহতালার প্রেম ও ভয় আমাদের প্রিয় নবীজীর অকৃত্রিম মহব্বতের বীজ বপনের মৌসুম। এর জন্য এ মাসে বেশি বেশি করে ইস্তিগফার ও দরূদ শরীফ পাঠের তাগিদ রয়েছে। আল্লাহ আমাদেরকে উম্মতে মুহাম্মদীর বৈশিষ্ট্য মোতাবেক সৎপথ আঁকড়ে থাকার এবং নেক আমল চর্চার মাধ্যমে জিন্দেগী অতিবাহিত করার তওফীক দিন।
×