ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কথায় নয় কাজে হোক

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৭ জুন ২০১৫

কথায় নয় কাজে হোক

ঈদকে সামনে রেখে ঘরে ফেরা স্বস্তিদায়ক করা এবং দুর্ভোগের আশঙ্কা হ্রাসের জন্য আয়োজনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। প্রতিবারই ঘরে ফেরা নিয়ে এই ধরনের উদ্যোগের কথা শোনা যায়। এই সময়টায় নানান প্রতিশ্রুতির বন্যাও বইয়ে দেয়া হয়। অথচ সড়ক-মহাসড়কে দুর্ভোগ আর লম্বা যানজটে পড়ার তিক্ত অভিজ্ঞতামুক্ত হওয়ার জো নেই ঘরমুখো যাত্রীদের। সে সড়ক, নৌ, রেলপথেই হোক, করুণ এই অবস্থা ঠিকই সামনে এসে দাঁড়ায়। শিকড়ের টান তীব্র বলেই দুর্ভোগ-যন্ত্রণার পরও সবাই আপনজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চায় ঈদের আনন্দ। এবারও ঈদে ফেরার দুশ্চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে। লাখ লাখ মানুষের কপালে আবারও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বলিরেখা। আবারও সেই ভাবনা ঘুরপাক খায়Ñ ঈদে নির্বিঘেœ ঘরে ফেরা হবে তো? সারাবছর নির্বিকার থাকার পর যেন ঈদের আগে ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠেন কর্মকর্তারা খানাখন্দ ভরাট করার জন্য। এবার বেহাল রাস্তাঘাটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বর্ষাকালের বাড়তি ভোগান্তিও। ভাঙ্গা সড়ক আর বর্ষা মিলে যেন মহাদুর্ভোগ। ঈদ এলেই হম্বিতম্বি হাঁক শোনা যায়। কিন্তু জনগণের দুর্ভোগ তেমন আর লাঘব হয় না। তার ওপর সড়ক ও মহাসড়কে চলে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি। অনেক সময় বিপদের মুখোমুখি পড়ে বাড়ি ফেরা হয়। যে কোন মূল্যে ঘরমুখো মানুষের জীবনের নিরাপত্তা যেমন জরুরী, তেমনি প্রয়োজন নির্বিঘেœ ঘরে ফেরার নিশ্চয়তা প্রদান। যার পুরোটাই বর্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর। মহাসড়কজুড়ে হাট-বাজার, দোকানপাট, অবৈধ বাসস্ট্যান্ডে সয়লাব। ঈদ এলে এসব উচ্ছেদের কথা বলা হয়। তবে তা সাময়িক। ফিটনেসহীন যানবাহনগুলো ঈদ এলে রাস্তায় নামে। অযান্ত্রিক যানের দাপট বাড়ে। অনেক ক্ষেত্রে বেশি ভাড়া গুনতে হয় যাত্রীদের। যাত্রীদের ওপর এটা জুলুমে পরিণত হয়ে আসছে প্রতি ঈদেই। নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহনের কোন রেকর্ড মেলে না। এবারও বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিয়ে সড়ক, নৌ ও রেলমন্ত্রীরা বেশ টাটকা, সতেজ আশাপ্রদ অনেক কথাই তুলে ধরেছেন বাড়ি ফেরাদের প্রতি। কিন্তু সব কথাই কি ইথারে মিলিয়ে যাবে? সারাবছর মন্ত্রীরা নির্বিকার থেকে ঈদের আগে যে ভরসা দেন তা এবারের বর্ষাতেই যেন ভেসে যাচ্ছে। সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং উদ্ধারের কোন সুব্যবস্থা না রেখে এবারও নানা উপাদেয় কথা বলা হয়েছে। দুর্ভোগ দূর করার পরিকল্পনাটা আজও প্রণয়ন করা হয়নি। নানা অযোগ্য, অদক্ষদের পদে বসিয়ে রেখে নির্বিঘেœ বাড়ি ফেরার কেচ্ছা আর কত শুনতে হবে যাত্রীদের? ঈদে বাড়ি ফেরা নির্বিঘœ করার জন্য গৃহীত পরিকল্পনা কার্যকর করা না হলে সবই বৃথা। ঈদের আনন্দ যেন ম্লান করা না হয় সেই প্রত্যাশা সবার মতো আমাদেরও।
×