স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান ক্রিকেটে মোহাম্মদ আমিরের আগমনটাও ছিল বিশ্ব কাঁপানো। অসাধারণ পেস বোলিং, সঙ্গে টেল-এ্যান্ডে চমৎকার ব্যাটিংয়ের জন্য অনেকে তার মাঝে গ্রেট ওয়াসিম আকরামের ছায়া দেখতেন। সব তছনছ করে দিয়েছে, লর্ডস টেস্টের সেই ফিক্সিং কলঙ্ক। এবার সেই আমির শিরোনামে এসেছেন ভিন্ন কারণে। অভিষেকে টানা দুই ম্যাচে ১১ উইকেট নেয়া টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ক্রিকেটে তার আদর্শ আমির। এ কথা জানার পর যারপরনাই খুশি নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার অপেক্ষায় থাকা পাকিস্তানী স্পিডস্টার।
‘এটা শুনতে খুবই ভাল লাগছে যে, মুস্তাফিজ আমাকে আইডল মনে করছে। আমি বলব, ওর সামনে দুর্দান্ত এক ক্যারিয়ার অপেক্ষা করছে, কারণ ওর বল খেলা ব্যাটসম্যানের পক্ষে সহজ নয়। একজন পেসার হিসেবে সব অস্ত্রই ওর ভা-ারে রয়েছে, আর ক্রিকেটের মাথাটাও দারুণ। সত্যি বলতে, ওর মন্তব্যে আমি গর্ব অনুভব করছি।’ স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন ২৩ বছর বয়সী আমির। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি২০ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আগমন মুস্তাফিজের। এরপর ভারতের বিপক্ষে খেলেছেন দুটি ওয়ানডে। মাত্র তিন ম্যাচের ক্যারিয়ারে বিশ্ব ক্রিকেটের ‘অপার বিস্ময়’ হয়ে উঠেছেন সাতক্ষীরার এই তারুণ। প্রথমে ৫ ও রবিবার দ্বিতীয় ম্যাচে ৬, মোট ১১ উইকেট নিয়ে ওয়ানডের ইতিহাসকে নতুন করে রচনা করেছেন তিনি।
ভারতীয় সব বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানের জন্য ১৯ বছর বয়সী বাঁহাতির দুরন্ত সব সুইং ও কাটার হয়ে উঠেছে দুর্বোধ্য। দুুই ম্যাচই বিশ্বক্রিকেটে গবেষণার নাম মুস্তাফিজ। সেই তিনি যাকে আইডল মানেন, গর্বিত তো তার হওয়ারই কথা। প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হওয়ার পর ভারতীয় এক সাংবাদিকের প্রশ্নে মুস্তাফিজ বলেছিলেন, ‘বোলিংয়ে তার আদর্শ পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ আমির।’ ওই সাংবাদকি অবধারিত পাল্টা প্রশ্ন ছিল, ফিক্সিং কলঙ্কের কথা জানার পরও? মৃদুভাষী মুস্তাফিজের উত্তরÑ ‘আমি কেবল ওর বোলিংটাই অনুসরণ করি।’ ২০০৯Ñএর জুলাই থেকে ঠিক এক বছর মাঠে ছিলেন আমির। কি দুরন্ত ১২ মাসই না কাটিয়েছেন।
১৪ টেস্টে ৫১ ও ১৫ ওয়ানডেতে ২৫ উইকেট নিয়ে তখন আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। ২০১০ সালে পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সফরে লর্ডস টেস্টে সে সময়ের অধিনায়ক সালমান বাট ও পেসার মোহাম্মদ আসিফের সঙ্গে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়েন ১৮ বছরের আমির। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এরই মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা শুরু করেছেনে। পারফর্ম করলে, আগামী বছরের শুরুতেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেখা যেতে পারে পাঞ্জাবে জন্ম নেয়া বাঁহাতি-স্পিডস্টারকে। শেষ ওয়ানডেতে দারুণ অর্জনের সামনে দাঁড়িয়ে মুস্তাফিজ। আজও ৫ উইকেট পেলে আরেক পাকিস্তানী গ্রেট ওয়াকার ইউনুসের পর টানা তিন ওয়ানডেতে পাঁচ শিকারের দ্বিতীয় নজির সৃষ্টি করবেন তিনি- যদিও ওয়াকারের সেটি (১৯৯০ সালে) অভিষেক ছিল না।
৫ উইকেট না পেলেও আরেকটি রেকর্ডের হাতছানি মুস্তাফিজের সামনে। আজ আর ৩ উইকেট পেলে তিন ম্যাচের সিরিজে সর্বোচ্চ শিকারের নতুন রেকর্ড গড়বেন তিনি। ১৩ উইকেট নিয়ে যেখানে শীর্ষে রায়ান হ্যারিস- ২০১০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই রেকর্ড গড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার। ম্যাচ প্রতি গড়ে যার উইকেটে সাড়ে ৫ করে তার পক্ষে ৩ উইকেট কোন বিষয়ই না!
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: