ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বেসরকারী ভার্সিটির ওপর ১০% কর প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৩ জুন ২০১৫

বেসরকারী ভার্সিটির ওপর ১০% কর প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ করকে ‘অনায্য’ অভিহিত করে তা প্রত্যাহারের দাবিতে অর্থ মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচী পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। তবে পুলিশের বাধায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে যেতে ব্যর্থ হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেছে। বাজেট প্রস্তাবের পর থেকেই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহারের দাবিতে সংগঠিত হচ্ছে। সোমবারের কর্মসূচী থেকে দাবি পূরণে শীঘ্রই আরও বৃহত্তর কর্মসূচী দেয়ার হুমকি দিয়েছে তারা। শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ১০ শতাংশ করের বোঝা কোন মালিকের ঘাড়ে পড়বে না। এর জন্য দুর্ভোগে পড়তে হবে শিক্ষার্থী ও তার পরিবারকে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল উচ্চবিত্তের সন্তানরাই পড়ছে না। উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য মফস্বল থেকে আসা এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকের সন্তানরাও ভর্তি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ফি পরিশোধের জন্য অভিভাবকরা জমিজমা বন্ধক এমনকি বিক্রি পর্যন্ত করছে। ১০% কর আরোপ করা হলে শিক্ষা ব্যয় বহুগুণ বেড়ে যাবে; যা শিক্ষার্থীদেরই পরিশোধ করতে হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে যে ১০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে তা অনায্য। এটা কোনভাবেই শিক্ষার্থীরা মানবেরনা। সোমবার দুপুর ১২টায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা অর্থ মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের জন্য বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গেলে প্রেসক্লাবের পাশে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের বাধা দেয়। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বাধার মুখে সেখানে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করে। এসময় বক্তব্য রাখেন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়কারী রায়হান তাহারাত লিয়ন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের সমন্বয় পরিষদের সদস্য সিহান রাজ্জাক সঞ্চয়, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আল জাহিদ, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের সমন্বয় পরিষদের সদস্য সোহাইল জামিল, বিএম রাসেল হোসেন, তৌফিক তমাল, আকরামুজ্জামান শুভ, এস এম শুভ্র ভৌমিক, তাসকিন বিন রাফি, আরিফুল ইসলাম, অতসী রহমান, ফরহাদ সরকার সোহান। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়কারী রায়হান তাহারাত লিয়ন বলেন, আজ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে এসেছে। সরকারের নতুন অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ শতাংশ মূসক বৃদ্ধি শিক্ষাকে ‘হত্যার শামিল’। আমরা ইতোমধ্যে জানিয়েছি, সরকার এই নীতি থেকে না সরে এলে আরও কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আইন লঙ্ঘন করে ১০% ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত অবৈধ ও শিক্ষা সঙ্কোচনের কৌশল মাত্র। ১০% ভ্যাট প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর কর বসালে তা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই কোন না কোনভাবে আদায় করা হবে। ফলে শিক্ষার্থীদের পেছনে অভিভাবকদের ব্যয় আরও বেড়ে যাবে। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, কর আরোপ করা হলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা সঙ্কুচিত হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ বাড়বে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে, যা আমরা চাই না। আরেক শিক্ষার্থী সিহান রাজ্জাক সঞ্চয় বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সীমিত থাকায় নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে বাধ্য হচ্ছেন। ১০% ভ্যাট আরোপ করলে এই শিক্ষার্থীরা শুধু অর্থাভাবে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী এস এম শুভ্র ভৌমিক বলেন, আজ অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী দেখে ভাববেন না যে আমরা সংখ্যায় কম। আমাদের সঙ্গে চার লাখ সমর্থক রয়েছে। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচীতে চার লাখ শিক্ষার্থী পুরো শহর স্থবির করে দেবে। শিক্ষার্থী ঝন্টু শুভ বলেন, এভাবে শিক্ষার ওপর ভ্যাট আরোপের কোন যৌক্তিকতা নেই। এটা কেউ মানবে না।
×