ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোপা আমেরিকা ফুটবল, গত আসরে হারের প্রতিশোধ নেয়ার সুবর্ণ সুযোগ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের, সেমিতে খেলতে আশাবাদী আসরের বর্তমান রানার্সআপরাও

শেষ আটের মঞ্চে মুখোমুখি ব্রাজিল-প্যারাগুয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৭ জুন ২০১৫

শেষ আটের মঞ্চে মুখোমুখি ব্রাজিল-প্যারাগুয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চার বছর আগে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল। সেবার টাইব্রেকারে নির্লজ্জ ব্যর্থতার নিদর্শন রেখেছিল সেলেসাওরা। প্রথম চারটি শট থেকে একটিও গোল করতে ব্যর্থ হন থিয়াগো, ফ্রেড, এলানোরা। যে কারণে প্যারাগুয়ের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। ভাগ্যের কী খেলা! সেই প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে চিলিতে চলমান এবারের কোপা আমেরিকা ফুটবলে একই মঞ্চে মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় ব্রাজিল। ২০১১ সালে হারের প্রতিশোধ নেয়ার তাই মোক্ষম সুযোগ পেয়েছে কার্লোস দুঙ্গার দল। এ লক্ষ্যে কোপার চলমান ৪৪তম আসরের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে। বাংলাদেশ সময় আজ শনিবার রাত ৩টা ৩০ মিনিটে চিলিতে মাঠে গড়াবে আকর্ষণীয় এই দ্বৈরথ। আগেরবার শেষ আটে মিশন শেষ হয়েছিল ব্রাজিলের। এবারও যে দলটি স্বস্তিতে আছে তা নয়। গ্রুপপর্বেই দলটি হারিয়েছে অধিনায়ক নেইমারকে। তারকা এই ফরোয়ার্ড কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে লালকার্ড দেখে চার ম্যাচের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন। যে কারণ তার কোপা মিশন শেষ হয়ে গেছে। নেইমারকে ছাড়াই তাই চ্যালেঞ্জে ব্রাজিল। শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশনে আসা দুঙ্গা বাহিনী অবশ্য নেইমারকে ছাড়াই জয়ের ছক কষছে। পুরো দলই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদের কথা শুনিয়েছে। শুধু তাই নয়, শিরোপার জন্যও ব্রাজিল প্রস্তুত বলে অভিমত রেখেছেন দলটির ফুটবলাররা। নেইমারকে হারানোয় ব্রাজিলের সাফল্যের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব কাঁধে বর্তেছে মিডফিল্ডার উইলিয়ান ও ফরোয়ার্ড রবার্টো ফিরমিনোর। সদ্যই লিভারপুলে নাম লেখানো ফিরমিনো জানিয়েছেন, নেইমারকে হারানোটা দলের জন্য বড় ক্ষতি, এরপরও ব্রাজিল শিরোপার লক্ষ্যেই খেলছে। বার্সিলোনা তারকাকে ছাড়া বিশ্বকাপের পর খেলা দুটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে ব্রাজিল। ফিরমিনোর বিশ্বাস অধিনায়কের অনুপস্থিতি দলে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। সাক্ষাতকারে ফিরমিনো বলেন, অবশ্যই আমরা ব্যথিত নেইমারকে হারিয়ে। সে থাকলে আমাদের কাজটা আরও সহজ হতো। কিন্তু সেলেসাওরা সব সময় সেরা সাফল্যের জন্যই খেলে থাকে। আমাদের এখনও অভিন্ন লক্ষ্য, সেটা হচ্ছে কোপা আমেরিকা জয় করা। তবে কাজটা যে সহজ হবে না সেটাও মানছেন লিভারপুলে নাম লেখানো এই ফুটবলার। তিনি বলেন, এটা (শিরোপা জয়) সহজ না। দক্ষিণ আমেরিকার সেরা হওয়া কঠিন কাজ। কারণ এখানকার সব দলই ভাল, সবারই লক্ষ্য থাকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। নেইমারের অনুপস্থিতির কারণে ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে ম্যাচে রবিনহোকে খেলান ব্রাজিলিয়ান কোচ কার্লোস দুঙ্গা। এ প্রসঙ্গে ফিরমিনো বলেন, রবিনহো আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত। এই বয়সেও (৩১ বছর) সে দারুণ খেলেছে, আমাদের সহযোগিতা করেছে। আমি আশা করছি প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধেও সে ভাল একটি ম্যাচ খেলবে। প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে গতবারের হতাশা কাটিয়ে এবার হাসতে চান ব্রাজিলের মিডফিল্ডার উইলিয়ান। তিনি বলেন, গত কোপা আমেরিকায় আমরা প্যারাগুয়ের কাছে হেরে বাদ পড়েছিলাম। কিন্তু আমার আশা এবার এর ব্যতিক্রম হবে। আশা করছি আমরা যেভাবে পছন্দ করি, সেরকম আনন্দ আর দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারব। কঠিন একটা প্রতিপক্ষকে হারাতে পারব। আমরা জয় ছাড়া কিছুই ভাবছি না। আমরা জিতলে, আর্জেন্টিনা তাদের ম্যাচে জয় পেলে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার দেখা হবে সেমিফাইনালে। আমি চাই এই লড়াই হোক। অবশ্য প্রতিপক্ষকে খাটো করে দেখছেন না উইলিয়ান। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, প্যারাগুয়ে লড়াকু প্রতিপক্ষ। পুরো ৯০ মিনিটের লড়াই হবে। বেশিও হতে পারে। কিন্তু জাতীয় দল হিসেবে আমরা জানি, তাদের বিরুদ্ধে কিভাবে খেলতে হয়। ব্রাজিল কোচ কার্লোস দুঙ্গা বলেন, আমরা আমাদের কৌশল নিয়ে খেলব। প্যারাগুয়েকে হাল্কাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। এবার সেটা কাটাতে চাই আমরা। প্যারাগুয়ে ও ব্রাজিল দু’দলই দু’দলকে সমীহ করছে। নেইমারের অনুপস্থিতি সেলেসাওদের জন্য যেমন শঙ্কাদায়ক, ঠিক তেমনি প্রতিপক্ষের জন্য স্বস্তিদায়ক। কিন্তু নেইমারকে ছাড়াও ব্রাজিলকে কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবে মানছে বর্তমান রানার্সআপরা। প্যারাগুয়ের ডিফেন্ডার পাওলো ডা সিলভা বলেছেন, ব্রাজিল খুবই বিপজ্জনক দল। নেইমার না থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতাটা কঠিন। সে ব্রাজিলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। বার্সিলোনার হয়ে সে অসাধারণ একটি মৌসুম কাটিয়েছে। কিন্তু তাকে ছাড়াও ব্রাজিল দুর্দান্ত টিম। সার্বিক পরিসংখ্যানে অবশ্য প্যারাগুয়ের চেয়ে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে ব্রাজিল। এ পর্যন্ত কোপা আমেরিকায় দল দুটি মুখোমুখি হয়েছে ২৯ বার। এতে ব্রাজিলের জয় ১৩ ম্যাচে। ৭টিতে প্যারাগুয়ের। বাকি ৯ ম্যাচ ড্র হয়।
×