ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গ্রীসের প্রতি মেরকেল ও ওলাঁদের হুঁশিয়ারি

ইউরোতে থাকতে হলে চুক্তি করো

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৭ জুন ২০১৫

ইউরোতে থাকতে হলে চুক্তি করো

ঋণখেলাপী হওয়া এবং ইউরো থেকে বিদায় নেয়ার সম্ভাবনা এড়াতে হলে গ্রীসকে অবশ্যই শনিবার এর ঋণদাতাদের সঙ্গে কোন ঋণ চুক্তিতে পৌঁছতে হবে। জার্মান ও ফরাসি নেতৃবৃন্দ এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এদিকে, কয়েক দফা উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক সত্ত্বেও গ্রীস ও এর ঋণদাতাদের মধ্যে এখনও এর ঋণ সঙ্কট নিয়ে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। খবর এএফপি ও বিবিসির। এ্যাঞ্জেলা মেরকেল ও ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ গ্রীস প্রসঙ্গে একই দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করেন। এর আগে অপরিহার্য বেইল আউট তহবিল (দেউলিয়াত্ব ঠেকাতে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা) ছাড় করার বিষয়ে কোন মতৈক্য ছাড়াই ইউরোজোন অর্থমন্ত্রীদের আরও একটি বৈঠক ভেঙ্গে যায়। এথেন্সের আইএমএফের পাওনা বিশাল ১৫০ কোটি ইউরোর (১৭০ কোটি ডলার) ঋণ পরিশোধ করতে অর্থের প্রয়োজন। ৩০ জুন ঋণ পরিশোধের শেষ তারিখ। এতে ব্যর্থ হলে একক মুদ্রা ইউরোতে এবং এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নে গ্রীসের অবস্থান ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। চ্যান্সেলর মেরকেল ব্রাসেলসে ইইউর এক শীর্ষ বৈঠকের পর শুক্রবার বলেন, আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত, কারণ সময় শেষ হয়ে আসছে এবং ইউরো গ্রুপের (ইউরোজোন অর্থমন্ত্রীদের) শনিবারের বৈঠকেই ভবিষ্যত নির্ধারিত হতে পারে। তিনি বলেন, শনিবার কোন সমাধান খুঁজে পেতে অবশ্যই সবকিছু করতে হবে এ ধারণা সব নেতাই সমর্থন করেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন যে, তিনি গ্রীসের জন্য এক ‘স্থায়ী’ চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করতে সহায়তা করবেন। গ্রীসের বামপন্থী সরকার জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এর ইইউ আইএমএফ ঋণদাতাদের পেশ করা সংস্কার দাবি নিয়ে দর কষাকষি করে এসেছে। তিনি বলেন, আমি শনিবারের বৈঠককে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। কারণ গ্রীকদের ঋণ পরিশোধ করার শেষ সময় ৩০ জুন দ্রুত এগিয়ে আসছে। ইউরোভুক্ত ১৯টি দেশের অর্থমন্ত্রীদের আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল এমন এক চুক্তি উদ্ভাবন করা, যা ইইউ নেতারা তাদের শীর্ষ বৈঠকে অনুমোদন করতে পারতেন। কিন্তু সেই আলোচনা তিক্ত পরিবেশে ভেঙ্গে পড়ে। কারণ গ্রীস ও এর ঋণদাতারা পেনশন, ভ্যাট সরকারী ব্যয় হ্রাস নিয়ে মতানৈক্যের মধ্যে মন্ত্রীদের কাছে পরস্পরবিরোধী পরিকল্পনা পর্যন্ত পেশ করে। ইইউ নেতারা বৃহস্পতিবার তাদের শীর্ষ বৈঠকে অনির্ধারিতভাবে গ্রীস নিয়ে দু’ঘণ্টা কথা বলেন। গ্রীস যাতে চলতি মাস শেষ হওয়ার আগেই আইএমএফের পাওনা ঋণ পরিশোধ করতে পারে, সেজন্য ঋণদাতাদের এর বেইল আউটের অবশিষ্ট ৭২০ কোটি ইউরো ছাড় করতে হবে। কিন্তু এথেন্স নতুন সংস্কারে রাজি না হওয়া পর্যন্ত ঋণদাতারা এতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে। গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপরাস দেশটির ঋণদাতাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে দীর্ঘসময় কথা বলেও কোন চুক্তি পৌঁছতে পারেননি। এথেন্স মঙ্গলবারের মধ্যে আইএমএফের ঋণ হিসেবে পাওনা ১৫০ কোটি ইউরো পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে সে ঋণখেলাপী ঘোষিত হতে পারে। ব্রাসেলসে ইইউ নেতাদের বৈঠকের পর মেরকেল আলোচনায় কোন ফল হচ্ছে না বলে সতর্ক করে দেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখনও কোন অগ্রগতি অর্জন করতে পারিনি। কোন কোন ক্ষেত্রে মনে হয় আমরা যেন পিছনের দিকেই যাচ্ছি। যদি গ্রীস ঋণখেলাপী হয় তা হলে সে ইউরোজোন ত্যাগ করতে পারে। এ ঘটনা সম্ভবত ইউরোপের অবশিষ্টাংশ ও বিশ্ব অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। গ্রীসের ঋণখেলাপী হওয়া ঠেকানোর চেষ্টায় অর্থমন্ত্রীরা এক সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে চতুর্থবারের মত বৈঠকে মিলিত হন। তারা শনিবার আবার বৈঠক করবেন বলে কথা রয়েছে। ইইউর এক কূটনীতিক বিবিসিকে বলেন, ইউরোগ্রুপকে তখন হ্যাঁ বা না কোন একটা সিদ্ধান্ত অবশ্যই নিতে হবে। আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টিন ল্যাগার্ড বলেন, গ্রীক পক্ষ বৃহস্পতিবার শেষ মুহূর্তে এক পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছে এবং এর মূল্যায়ন করতে আরও সময় দরকার। সংবাদদাতারা বলছেন, ঋণদাতারা যে রূপ প্রস্তাব করেছিলেন, গ্রীক পরিকল্পনায় সেই তুলনায় আরও বেশি কর বৃদ্ধি এবং আরও কম ব্যয় হ্রাসের প্রস্তাব করা হয়েছে।
×