ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালের মোটা মুড়ি রফতানি হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ৩০ জুন ২০১৫

বরিশালের মোটা মুড়ি রফতানি হচ্ছে

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ ইফতারে মুড়ির কদরই আলাদা। আবার সেই মুড়ি যদি হয় বরিশালের মোটা মুড়ি, তা হলে তো আর কথাই নেই। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বরিশালের মোটা মুড়ি রফতানি হচ্ছে বিদেশে। ফলে স্থানীয় ১০ গ্রামের ৩শ পরিবারের প্রায় দেড় হাজার সদস্যের রাতের ঘুম মজে গেছে প্রতিক্ষণে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও অবসরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মুড়ি ভাজায় অংশগ্রহণ করছে। জানা গেছে, রমজান শুরু হওয়ার পর পরই সরগরম হয়ে উঠেছে জেলার বুড়িরহাটের মুড়িপল্লী। প্রতিদিন রাত ২টা বাজতেই মাটির হাঁড়ি পাতিলের টুং টাং শব্দ, কখনও বা শিশুর কান্নার সঙ্গে হাজারো মানুষের কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে জ্বলে ওঠে ৩শ ঘরের ১২শ চুলার আগুন। চলে ভেজা চালে লবণ মেশানোর কাজ। চার মুখো চুলায় শুরু হয় চাল ও বালু ভাজার কাজ। সম্পূর্ণ রাসায়নিক সার মুক্তভাবেই ভাজা হয় বরিশালের মোটা মুড়ি। বরিশালের সীমান্তবর্তী এলাকা বুড়িরহাট ও আশপাশের ১০ গ্রামে মোটা মুড়ি বানানো হচ্ছে প্রায় ১শ বছরেরও অধিক সময় ধরে। অন্যসব পরিচয় হারিয়ে এসব গ্রাম বর্তমানে ‘মুড়ির গ্রাম’ নামেই দেশব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে। আড়তদারদের দেয়া ৫০ কেজি চালে মুড়ি হয় ৪৪ কেজি। এ মুড়ি বর্তমান বাজারে খুচরা মূল্যে প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। তবে সব খরচ বাদে এখন মুড়ি ভাজায় লাভ কমে গেছে। নারী শ্রমিক তাছলিমা বেগম জানান, মহাজনের (আড়তদার) দেয়া চাল ও জ্বালানি পেয়ে শুধু মুড়ি ভেজে দিয়ে গড়ে ৫০ কেজি মুড়ি থেকে ৩ থেকে ৪শ টাকা আয় করেন তারা। তবে নিজেরা ধান ক্রয় করে মুড়ি ভেজে শহরে নিয়ে বিক্রি করতে পারলে দ্বিগুণ আয় করা যায়। শ্রমিকদের মতে, মুড়ি ব্যবসার সব লাভ লুটে খাচ্ছেন আড়তদাররা। অর্থাভাবে তারা চাল ও জ্বালানি ক্রয় করতে পারছেন না। তাই মুড়ি শিল্পে জড়িতরা স্বাবলম্বী হতে সরকারের কাছে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া দাবি করেছেন।
×