ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীতে নারীসহ ২ খুন

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ৩০ জুন ২০১৫

রাজধানীতে নারীসহ ২ খুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে পৃথক স্থানে এক নারীসহ দু’টি হত্যাকা- ঘটেছে। এরমধ্যে মিরপুরে রিজার্ভ পানির ট্যাংক থেকে এক গৃহবধূ বৃষ্টির গলিত লাশ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ স্বামী মহিউদ্দিনকে আটক করেছে। কদমতলীতে এক মুদি দোকানিকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে ডেমরায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে আদাবরে তিন দিন আগে অপহৃত এক ব্যবসায়ীকে তুরাগের এক বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণের জড়িত অভিযোগে পুলিশ সাবেক সেনা সদস্যসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া গুলশানে গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় গৃহকর্ত্রী মোর্শেদাকে (২৫) আটক করা হয়েছে। বাড্ডার একই ঘটনায় অপর গৃহকর্ত্রীকে আটক করা হয়। সোমবার পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্রে জানা গেছে, রবিবার গভীরাতে পুলিশ মিরপুর এক নম্বর সেকশনের শাহআলীর দারাঘাট এলাকার ‘এইচ’ ব্লকের ৫/১ নম্বর রোডের ৬/৭ নম্বর দোতলা ভবনের নিচতলার ‘রিজার্ভ ট্যাংক’ থেকে গৃহবধূ বৃষ্টি আক্তারের (২২) গলিত লাশ উদ্ধার করে। স্বামী মহিউদ্দিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বৃষ্টি স্বামীকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। কদমতলীর রায়েরবাগে নিজ বাড়ির সামনে মোঃ জাফর (৪২) নামে এক মুদির দোকানিকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের বাবার নাম হানিফ মিয়া। তিনি রায়েরবাগ এলাকার বি ব্লকে সাততলা ভবনের তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। বাসার সামনে ‘নুসরাত জেনারেল স্টোর’ নামে তার একটি মুদি দোকান রয়েছে। স্ত্রী নূর জাহান জানান, সোমবার ভোরের দিকে ভাড়াটিয়ারা জাফরকে তৃতীয় তলার সিঁড়িতে গলাকাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাপসাতালে জরুরী বিভাগে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতালে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান, তার স্ত্রী ও ছেলের কথায় অসংলগ্নতা রয়েছে। ভবন থেকে পড়ে মৃত্যু ॥ সোমবার দুপুরে ডেমরার কোনাপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবদুল করিম (৩০) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তার বাবা আকবর শেখ। বাড়ি রাজবাড়ী জেলার ভালুকান্দিতে। অপহৃত ব্যবসায়ী উদ্ধার, অপহরণকারীদের গ্রেফতার ॥ আদাবর থেকে তিন দিন আগে অপহৃত ব্যবসায়ী মোখলেস খানকে (৩২) তুরাগের এক বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ব্যবসায়ী অপহরণের অভিযোগে সাবেক সেনাসদস্যসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে আদাবর এলাকা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অপহরণকারীরা হচ্ছে, সাবেক সেনাসদস্য আবদুল গফুর, গোলাম মোঃ চৌধুরী, আজাদ হোসেন রোকন, শাহীনুর আলম ও মোঃ সানাউল্লাহ। আদাবর থানার এসআই আশিকুর রহমান জানান, উদ্ধার মোখলেসুর রহমান গার্মেন্টসের স্টক লটের ব্যবসা করেন। আদাবরের প্রবাল হাউজিংয়ে তার বাসা। সাবেক সেনা সদস্য আব্দুল গফুর এমএলএম ব্যবসার কথা বলে কয়েক বছর আগে মোখলেসের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেন। মোখলেস সেই টাকা ফেরত চান সেনা সদস্য গফুরের কাছে। টাকা দেয়ার কথা বলে ২৫ জুন সকাল সাড়ে ১০টায় গফুর আদাবরের ওয়ালটন শো রুমের সামনে মোখলেসকে যেতে বলে। সে অনুযায়ী মোখলেস সেখানে গেলে একটি মাইক্রোবাসে থাকা গফুর ও তার তিন সহযোগী তাকে গাড়িতে তুলে হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করে। তার সঙ্গে থাকা ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকাও নিয়ে নেয়। পরদিন মোখলেসের পরিবারকে ফোন করে ত্রিশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না পেলে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। হুমকির বিষয়টি জানিয়ে গত শনিবার আদাবর থানায় সাধারণ ডায়েরি করে অপহৃত মোখলেসের পরিবার। এরপর পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করেন। এরই সূত্র ধরে রবিবার সন্ধ্যায় তুরাগ থানার ফুলবাড়িয়া এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অপহৃত মোখলেসকে উদ্ধার করে। গৃহকর্মী নির্যাতনের পৃথক ঘটনায় দুই গৃহকর্ত্রী আটক ॥ রবিবার সকাল দশটার দিকে পুলিশ গুলশান-১ এর ৬ নম্বর রোড ২৭ নম্বর বাসা থেকে গৃহকর্ত্রী মেশন আক্তারকে আটক করে। এ সময় নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী মোর্শেদাকে (২৫) উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। আহত গৃহকর্মী মোর্শেদা নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার দীঘলডাঙ্গি গ্রামের বাবুল মিয়ার স্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, ছয় মাস আগে এলাকার পূর্বপরিচিত লাকি বেগমের মাধ্যমে গুলশান-১ এর ৬ নম্বর রোডের ২৭ নম্বর বাসার জাকির হোসেনের বাড়িতে মাসিক দুই হাজার টাকা বেতনে কাজ নেন। কাজে যোগ দেয়ার পর থেকেই গৃহকর্ত্রী মেশন আক্তার তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। এ ছাড়া প্রথম এক মাসের কাজের বেতন দেয়া হলেও বাকি পাঁচ মাস তাকে কোন টাকা পয়সা দেয়া হয়নি। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলতে দেয়া হতো না। সোমবার সকাল দশটার দিকেও তাকে মারধর করে ওই বাসার দোতলার ছাদে নিয়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। বাসার নিরাপত্তাকর্মীরা বিষয়টি দেখে তাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। গুলশান থানার এসআই রিপন দাস জানান, গৃহকর্ত্রীকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আহত গৃহকর্মীকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে।
×