ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গুয়েরেরোর হ্যাটট্রিকে সেমিফাইনালে পেরু

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৭ জুন ২০১৫

গুয়েরেরোর হ্যাটট্রিকে সেমিফাইনালে পেরু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাওলো গুয়েরেরোর দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ভর করে কোপা আমেরিকা ফুটবলের সেমিফাইনালে উঠেছে পেরু। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোরে অনুষ্ঠিত আসরের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে পেরু ৩-১ গোলে পরাজিত করে বলিভিয়াকে। বিজিত দলের হয়ে পেনাল্টি থেকে একমাত্র গোলটি করেন মার্টিন্স মরেনো। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ২৯ জুন প্রথম সেমিফাইনালে স্বাগতিক চিলির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে পেরু। সেমিতে পেরু-চিলির লড়াই নিশ্চিত হওয়ার পর আগাম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। কেননা দল দুটিকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বলা হয়ে থাকে। ফুটবল মাঠের লড়াই ছাড়াও জাতিগতভাবেও দেশ দুটির মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। দুই দলের মধ্যে ১৯৩৫ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরেকবার উপভোগ করতে পারবে দর্শকরা। প্রতিবেশী দুই দেশের লড়াইকে বলা হয় ‘ক্ল্যাসিকো ডেল প্যাসিফিকো’। ১৮৭৯ থেকে ১৮৮৩ সাল পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কারণে তাদের মধ্যে বৈরী সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঐতিহাসিক ওই যুদ্ধকে ওয়ার অব প্যাসিফিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। শুধু তাই নয়, চিলি ও পেরুর মধ্যে মেরিটাইম সীমান্ত নিয়েও চরম বিরোধ আছে। যেটি নিয়ে বর্তমানে দেশ দুটির মধ্যে চলছে আইনী লড়াই। চিলি ও পেরুর লড়াই তাই উপভোগ্য হবে বলে মনে করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। বলিভিয়ার সেমিতে খেলার স্বপ্ন প্রথমার্ধে তিন মিনিটের ব্যবধানে চুরমার করে দেন বিগত তিন বছর ধরে ব্রাজিলে খেলা স্ট্রাইকার পাওলো গুয়েরেরো। জার্মানির বেয়ার্ন মিউনিখ ও হামবুর্গ ঘুরে ব্রাজিলে ঘাঁটি গড়া এই তারকা ম্যাচের ১৯ ও ২২ মিনিটে পরপর দুই গোল করে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন বলিভিয়াকে। মূলত এই দুই গোলেই পেরুর শেষ চার নিশ্চিত হয়ে যায়। বিরতির পর ম্যাচের ৭৪ মিনিটে ফের গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ৩১ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। এবারের আসরে এটি এখন পর্যন্ত প্রথম হ্যাটট্রিক (আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া ম্যাচের আগ পর্যন্ত)। এক ম্যাচে তিন গোল করেই সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে আসীন হয়েছেন গুয়েরেরো। তার সমান গোল করে একই কাতারে আছেন স্বাগতিক চিলির আর্টুরো ভিদাল। ম্যাচ শেষ হওয়ার ছয় মিনিট আগে বলিভিয়ার হয়ে সান্ত¡নার একটি গোল পরিশোধ করেন মরেনো। পেনাল্টি থেকে গোলটি করেন তিনি। শুরু থেকেই বলিভিয়ার বিরুদ্ধে প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে পেরু। ম্যাচের ১৯ মিনিটে সতীর্থ ফিওরেন্টিনার মিডফিল্ডার জুয়ান ম্যানুয়েল ভার্গাসের ক্রসে লাফিয়ে হেডে বলিভিয়ান গোলরক্ষক রোমেল কুইনোনেজকে পরাস্ত করে প্রথম গোল করেন গুয়েরেরো। তিন মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল নিয়ে বলিভিয়ার ডি বক্সে অনেকটা ফাঁকায় ঢুকে পড়েন গুয়েরেরো। এগিয়ে আসতে থাকা বলিভিয়ার গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জোরালো শটে গোল করেন ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা এই তারকা। ৩৭ মিনিটে তৃতীয় গোলের সুযোগ পেয়েছিল ১৯৬৩ সালের চ্যাম্পিয়ন পেরু। ফারফানের মাটি কামড়ানো শট বলিভিয়ার সাইডবারে লেগে প্রতিহত হয়। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে পেরুর ফারফানের আরেকটি শট বলিভিয়ার গোলবারে লেগে ফিরে আসে। ২৫ গজ দূর থেকে নেয়া ফ্রিকিক থেকে শটটি নেন ফারফান। বিরতির পর কিছুটা গুছিয়ে খেলতে থাকে বলিভিয়া। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বারবার আক্রমণে গিয়েও ব্যর্থ হওয়া বলিভিয়া ৫৭ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল ব্যবধান কমানোর। কিন্তু চুমাসেরোর বাঁকানো শট গোলবার ঘেঁষে বাইরে যায়। সর্বশেষ আট আসরের সাতটিতেই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা পেরু ব্যবধান আরও বাড়াতে মরিয়া হয়ে আক্রমণ শাণাতে থাকে। ৭৩ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোলও পায় তারা। লক্ষ্যভেদ করে দলের জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি হ্যাটট্রিকও করেন গুয়েরেরো। বলিভিয়ানদের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে গোল আদায় করেন তিনি। ৮৩ মিনিটে ব্যবধান কমায় বলিভিয়া। মোরালেসের বদলি হিসেবে দ্বিতীয়ার্ধে বলিভিয়ার হয়ে খেলতে নামা লিজিওকে নিজেদের ডি বক্সে অযথাই ফেলে দেন পেরুর ডিফেন্ডার। পেনাল্টি পায় বলিভিয়ানরা। স্পট কিক থেকে সান্ত¡নার গোল করেন মরেনো।
×