ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

এথেন্সকে ১৫ কোটি ইউরো দেয়ার পরিকল্পনা প্রত্যাহার ইউরোপের

ঘোর সঙ্কটে ঋণগ্রস্ত গ্রীস

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৯ জুন ২০১৫

ঘোর সঙ্কটে ঋণগ্রস্ত গ্রীস

গ্রীসের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে এবং দেশটি ইউরোজোন ত্যাগের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। দেশটির ঋণদাতারা এথেন্সের এক গণভোট অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার জবাবে দেশের জন্য অপরিহার্য বেইল আউটের (দেউলিয়াত্ব ঠেকানোর অর্থ সহায়তা) মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকার করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। খবর এএফপি ও টেলিগ্রাফ অনলাইনের। ইউরোজোন অর্থমন্ত্রীরা ঋণগ্রস্ত দেশ গ্রীসের জন্য ১,৫০০ কোটি ইউরো ছাড় করার প্রাথমিক পরিকল্পনা শনিবার রাতে প্রত্যাহার করেন। এর আগে গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপরাস বলেন যে, তিনি ঋণদাতাদের কৃচ্ছ্রমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ‘অপমানজনক’ দাবিগুলোকে ৫ জুলাই জনগণের ভোটের কাছে পেশ করবেন। গ্রীসরা সেগুলো অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন। ঋণদাতাদের বেইল আউট দাবিগুলো নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠানের প্রস্তাব শনিবার রাতে গ্রীক পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়। এর ৩০০ সদস্যের মধ্যে অন্তত ১৭৯ জন প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেন। গ্রীসের ঋণদাতারা হলো ইউরোপিয়ান কমিশন, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল। অর্থ সঙ্কটগ্রস্ত গ্রীস মঙ্গলবার ১৫৫ কোটি ইউরো যোগাড় করতে না পারলে ৩০ জুন আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের লক্ষ্য (আইএমএফ) ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হবে। এটিই হবে ইতিহাসে প্রথম উন্নত দেশ যে দেশ আইএমএফের ঋণ পরিশোধে খেলাপি হবে। একই দিন গ্রীসের ২৪,০০০ কোটি ইউরোর বেইল আউট কর্মসূচীর মেয়াদও আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে এবং এতে এর ব্যাংকিং ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। ঋণদাতা শক্তিগুলো গণভোট আহ্বানে সিপরাসের দুঃসাহসে হতচকিত হয়ে এ কর্মসূচীর মেয়াদ কয়েক সপ্তাহ বাড়াতে তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। শনিবার যাতে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেজন্য সিপরাস এ অনুরোধ করেছিলেন। ইউরো গ্রুপের প্রধান জেরোয়েন ডিজসেলব্লোয়েন আবেগ ভরা কণ্ঠে তার সহকর্মীরা গ্রীসের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, যত দুঃখজনকই হোক না কেন আমরা অবশ্যই এ সিদ্ধান্তে উপনীত হব যে, ঐ কর্মসূচীর মেয়াদ মঙ্গলবার রাতে শেষ হবে। এটির মেয়াদ শেষ হবেই। বেদনাহত ডিজসেলব্লোয়েন আরও বলেন, এমনকি যদি গ্রীক জনগণ হ্যাঁ ভোট দেয়, তা হলেও ঋণদাতারা ‘বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগের কারণে চরম বামপন্থী সরকারের সঙ্গে আর সহযোগিতা নাও করতে পারে। কিন্তু সিপরাস আর্থিক সর্বনাশের হুমকির মুখেও দৃঢ় অবস্থানে থাকেন। জার্মান নেত্রী এ্যাঞ্জেলা মেরকেলের কাছে ফোন করে সিপরাস গণভোটের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্কল্প ব্যক্ত করেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গ্রীসে গণতন্ত্রের উচ্চ মূল্যায়ন করা হয়। তিনি বলেন, ইউরো গ্রুপ যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন, গ্রীক জনগণ আগামী সপ্তাহে প্রয়োজনীয় জীবনশক্তি পাবে এবং তারা বেঁচে থাকবে। পরে তিনি বলেন, আমাদের অংশীদাররা পছন্দ করুন বা নাই করুন, গণভোট হবেই। তিনি বলেন, দেশের ঋণদাতাদের নির্দেশিত ‘অপমানজনক’ চরমপত্রের প্রতি গ্রীক জনগণ যে জোরালো ভাষায় ‘না’ বলবেন, তাতে তিনি নিশ্চিত। ইউরোপীয় কর্মকর্তারা সিপরাসকে তার ঋণাদাতাদের না জানিয়ে একতরফা গণভোট ডেকে আলোচনা নস্যাত করে দেয়ার দায়ে অভিযুক্ত করেন। ইইউর এক কর্মকর্তা সিপরাসের পদক্ষেপকে ‘আকস্মিক আঘাত’ বলে অভিহিত করেন। ডিজসেলব্লোয়েন বলেন, আমরাই নই, গ্রীক সরকারই আলোচনা থেকে সরে যায়। তবে তিনি বলেন, আমাদের আলোচনার দরজা সব সময়েই খোলা রয়েছে
×