ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

১৪ সাল পর্যন্ত ব্র্যাক কর্মসূচীর আওতায় এসেছে ১৬ লাখ মানুষ

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ২৪ জুন ২০১৫

১৪ সাল পর্যন্ত ব্র্যাক কর্মসূচীর আওতায় এসেছে ১৬ লাখ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক দারিদ্র্য বিমোচনে ২০০২ সাল থেকে অতি দরিদ্র কর্মসূচীর মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তাদের এই কর্মসূচীর আওতায় এসেছে ১৬ লাখ মানুষ। যার মধ্যে ৯৫ শতাংশেরই হতদরিদ্র দশা থেকে উত্তরণ ঘটেছে। ২০১৪ সাল এসে তাদের ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫ লাখ, আর বছরটিতে তারা প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ঋণ প্রদান করে। একই সময়ে ব্র্যাকের স্কুল থেকে ৪৩ হাজার ৮৪৩ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা অংশ নেয়, যার মধ্যে পাসের হার ৯৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ব্র্যাকের কর্ম এলাকায় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে ৯৫ শতাংশ সাফল্য এসেছে দাবি প্রতিষ্ঠানটির। সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন কর্মপন্থায় দেশে শিশু মৃত্যুর হার ৯২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে ব্র্যাকের বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৪ প্রকাশকালে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে এ সব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের স্ট্র্যাটেজি, কমিউনিকেশন এ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর আসিফ সালেহ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ড. মুহাম্মাদ মুসা। এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে সরকারের সহযোগী হিসেবে ব্র্যাক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণে ব্র্যাকের কার্যক্রম দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের যে অগ্রগতি ঘটেছে তা সরকারী-বেসরকরী এবং উন্নয়ন সংস্থার সমন্বিত প্রভাবেই সম্ভব হয়েছে। ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ড. মুহাম্মাদ মুসা বলেন, ব্র্যাকের ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল হবে নগর দারিদ্র্য বিমোচন, শহরমুখী জনস্রোতকে কাজে লাগানো, নারীর প্রতি সহিংসতারোধ এবং যুবদক্ষতা উন্নয়নে ভূমিকা রাখা। দারিদ্র্র্য প্রতিরোধে আমাদের অনেক কর্মসূচী ইতোমধ্যে সফল হয়েছে, এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। এ দেশের যারা দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে বিশেষ করে নারীরা তাদের জীবনমান ও দৈনন্দিন কর্মকা-ে বেশ অগ্রগতি দেখিয়েছে, বিশেষ করে ব্র্যাক, সরকার ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টায় তা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় ব্র্যাক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করে বলা হয়, ২০১৪ সালে ব্র্যাকের স্কুল থেকে ৪৩ হাজার ৮৪৩ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় (পিএসসি) অংশ নেয়। এর মধ্যে পাসের হার ৯৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। উল্লেখ্য, ব্র্যাকের এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬১ দশমিক ১৭ শতাংশই মেয়ে, আর পিএসসিতে তাদের পাসের হার ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ। ব্র্যাক প্রাথমিক শিক্ষায় অবদান রাখলেও উচ্চশিক্ষায় তেমন অবদান কেন নেই এমন প্রশ্নের জবাবে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালকের উপদেষ্টা ড. মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা শুধুমাত্র প্রাথমিক শিক্ষায় নয়, উচ্চশিক্ষায়ও অবদান রাখছি। তবে এটা সত্য যে ব্র্যাক বিশ্বদ্যিালয়ে পড়তে মোটা অঙ্কের টাকা লাগে। তবে এটাও লক্ষ্য রাখতে হবে অন্য যে কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় আমাদের আয় কম। এমডিজির অপর দুটি অঙ্গীকার শিশুমৃত্যু হ্রাস ও মাতৃস্বাস্থ্য উন্নয়নেও ব্র্যাক সমানতালে অবদান রাখছে বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়। ২০১৪ সালে শিশুমৃত্যুরোধে জাতীয় পর্যায়ে ৮৩ শতাংশ শিশু টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় এসেছে। আর ৬৪ জেলায় ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কর্মসূচীর আওতাভুক্ত এলাকায় টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় এসেছে ৯১ শতাংশ শিশু। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, যক্ষ্মার চিকিৎসায় জাতীয় পর্যায়ে যেখানে ৮৫ শতাংশ সাফল্য এসেছে, সেখানে ব্র্যাকের কর্ম এলাকায় সাফল্য এসেছে ৯৫ শতাংশ। এছাড়া ব্র্যাকের ওয়াটার, স্যানিটেশন এ্যান্ড হাইজিন (ওয়াশ) কর্মসূচী ২৫০টি উপজেলায় ৩ কোটি ২০ লাখেরও বেশি স্যানিটারি ল্যাট্রিন বিতরণ করেছে।
×