ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গ্রুপ সেরা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ২৩ জুন ২০১৫

গ্রুপ সেরা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিষেধাজ্ঞার কারণে ছিলেন না প্রাণভোমরা নেইমার। কিন্তু তাতে কি! অধিনায়কের না থাকাটাই যেন বেশি করে উজ্জীবিত করেছে দানি আলভেজ, থিয়াগো সিলভা, উইলিয়ান, রবিনহোদের। তাই তো সব শঙ্কা উড়িয়ে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়েই কোপা আমেরিকা ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল। চিলির রাজধানী সান্টিয়াগোয় বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ব্রাজিল ২-১ গোলে পরাজিত করে ভেনিজুয়েলাকে। শৈল্পিক ছন্দের এই ম্যাচে রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোল করেন সাবেক অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা ও ফরোয়ার্ড রবার্টো ফিরমিনো। স্কোরলাইন দেখে অনেকেই মনে করতে পারেন, ম্যাচটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। কিন্তু আসল চিত্র ভিন্ন। ম্যাচের শেষ দশ মিনিট বাদ দিলে কোন সময়ই ব্রাজিলের জন্য আতঙ্ক হতে পারেনি ভেনিজুয়েলা। নেইমারের না থাকায় যেন নতুন মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়েছে কার্লোস দুঙ্গার দল। গ্রুপের আরেক ম্যাচে কলম্বিয়া ও পেরু গোলশূন্য ড্র করে দু’দলই শেষ আটের ছাড়পত্র পেয়েছে। ব্রাজিল ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা, ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় হয়ে পেরু ও সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল গড়ে পেছনে থেকে তৃতীয় হয়ে কলম্বিয়া নকআউট পর্বে উঠেছে। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে। কলম্বিয়া খেলবে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে। পেরুর প্রতিপক্ষ বলিভিয়া আর চিলি খেলবে উরুগুয়ের বিরুদ্ধে। কলম্বিয়া-পেরুর আগের ম্যাচটি ড্র হওয়ায় অনেকটা নির্ভার হয়েই ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। এক্ষেত্রে ম্যাচে ড্র করলেই শেষ আট নিশ্চিত হতো আসরের আটবারের চ্যাম্পিয়নদের। কিন্তু ড্র নয়, দাপুটে জয় নিয়েই নকআউট পর্বে উঠে এসেছে নেইমারবিহীন ব্রাজিল। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা ব্রাজিল ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই এগিয়ে যায়। রবিনহোর নেয়া কর্নার কিকে ১২ গজ দূর থেকে ভলি করে বল জালে জড়ান পিএসজির ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। দলকে এগিয়ে নেয়ার গোলটির সময় সিলভা স্মরণ করেন মাঠের বাইরে বসা নেইমারকে। নেইমারের জার্সি নম্বর ইশারা করে উদ্নের সময় তিনি সবাইকে জানিয়ে দেন, মাঠের বাইরে থাকলেও নেইমারের বন্ধুতাকে সঙ্গী করেই মাঠের লড়াইয়ে ব্রাজিল। সিলভার গোলের সময় নেইমারকেও উচ্ছ্বসিত দেখা যায়। হাততালি দিয়ে উৎসাসিত করেন মাঠের সৈনিকদের। ম্যাচের ১৭ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন রবিনহো। মাঝমাঠ থেকে উইলিয়ানের বাড়ানো পাসে ডি বক্সের মাথা থেকে চলতি বলে বুলেট শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০ গজ দূর থেকে নেয়া রবিনহোর শটটি বারপোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। বিরতির পর ৪৯ মিনিটে আবারও হতাশ হতে হয় ব্রাজিলকে। উইলিয়ানের কর্নারে দারুণ হেড করেছিলেন সিলভা। কিন্তু সেটা কোনমতে রুখে দেন ভেনেজুয়েলা গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর হতাশা কাটিয়ে ব্যবধান বাড়ান রবার্টো ফিরমিনো। মাঝমাঠ থেকে ফিলিপে লুইসের কাছ থেকে বল পান উইলিয়ান। বামপ্রান্ত থেকে দ্রুতগতিতে একজনকে কাটিয়ে গোলমুখে নিখুঁত ক্রস দেন চেলসি মিডফিল্ডার। তা থেকে বিনা বাধায় সহজেই গোল করেন হফেনহেইমের ফরোয়ার্ড ফিরমিনো। ম্যাচটা খুব সহজেই জিততে পারত ব্রাজিল। কিন্তু ৮৪ মিনিটে ভেনিজুয়েলার গোল ম্যাচে নিয়ে আসে ক্ষণিকের উত্তেজনা। লক্ষ্যভেদ করেন নিকোলাস মিকু। এই গোলের কারণে কিছুটা স্নায়ু ক্ষয় হলেও শেষ পর্যন্ত জয় দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি পেলের দেশকে। ম্যাচ শেষে ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা বলেন, আমরা দলগত নৈপুণ্যের ওপর ভর করে সাফল্য পেয়েছি। ফুটবল খেলাটা এভাবেই খেলতে হয়। তাহলে কী নেইমারকে মিস করেনি ব্রাজিল! এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, দলগত খেলা খেললেও নেইমারকে ঠিকই মিস করেছে দল। সে সবার থেকে আলাদা। তার মাঠে থাকাটা আরও অনুপ্রাণিত করে দলকে। কোচ দুঙ্গা বলেন, নেইমারকে ছাড়া দল খারাপ করেনি। আমাদের পরিকল্পনা সফল হয়েছে। নকআউট পর্বেও এ ধারা ধরে রাখতে চাই।
×