স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শচীন টেন্ডুলকরের মতো বিরল প্রতিভাবানদের জন্ম যুগে যুগে নয়, শতবর্ষে একবারই হয়, সেটি আরও একবার প্রমাণ হলো। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) ওয়েবসাইটে পরিচালিত এক জরিপে একবিংশ শতাব্দীর (২১ শতকের) সেরা টেস্ট ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পেলেন ভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনের জীবন্ত কিংবদন্তি। জন্ম ভারতে হলেও দীর্ঘ দুই যুগের ক্যারিয়ারে অপূর্ব ব্যাটিংশৈলীর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে অগণিত ভক্তের মন জয় করেন ২০১৩ সালে অবসরে যাওয়া ক্রিকেটের এ ‘অপার বিস্ময়’। তারই নিদর্শন অস্ট্রেলিয়ান সাইট থেকে সেরার স্বীকৃতি। এমনকি শেনওয়ার্ন, রিকি পন্টিংয়ের মতো অসি-গ্রেটদের পেছনে ফেলেন ৪২ বছর বয়সী ব্যাটিং-মহীরুহ।
শতকরা ১৪ শতাংশ ভোট পেয়ে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ঠাঁই করে নেন অবসরের দোরগোড়ায় দাঁড়ানো শ্রীলঙ্কান তারকা কুমার সাঙ্গাকারা। শচীনের ভা-ারে জমা পড়ে ২৪ শতাংশ ভোট। ১৯৮৯ থেকে ২৪ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ২০০ টেস্ট খেলে ৫৩.৭৮ গড়ে রেকর্ড ১৫,৯২১ রান সংগ্রহ করেন ‘এ যুগের ডন’। একবিংশ শতাব্দীতে পা দেয়ার পর ১২৭ টেস্টে ৫২.২২ গড়ে করেন ১০,০৮০ রান। মোট ৫১ টেস্ট সেঞ্চুরির মধ্যে ২০০০ সালের পরই করেন ২৯টি! টেস্ট-ওয়ানডে মিলিয়ে ১শ’ সেঞ্চুরি হাঁকানো একমাত্র ব্যাটসম্যান শচীন। সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি, সর্বাধিক রানসহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিরল সব রেকর্ড তারই ভা-ারে।
সিএর অনলাইনে ভোটের একবিংশ শতাব্দীর শীর্ষ পাঁচ ক্রিকেটারের অপর তিনজন হলেনÑ এ্যাডাম গিলক্রিস্ট, রিকি পন্টিং ও জ্যাক ক্যালিস। তারা সবাই নিজ দলে অসামান্য অবদান রাখেন। তবে অবাক করার মতো বিষয় কেবল একবিংশ নয়, ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা দুই বোলার শেনওয়ার্ন ও মুত্তিয়া মুরলিধরন যথাক্রমেÑ ৯ শতাংশ ও ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে যথাক্রমে সপ্তম ও অষ্টম স্থানে! কিছুদিন আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একটি জুরি বোর্ডের মাধ্যমে শতাব্দীর সেরা ১০০ জন টেস্ট ক্রিকেটারের তালিকা তৈরি করে। পরে সেখান থেকেই একবিংশ শতাব্দীর সেরা বেঁছে নেয়ার জন্য ভক্তদের মধ্যে এ অনলাইন ভোটের আয়োজন করা হয়। যেখানেই সবাইকে পেছনে ফেললেন শচীন। জরিপে ১৬ হাজারেরও বেশি ভক্ত অনুরাগী অংশ নেন বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয়দের কাছে শচীন কেবল একটি নাম নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু। যেখানে ভক্তরা তাকে ক্রিকেট-দেবতা বলে মনে করেন। ১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন আধুনিক ক্রিকেটের এই বিরল প্রতিভা। শুক্রবারই মুম্বাই ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশনের (এমসিএ) অধীনে ক্রিকেট ইমপ্রুভমেন্ট কমিটিতে (সিআইসি) শচীনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যার অর্থ ইন্ডিয়ান ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) উপদেষ্টা কমিটির পাশাপাশি সিআইসিতেও কাজ করবেন তিনি। জীবন্ত কিংবদন্তিকে কাজে লাগাতে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করে যাচ্ছে মুম্বাই।