ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে বাজেট আলোচনা

যারা উন্নয়ন অগ্রগতি চায় না তারা সমালোচনা করছে

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২৪ জুন ২০১৫

যারা উন্নয়ন অগ্রগতি চায় না তারা সমালোচনা করছে

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা বলেছেন, যাদের স্বপ্ন নেই, উচ্চাভিলাষ নেই, দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি দেখতে চায় না- তারাই প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করছে। তবে দুর্নীতির টুঁটি চেপে ধরে সুশাসন নিশ্চিত করতে না পারলে বাজেট বাস্তবায়ন অসম্ভব হবে। তাঁরা সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১০ হাজার টাকা এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তাঁরা এসব কথা বলেন। বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী, প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন, আবদুর রহমান, মোঃ তাজুল ইসলাম, আনোয়ারুল আবেদীন খান, মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী, মোঃ হাবিবুর রহমান, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, শামসুল হক চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান, আজিজুল হক আরজু, জাসদের মইন উদ্দিন খান বাদল, জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান ও ইয়াহিয়া চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস, পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার অপরাজনীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা উন্নয়ন ও শান্তির দুয়ার খুলে দেশকে সবদিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে শেখ হাসিনার দৃঢ় পদক্ষেপ সারাবিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছেন। তাই সারাদেশে আজ একই সেøাগান উঠেছে- যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে দেশ, ততদিন পথ হারাবে না বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ভয়াল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় কোনভাবেই খালেদা জিয়া এড়াতে পারবেন না। সারাদেশের মানুষ এই নৃশংস হত্যাকা-ের উপযুক্ত বিচার চায়। খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্রের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন, আর তাঁর পুত্র তারেক রহমান এ দেশে মাফিয়া রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু এ দেশের জন্য ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। কোন অপশক্তিই বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির চাকাকে স্তব্ধ করে দিতে পারবে না। শেষাংশে ‘আমার সকল দুখের প্রদীপ’Ñ এই রবীন্দ্রসঙ্গীতের কটি লাইন গেয়েই তাঁর বক্তব্য শেষ করেন মন্ত্রী। জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দিন খান বাদল বলেন, বাংলাদেশ বডার গার্ড (বিজিবি) নায়েক রাজ্জাককে আটকে রেখে সমস্ত আন্তর্জাতিক নীতি-নৈতিকতাকে উপেক্ষা করেছে। এটা আমাদের জন্য অপমানজনক। আমাদের সৈন্যকে তারা আটকে রেখেছে। কোন আন্তর্জাতিক নীতিকেই তারা মানেনি। এটা হতে পারে না। বিষয়টি আমাদের লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। শুনলাম ছেড়ে দেবে। আমাদেরও কিছু বলার আছে। বিষয়টি সরকারকে ভাবতে হবে। তিনি বলেন, একটা উন্নয়নশীল সরকারের সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নের ছাপ রাখতে হবে। যা এ সরকার করে যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যা ভাতা দেন একই দেবেন। এক টাকা দিলে এক টাকাই দেন, তবে সবাইকে সমান দিতে হবে। সরকারী দলের আবদুর রহমান বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জ্বালাও-পোড়াও ও ধ্বংসাত্মক কর্মকা- চালিয়ে দেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন। বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত ও পাকিস্তানের প্রদেশ বানিয়ে চাঁদতারা পতাকা উড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। তার কারণেই দেশের প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগে উন্নীত হয়নি। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, দুর্নীতির টুঁটি চেপে ধরতে না পারলে এবং দেশে সুশাসন নিশ্চিত করা না গেলে এই বিশাল বাজেট কোনদিনই বাস্তবায়িত করা যাবে না। সন্ত্রাস-দুর্নীতি ও সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই। তিনি সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১০ হাজার এবং বিদেশে পাচারকৃত অর্থের ওপর করারোপ করে তা ফিরিয়ে আনার জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি দাবি জানান। আজিজুল হক আরজু বলেন, যাদের স্বপ্ন নেই, উচ্চাভিলাষ নেই- তারাই প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়িত হবে না বলে ধুম্রজাল সৃষ্টি করেছে।
×