ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মন্ত্রীর আগমনে হুলস্থূল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ২৮ জুন ২০১৫

মন্ত্রীর আগমনে হুলস্থূল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দ্বিতীয়বারের মতো আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়েও রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের তেমন উন্নতি লক্ষ্য করেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। শনিবার দুপুরে তিনি ওই হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। মন্ত্রীর আগমনে হুলস্থূল পড়ে যায় হাসপাতালে। ডাক্তার-নার্সরা দ্রুত এ্যাপ্রোন পরে কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের অভিনয় শুরু করেন। এর বাইরেও জরুরী বিভাগে রুগী দেখায় অনিয়ম, বাইরে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো, বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য করাসহ নানা অভিযোগ রুগীরাই করেন মন্ত্রীর কাছে। এ সময় তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন। রোগীদের খোঁজখবর নেন। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালের সার্বিক অবস্থা খুব বেশি সন্তোষজনক নয়। কর্মস্থলে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীর উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অনিয়ম সহ্য করা হবে না। শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আকস্মিক পরিদর্শনে গেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে বেশ কিছু অবহেলার চিত্র ধরা পড়ে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের দৌড়াদৌড়ি। তাদের কেউ মোবাইলে, কেউ দৌড় দিয়ে হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে মন্ত্রীর আগমন ও সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে থাকেন। তখন শুরু হয় আরেক সার্কাস। নিজ নিজ জায়গায় পৌঁছার প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে। সাধারণ পোশাকে থাকা চিকিৎসকরা নিজ নিজ রুম থেকে এ্যাপ্রোন নিয়ে এসে মন্ত্রীর সামনেই পরতে থাকেন। মন্ত্রী প্রথমে টিকেট কাউন্টার পরিদর্শন করেন। তারপর তিনি বহির্বিভাগের চর্ম ও যৌন এবং মেডিসিন বিভাগ পরিদর্শন করেন। এই দু’বিভাগের সরু জায়গায় চিকিৎসকদের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ভিড়। বসা তো দূরের কথা, দাঁড়িয়ে থাকার জায়গাটুকুও নেই। চিকিৎসকদের দরকার সামনে সিরিয়াল খাতা নিয়ে বসে আছেন একজন করে এ্যাটেনড্যান্ট। অপেক্ষমাণ রোগী ও তাদের অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, সিরিয়াল মেনে চলা হয় না। এ্যাটেনড্যান্টদের ইচ্ছাটাই সিরিয়াল। গোপনে এ্যাটেনড্যান্টদের খুশি করলে পেছনের সিরিয়ালও সামনে চলে আসে। চিকিৎসকদের অনেকেই বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে ল্যাব পরীক্ষা করানোর জন্য পাঠিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেন। আর এমনসব ওষুধের তালিকা দিয়ে দেন, যা বাইরের ফার্মাসি থেকে কিনতে হয় বলে অভিযোগ করেন বহির্বিভাগে আসা রোগী ও তাদের অভিভাবকরা। এভাবে দলবেঁধে পরিদর্শনে এলে হাসপাতালের অনিয়ম ও দুর্নীতি জানা যাবে না বলেও রোগীদের কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একের পর এক বিভাগ, ওয়ার্ড পরিদর্শন করতে থাকেন মন্ত্রী। এবার মন্ত্রীর পেছনে সৃষ্টি হয় চিকিৎসকদের সমাগম। দায়িত্ব পালন রেখে পরিদর্শক দলের সঙ্গে একাকার হয়ে যান তারা। অর্থোপেডিক সার্জারি এবং ওরাল এ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেশিয়া ও সার্জারি ওয়ার্ড-২ এ প্রবেশ করেন মন্ত্রী। এখানে ঘটে হাস্যকর ঘটনা। ওই ওয়ার্ডে সোজাপথে প্রবেশ করার দরজা ছিল। কিন্তু হাসপাতালের লোকজন কিছু পথ ঘুরিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যান। ততক্ষণে হাজির হন কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা।
×