ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৃষ্টি জলাবদ্ধতা ও যানজটে স্তব্ধ হয়ে গেছে রাজধানী

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৬ জুন ২০১৫

বৃষ্টি জলাবদ্ধতা ও যানজটে স্তব্ধ হয়ে গেছে রাজধানী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টানা বর্ষণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের মানুষ। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল রয়েছে। বৃষ্টিপাত আরও দু’তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। বৃহস্পতিবারও বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও যানজটে থমকে যায় রাজধানী। নগরীর রাস্তাঘাট ও গলিপথ হয়ে ওঠে কর্দমাক্ত ও অস্বাস্থ্যকর। জলাবদ্ধতার পাশাপাশি রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজও রাজধানী জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। দেশের অনেক জেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আর দেশের অনেক অঞ্চলে ডুবে গেছে কয়েকশ’ স্কুল, বিপণিবিতান, বসতবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি। পানিতে ভেসে গেছে কয়েকশ’ মাছের ঘের এবং পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। রাঙ্গামাটির পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত কয়েক হাজার লোক হুমকির মুখে পড়েছে। বান্দরবানে দু’জন নিখোঁজ রয়েছে। বান্দরবানের সঙ্গে রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর পরিস্থিতি আগের দিন বুধবারের চেয়ে অবনতি হয় এবং শহরের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এলাকাই ছিল পানির নিচে। তবে সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর থেকে সতর্কতা সঙ্কেত প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। পর্যবেক্ষণাধীন ৮৪টি পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে বৃহস্পতিবার ৪৫টির পানি বৃদ্ধি এবং ৩৬টির পানি হ্রাস পায়। আর বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ৪টি নদীর পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনাও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদীসমূহের বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং গঙ্গা-পদ্মা ও সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা ও সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় হ্রাস পেতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পশ্চিমাংশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। আজ শুক্রবার রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। আবহাওয়াবিদ মোঃ আবুল কালাম জানান, দেশের আবহাওয়ায় মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় এবং বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প চলে আসায় সারাদেশে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কেবল বর্ষা মৌসুমের প্রথম সপ্তাহ পার হয়েছে, এখনও দেড় মাস স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে, তবে আগামী ৭২ ঘণ্টা পরে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সারাদেশে থেমে থেমে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তা কমে আসবে। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে রাতে সারাদেশের তাপমাত্রাও ১ থেকে দেড় ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে আসবে। এদিকে গত তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানীতে। বৃহস্পতিবার বেড়ে যায় বৃষ্টির পরিমাণ। আর বৃষ্টি মানেই জলাবদ্ধতা। যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসা রোডে জলাবদ্ধতা চলছে গত দু’ দিন ধরেই। বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে ওই এলাকার পানির পরিমাণ আরও বেড়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই নগরীর যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, সেই সব এলাকাতে জলাবদ্ধতা যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবারও ওই সব এলাকা বিশেষ করে রাজধানীর মানিক মিয়া এ্যাভিনিউ, রাজাবাজার, তেজতুরি বাজার, কাওরান বাজার, মৌচাক মোড়, পুলিশ লাইন, নাখালপাড়া, তেজকুনি পাড়া, খিলগাঁও, পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোড, কাকরাইল, মোহাম্মদপুর, আদাবর, কল্যাণপুর, টিকাটুলি, হাটখোলা, রাজধানী সুপার মার্কেট, নিউমার্কেট, ধানম-ি ২৭ নং রোডসহ অনেক স্থানে সৃষ্টি হয় সাময়িক জলাবদ্ধতা। গত কয়েক মাস ধরেই নগরজুড়ে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। সংস্কারের অভাব ও খোঁড়াখুঁড়ির কারণে নগরজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। বৃষ্টির পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে ওই সব জায়গা। এমনিতেই ব্যবহারের অনুপযোগী রাজধানীর ৪০ ভাগের বেশি রাস্তা। রাজপথ থেকে অলিগলি সবখানেই রাস্তার বেহাল দশা। কোথাও বিশাল গর্ত। সংস্কারের অভাবে কোথাও কোথাও রাস্তা পরিণত হয়েছে ড্রেনে। তবে রাজপথ থেকে রাজধানীর অলিগলির চিত্র খুবই করুণ। সংস্কার না থাকায় দুর্ভোগের শেষ নেই নগরবাসীর। কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে রাস্তা মেরামতে পট হোলস কর্মসূচী দিয়ে লোকদেখানোর কাজ চলে প্রতিবছরই। সংস্কারের ক’দিন পরই বেহাল চিত্র ফুটে ওঠে। প্রতিবছরই এমন অভিজ্ঞতা পেতে হয় নগরবাসীদের। বিশেষ করে বৃষ্টিপাত হলে নগরীবাসীর দুর্ভোগের মাত্রা যেন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। রাস্তার ওপর জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে পা রাখতে গিয়ে অজান্তেই গর্তে পড়তে হয় পথচারীদের। স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, চট্টগ্রামে টানা চারদিনের অব্যাহত বর্ষণে বুধবার থেকে নগরীর সড়কগুলোর অধিকাংশই পানির নিচে চলে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় জনসাধারণকে। সড়কে যানবাহন চলাচল কমে গেছে। ফলে যাত্রী সাধারণকে বিভিন্ন পয়েন্টে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়। বড় যানবাহন কম হওয়ায় বাস ছাড়া অন্য পরিবহনগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করে। বৃহস্পতিবার বিকেলেও বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। তবে সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর থেকে সতর্কতা সঙ্কেত প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ১১২ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। সমুদ্র বন্দরগুলোর জন্য ৩ নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত থাকলেও তা প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর পরিস্থিতি আগের দিন বুধবারের চেয়ে অবনতি হয়। শহরের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এলাকাই ছিল পানির নিচে। বিশেষ করে শুলকবহর, চাক্তাই, কাপাসগোলা, আগ্রাবাদ সিডিএ, ছোটপুল, সাগরিকা, প্রবর্তক মোড়, তিনপুল, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার ভবনগুলোর নিচতলায় পানি ঢুকে পড়ে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দোকানে পানি ঢুকে পড়ায় নষ্ট হয় মালামাল। বৃষ্টির সঙ্গে জোয়ার থাকায় পানি নিষ্কাশনে ধীরগতির কারণে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই, সীতাকুন্ড, বাঁশখালী, আনোয়ারা, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়াসহ সকল উপজেলায় একই চিত্র। পানি থৈ থৈ করছে চারদিকে। বৃষ্টির কারণে পাহাড়ী ঢলও নেমেছে সমতলে। ফলে উপরের পানি ও পাহাড়ের পানি মিলে ডুবিয়েছে গ্রাম্য জনপদ। স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে জানান, টানা চার দিনের বর্ষণে নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওইসব এলাকার বাসিন্দা। নগরীর বেলতলা, পলাশপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ওইসব এলাকার প্রতিটি রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত। বাড়িঘরেও পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়া নগরীর কেডিসি এলাকা ও স্টেডিয়াম এলাকার নিম্নাঞ্চল পানিতে ডুবে রয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে জানান, কক্সবাজারে আটটি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে তিন দিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে বাঁকখালী, নাফ নদী ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে নদীতীরবর্তী এলাকার জনবসতি, একাধিক গ্রামীণ সড়ক, চিংড়ি ঘের এবং ফলের ক্ষেত। মাতামুহুরীতে প্রবল স্রোতের কারণে নদীর তীরে স্থিত ১ লাখ ৩২ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের একটি পিলার যে কোন মুহূর্তে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৈদ্যুতিক ওই পিলারটি নদীর গর্ভে তলিয়ে গেলে যে কোন সময় কক্সবাজার জেলার বিদ্যুত ব্যবস্থা বন্ধের আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি করেছেন লক্ষ্যারচর ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মানিক। তিন দিন ধরে ভারি বর্ষণ, বাঁকখালী ও মাতামুহুরী নদীর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে কৈয়ারবিল, কোনাখালী, সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, বরইতলী, হারবাং বিভিন্ন নিচু এলাকা ও পৌরসভার খোয়াজনগর, নামার চিরিংগা, হালকাকারা, আমানচর, কাজিরপাড়া, বাটাখালী, কক্সবাজার জেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া ও রামু উপজেলার বেশ কিছু এলাকার কমপক্ষে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে পর্যটন শহরের একাধিক সড়ক, চরমে পৌঁছেছে জনদুর্ভোগ। শুধু কক্সবাজার শহরের অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গামাটি থেকে জানান, চার দিনের টানা প্রবল বর্ষণে রাঙ্গামাটির জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অবিরাম বর্ষণের ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। যার ফলে শহরের শিমুলতলি, তবলছড়ি, রিজার্ভ বাজার, বনরূপা ও কলেজ গেট এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত কয়েক হাজার লোক হুমকির মুখে পড়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা থেকে জানান, ভোলায় গত ৪ দিন ধরে প্রবল বর্ষণ ও অতি জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। অতিবর্ষণে তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, বসতঘর, রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে ঝড়ো বাতাসে বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সমগ্র জেলা বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে চরফ্যাশনের কুকরী-মুকরী, ঢালচর, চর পাতিলা, লালমোহনের পেয়ারী মোহন, লর্ডহার্ডিঞ্জ, কচুয়াখালীর চর, মনপুরা উপজেলার কলাতলীর চর, দাসেরহাট, চর নিজাম ও ঢালচর, দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া, বৈকণ্ঠপুর, নেয়ামতপুর, হাজিপুর, মদনপুরা, ভোলার সদর উপজেলার রামদাসপুর, মাঝের চর প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ভোলা শহরের পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন মানুষ। বৃষ্টির কারণে অনেকেই গৃহবন্দী। নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান থেকে জানান, চার দিনের টানা বর্ষণে বন্যায় বান্দরবানের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সড়ক প্লাবিত হওয়ার কারণে দ্বিতীয় দিনের মতো বান্দরবানের সঙ্গে রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে প্রবল বর্ষণে বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে তলিয়ে গেছে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। জেলার সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলের শত শত ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে, পানিবন্দী আছে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। আলীকদমের মাতামুহুরী নদীর পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ রয়েছে ২ জন। টানা বৃষ্টিতে সাঙ্গু নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে পর্যটনস্পট তিন্দু ও রেমাক্রি’র নৌ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে গত মঙ্গলবার থেকে। নদী পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপজ্জনক হওয়ার কারণে জেলার থানছি উপজেলার নৌঘাট থেকে কোন নৌযান তিন্দু ও রেমাক্রিী উদ্দ্যেশে ছেড়ে যায়নি। উক্ত পর্যটন স্পটগুলোতে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার ফলে নৌ যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীল স্থানীয় আদিবাসী তথা পর্যটকরা। নিজস্ব সংবাদদাতা, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর, থেকে জানান, ভারিবর্ষণে লক্ষ্মীপুরে রায়পুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। বুধবার শেষ রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত টানা বর্ষণে উপজেলাজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পৌর শহরের রোডেই ২-৩ ফুট পানি জমেছে। নিচু এলাকার কোথাও কোথাও ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত পানি জমেছে। বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ রুটের ভাঙ্গাচোড়া রাস্তায় যান চলাচল। যেসব কৃষকের ফসল এখনও ঘরে ওঠেনি তাদের মাথায় হাত পড়েছে। রায়পুর পৌরশহরের উপজেলা পরিষদ রোডের বাসিন্দা দুলাল জানান, তার ৫০ বছর বয়সে এ সড়কে পানি উঠতে দেখেননি। থানার পাশঘেঁষা হায়দরগঞ্জ রোডে হাঁটুপানি হয়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ থেকে জানান, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে নিচু এলাকাগুলোর রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। অনেক স্থানে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করছে মানুষ। এছাড়া চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন জলাবদ্ধতায় আটকেপড়া লোকজন।
×