ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাঙ্গাকারার হতাশার ম্যাচ

সমতা ফেরাল লঙ্কানরা

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ৩০ জুন ২০১৫

সমতা ফেরাল লঙ্কানরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কলম্বো জয়ে সিরিজে ১-১এ সমতা ফেরাল লঙ্কানরা। দ্বিতীয় টেস্টে সফরকারী পাকিস্তানকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারাল এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের দল। সোমবার পঞ্চম ও শেষ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬.৩ ওভারেই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১৫৩ রান তুলে নেয় তারা। প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতাই মূলত ডোবায় পাকিস্তানকে, যেখানে মাত্র ১৩৮ এগুটিয়ে যায় অতিথিরা। যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২৯ রান করে ১৫২ রানের লিড পায় মিসবাহ-উল হকের দল। আর প্রথম ইনিংসে লঙ্কানদের সংগ্রহ ছিল ৩১৫ রান। ৭ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা স্বাগতিক পেসার ধাম্মিকা প্রসাদ। দল জিতলেও কলম্বোতে জীবনের শেষ ম্যাচে হতাশা ছড়িয়েছেন কুমার সাঙ্গাকারা ৩৪ ও ০ রানে সাজঘরে ফিরেছেন বিদায়ের অপেক্ষায় থাকা লঙ্কান গ্রেট! দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার এটি ৫০তম টেস্ট ম্যাচ জয়। কলম্বোর পি সারা ওভাল ঐতিহাসিক এক ভেন্যু। যেখানে পদধুলি পড়েছিল স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের। মর্যাদা পাওয়ার পর শ্রীলঙ্কা প্রথম ম্যাচটিও খেলেছিল এই মাঠেই। ক্যারিয়ারজুড়ে এখানে ব্যাট হাতে রানের ফল্গুধরা বাইছেন, অথচ জীবনের শেষ ম্যাচে সেখানে ব্যর্থ হলেন সাঙ্গাকারা। আসন্ন ভারত সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলে ব্যাট-বল তুলে রাখবেন লঙ্কান ক্রিকেটের চলমান এই কিংবদন্তি। সান্ত¡না এমন আবেগের মাঠে ব্যর্থতা ঝেড়ে ঘুরে দাঁড়াল ম্যাথুস বাহিনী। এর আগে পি সারা ওভালে তিন টেস্টেই হেরেছিল স্বাগতিকরা! ১৫৩ রানের জয়ের লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই ছিল, সেটি পূরণে খুব একটা কষ্ট হয়নি তাদের। ওপেনার দিমুথ করুণারতেœ ৫৭ বলে ৫০ ও কিথরুয়ান ভিতানাগে ২৩ বলে ৩৪ রানের দুটি ঝড়ো ইনিংস খেলে আউট হন। অধিনায়ক ম্যাথুস ৫৭ বলে ৪৩ ও সহ-অধিনায়ক লাহিরু থিরিমান্নে ২১ বলে অপরাজিত ২০ রানে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। যার দিকে দৃষ্টি ছিল ব্যর্থ হন সেই সাঙ্গাকারা। প্রথম ইনিংসে ৩৪ রান করলেও কাল দ্বিতীয় ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি! ‘গোল্ডেন ডাক’র পথে প্রথম বলেই ইয়াসির শাহর ঘূর্ণি সামলাতে ব্যর্থ হয়ে আজহার আলির হাতে ক্যাচ তুলে দেন লঙ্কান ক্রিকেটের এই দিকপাল। ক্যারিয়ারে ১১ ‘ডাক’ পাওয়া সাঙ্গাকারার ষষ্ঠ ‘গোল্ডেন ডাক’ এটিÑ যা দেশটির হয়ে সাবেক গ্রেট সনাথ জয়সুরিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। একাধিকবার বৃষ্টির বাগড়া দেয়া ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয় পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস। লঙ্কান স্পিনার থারিন্ডু কৌশলের ঘূর্ণির কাছে পাকি ব্যাটসম্যানদের অসহায় আত্মসমর্পণই এই ফল নির্ধারক হয়ে দাঁড়ায়। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে একটা দলের ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর আর কিই বা করার থাকে? প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা পুষিয়ে দিতে দ্বিতীয় ইনিংসে চেষ্টা করেছেন সেঞ্চুরিয়ান আজহার আলি (১১৭)। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। লঙ্কানদের বড় টার্গেট দিতে পারেনি পাকিরা। অধিনায়ক মিসবাহ সেটিই বলেছেন, ‘প্রথম দিন মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে চা-বিরতির আগ পর্যন্ত সময়টুকুই আমাদের শেষ করে দেয়। এই সময় আমরা সব ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বসি। আমার মনে হয়ে এটিই হারের অন্যতম কারণ। ২০০৯ সালের পর শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জেতেনি পাকিস্তান। পাল্লেকেলের সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেটি শুরু হবে ৩ জুলাই। স্কোর ॥ পাকিস্তান প্রথম ইনিংস ১৩৮/১০ (৪২.৫ ওভার; হাফিজ ৪২ ওভার; আজহার ২৬, ইয়াসির ১৫, সরফরাজ ১৪; থারিন্ডু ৫/৪২, প্রসাদ ৩/৪৩, চামিরা ১/৩৩) ও দ্বিতীয় ইনিংস ৩২৯/১০ (১১৮.২ ওভার; আজহার ১১৭, শেহজাদ ৬৯, ইউনুস ৪০, সফিক ২৭; প্রসাদ ৪/৯২, চামিরা ৩/৫৩, ম্যাথুস ২/১৫) শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস ৩১৫/৯ (১২১ ওভার; কুশল ৮০, ম্যাথুস ৭৭, প্রসাদ ৩৫, সাঙ্গাকারা ৩৪, থারিন্ডু ১৮; ইয়াসির ৬/৯৬, হাফিজ ১/১৯, জুনায়েদ ১/৮৯) ও দ্বিতীয় ইনিংস ১৫৩/৩ (২৬.৩ ওভার; করুণারতেœ ৫০, ম্যাথুস ৪৩*, থিরিমান্নে ২০*; ইয়াসির ২/৫৫) ফল ॥ শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে জয়ী ম্যাচসেরা ॥ প্রসাদ (শ্রীলঙ্কা) সিরিজ ॥ তিন টেস্টের সিরিজ ১-১এ চলমান
×