ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চেক ডিজঅনার মামলা

ত্বকীর বাবার এক বছর জেল, দু’কোটি টাকা জরিমানা

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৫ জুন ২০১৫

ত্বকীর বাবার এক বছর জেল, দু’কোটি টাকা জরিমানা

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, না’গঞ্জ, ২৪ জুন ॥ নারায়ণগঞ্জে ৭০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলায় নিহত মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বিকে এক বছরের সশ্রম কারাদ- ও ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। বুধবার দুপুরে না’গঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় দেন। তবে রায় প্রদানকালে রফিউর রাব্বি অনুপস্থিত ছিলেন। মামলার বাদী ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন আহম্মেদের দায়ের করা মামলায় আদালত এই রায় দেন। জালাল উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী দলীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের মামাশ্বশুর। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মাসুদ উর রউফ সাংবাদিকদের জানান, বিবাদী রফিউর রাব্বি বাদী জালাল উদ্দিন আহমেদের কাছে ৩০ শতক জমি বিক্রি করেন। এ জমি বাদী জালাল উদ্দিন গ্রহণ না করে টাকা ফেরত চাইলে রফিউর রাব্বি তাকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অনুকূলে ৭০ লাখ টাকার দু’টি চেক প্রদান করেন। ব্যাংক থেকে চেক ডিজঅনার হলে জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ২০১২ সালে না’গঞ্জ অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। ১নং দায়রা জজ আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হয় যে, তিনি এ্যাকাউন্টে টাকা না থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন আহম্মেদকে দুটি চেক দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন। এই ঘটনায় টাকা পরিশোধের জন্য বাদী জালাল আহেম্মদ বিবাদী রফিউর রাব্বিকে উকিল নোটিস দেন। তারপরেও টাকা পরিশোধ না করায় তিনি আদালতে ওই বছরের ২৫ এপ্রিল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এনআই এ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় ওই মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। ওই মামলার রায়ে আদালত বিবাদী রফিউর রাব্বির বিরুদ্ধে এই রায় প্রদান করেন। রায়ে রফিউর রাব্বিকে এক বছরের কারাদ- ও দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন। এর মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা মামলার বাদীকে এবং বাকি ৭০ লাখ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এদিকে মামলার বিবাদী রফিউর রাব্বির পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম আদালতের এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান, আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করব। তিনি আরও জানান, রফিউর রাব্বির ব্যবসায়ীকে অংশীদার শামীম কাদরি রাব্বির কাছ থেকে ৩০ শতাংশ জমি কেনেন। সেই জমিটি শামীম কাদরীর কাছ থেকে ব্যবসায়ী জালাল আহম্মেদ ক্রয় করেন। জালাল উদ্দিন জমিটি নামজারি করতে গেলে জনৈক দলিল উদ্দিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে নামজারি বাতিল চেয়ে মিস কেস দায়ের করেন। দলিল উদ্দিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে নামজারি বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় জমিটি রফিউর রাব্বিকে ফেরত দেয়া হবে এবং রফিউর রাব্বি ৭০ লাখ টাকা প্রদান করবেন। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত এ্যাডভোকেট মাসুদ-উর রউফের কাছে দুটি তারিখ বিহীন খালি চেক রক্ষিত রাখেন রফিউর রাব্বি। কিন্তু নগদ টাকা দেয়ার পরেও জালাল উদ্দিন আহম্মেদ জমি ফেরত দেননি। উল্টো মাসুদ উর রউফের কাছে রাখা চেক দুটিতে নিজ হাতে টাকার অঙ্ক বসিয়ে ব্যাংকে জমা দিয়ে ডিজঅনার করিয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
×